April 25, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular ধর্ম সফর

জানেন কি এই মন্দিরে তাড়ানো হয় ‘প্রেমের ভূত’

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

দুনিয়াজুড়ে আলোচিত অনেক ভূতুরে স্থান আছে। আছে ভূত ছাড়ানোর স্থানও। আরও মজার খবর আছে- তা হলো, একটি স্থান আছে যেখানে ‘প্রেমের ভূত’ ছাড়ানো হয়। বিজ্ঞান যাই বলুক, এসব বিষয়ে অন্ধভাবে বিশ্বাস করার লোকের কিন্তু অভাব নেই। পাঠকদের জন্য সেরকমই কিছু আজব স্থানের খবর তুলে ধরা হলো এখানে।-

কানপুরের ভূতের মন্দির
উত্তর প্রদেশের কানপুরে দেড় হাজার বছরের পুরনো এক রহস্যময় মন্দির আছে। লোকজন একে ভূতের মন্দির হিসেবেও জানে। জনশ্রুতি আছে যে এটি এক অমাবশ্যার রাতে নির্মাণ করা হয়েছিল। এবং মন্দির হলেও এর ভেতরে নেই সনাতন ধর্মবিশ্বাসীদের কোনো ভগবানের মূর্তিও।

সন্ধ্যা ৭টার পরে এই মন্দিরের ভেতর যাওয়া নিষিদ্ধ। স্থানীয়দের দাবি, সন্ধ্যার পর সেখানে ভূতেরা পূজা-অর্চণা করে। পূজায় রত অদৃশ্য সেই অস্তিত্বগুলোর কর্মকাণ্ডের আওয়াজ নাকি স্পষ্ট শোনা যায় বাইরে থেকে। সত্যমিথ্যা যাই হোক, এই মন্দির ভক্তদের বিশ্বাস এর সঙ্গে পারলৌকিক জগতের সম্পর্ক আছে।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার বর্ডারের নিফিউ পাড়া
নিফিউ পাড়া নামের মুরং গ্রামটা বাংলাদেশ-মিয়ানমার নো ম্যানস ল্যান্ডে। স্থানটি দেখে আসা লোকজনের মতে, জায়গাটা এতই নিঝুম যে সেখানে দিনের বেলাতেই বার্কিং ডিয়ার আর ভালুকের ডাক শোনা যায়। মুরং গ্রাম চিকনকালার বাসিন্দারা প্রতিবছর নাকি কোনো একটা সময়ে হঠাৎ করেই বনের ভেতর রহস্যময় ধুপ ধাপ আওয়াজ শোনেন। কোন জানান না দিয়েই শুরু হয় অদ্ভুত সেই শব্দকল্প।  ওইসময় বনে থাকা মুরং শিকারীরা আওয়াজটা শুনলেই দৌড়ে পড়ি মরি বন থেকে পালিয়ে আসে। কিন্তু প্রতিবারই অমন ঘটনার সময় কয়েকজনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় অজ্ঞাত কিছু এসে। স্থানীয়দের মতে, দৌড়ে যারা পেছনে পড়ে যায় তারা আর ফিরে আসে না। তবে দিন কয়েক পরে গহীন বনে তাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়। তবে শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন থাকে না। শুধু মৃতদেহগুলোর চেহারায় ছেয়ে থাকে ভয়ঙ্কর আতঙ্কের ছাপ।

রাজস্থানের বালাজি মন্দির
রাজস্থানের মেহেন্দিপুরের বালাজি হনুমান মন্দির দুনিয়াজুড়ে বিখ্যাত। এখানে হনুমানজির মন্দিরের পাশেই আছে প্রেতরাজ সরকারের মন্দির।

স্থানীয়দের অনেকে বিশ্বাস করে যে এই মন্দিরে প্রতিদিন যত লোক আসে তাদের বড় একটা অংশই প্রেতচালিত দেহ। অর্থাৎ মৃতপ্রায় মানুষ যাদের শরীরে ভূত আশ্রয় নিয়েছে। এখানে এমন ধরনের লোকদের ভূত-প্রেতের চক্কর থেকে মুক্তিদানের তদবির করা হয়।

মধ্যপ্রদেশে নর্মদা পাড়ের ভূত মেলা
মন্দিরের পর এবার আসুন মেলায়। মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলার নর্মদা নদীর পাড়ে প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে বসে ভূতের মেলা। শ্রাদ্ধপক্ষের অমাবস্যার রাতে বসে এই রহস্যময় অশরীরীদের মেলা। যারা এসবে বিশ্বাস রাখে তাদের দাবি, ওই স্থানটায় প্রেতবাবার সমাধি আছে। তাদের মতে, যাদের ওপর জিন-ভূতের আসর-প্রভাব বা উপরি হাওয়া আছে তারা প্রেতবাবার সমাধি ঘিরে দুই চক্কর হাঁটলে দোষমুক্ত হয়। প্রেতবাবার সমাধিতে যে দুই চক্কর দিবে তার ওপরে আসর করা প্রেতাত্মা তাকে ছেড়ে আশপাশের গাছে উল্টো হয়ে ঝুলতে থাকবে। এই মেলা টানা একমাস চলে।

পালামৌর ভূত ছাড়ানো মেলা
ঝাড়খণ্ডের পালামৌ জেলায় প্রতি বছর বসে ভূত তাড়ানোর অদ্ভুত মেলা। নবরাত্রির দিন হায়দারনগরে অবস্থিত দেবি মায়ের মন্দিরের পাশে মেলা বসে। মন্দিরের পাশে এখানে এক অশ্বত্থ গাছ আছে।

মেলার আয়োজকদের দাবি, তথাকথিত ভূততাড়িত লোকজনকে এখানে এনে ভূতকে তাদের শরীর থেকে ছাড়ানো হয় এবং একটি লোহার পেরেকে ভূতকে আটকে ফেলা হয়। এরপর ভূতটিকে পাশের অশ্বত্থ গাছের গায়ে পেরেক ঠুকে আটকে দেওয়া হয়। তাদের বিশ্বাস, পেরেকটি না খোলা পর্যন্ত ভূতে সেখানে আটকে থাকবে।

‘প্রেমের ভূত’ ছাড়ানোর মন্দির!

হ্যাঁ, সেরকম স্থানও আছে। আমরা কথায় কথায় বলি ‘ওর মাথায় প্রেমের ভূত সওয়ার হয়েছে’। আমরা জানি প্রেম কোনো ভূত নয়। কিন্তু তারপরও এতে আসক্ত মানুষের আচার-আচরণ দেখে লোকজন এমন বলে থাকে।

কেউ কেউ একে অসুখের সঙ্গে তুলনা করে। প্রেমরোগ নামে হিট সিনেমাও আছে। যাহোক, ‘প্রেমরোগে’ আক্রান্ত ‘প্রেমের ভূত’ সওয়ার হয়েছে এমন লোকদের চিকিৎসা করা হয় উত্তর প্রদেশের সহারানপুর জেলার হনুমানজির মন্দিরে। সেখানে প্রতি শনি ও রবিবার এক ধরনের পূজা-অর্চণা হয়। মন্দির কর্তৃপক্ষের বিশ্বাস, এর দ্বারা প্রেমের ভূত তাড়ানো হয়।

সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিচ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি সেনাদের ব্যবহৃত একটি স্থান এখনকার চাঙ্গি বিচ। ‘সোক চিং’ যুদ্ধের সময় জাপানিরা অনেক নিরীহ চীনাকে হত্যা করে। এই গণহত্যার পর তাদেরকে চাঙ্গি বিচে কবর দেয়। পরে লোকজনের কাছে জায়গাটি হয়ে ওঠে ভূতুড়ে। এখানে রাত হলে নাকি শুরু হয় ভূতুড়ে সব কাণ্ডকীর্তি।

স্থানীয় অনেকে দাবি করেন, রাতে মনে হয় দূর থেকে কিছু মানুষ কান্না করতে করতে সামনের দিকে এগিয়ে আসছে। আগে থেকে এই বিচ সম্পর্কে অবগত নন এমন অনেক পর্যটক এখানে রাত কাটাতে গিয়ে বিপাকে পড়ে যান। ফেরার সময় নিয়ে যান অদ্ভুত সব অভিজ্ঞতা। হাজার হাজার মানুষ ওই সৈকতে রাতের বেলা অশরীরীদের কান্নাকাটি শোনার দাবি করেছে। আর স্থানীয়রাও কেউ নাকি সেখানে রাতের বেলা ভুল করেও যায় না।

Related Posts

Leave a Reply