April 18, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

এক অদ্ভুত মোরগের গল্পমাথা কাটার পর বেঁচে ছিল ১৮ মাস 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

যদি কখনো চোখের সামনে মুরগি বা মোরগ জবাই করা দেখে থাকেন, নিশ্চয়ই দেখেছেন যে মাথা কাটার সাথে সাথে মুরগি মারা যায় না। কিছুক্ষণ ছটফট করে তারপর মারা যায়। তাছাড়া অনেকক্ষেত্রেই মুরগির মাথা কেটে ফেলার পরেও যদি তাকে ছেড়ে দেন, দেখবেন, দুই এক পা সামনে এগিয়ে যেয়ে তারপর ধপ করে পরে নিথর হয়ে যায়। এই ঘটনাগুলো খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি হয়তোবা মাইক এর কথা জানেন না! মাইক হচ্ছে সেই মোরগ যার মাথা কেটে ফেলার পরেও বেঁচে ছিল আঠারো মাস!

মাথা কেটে ফেলার পরেও মুরগি বা মোরগ কিছুক্ষণ বেঁচে থাকে তার মস্তিষ্কের অবস্থানের জন্য। তার মস্তিষ্ক ছোট একটা মাথার খুলিতে ৪৫ ডিগ্রী আ্যংগেলে অবস্থিত। মোরগ বা  মুরগির সেরিবেলাম আর ব্রেইন স্টেম, যা মুরগির শরীরের প্রধান কাজগুলি সম্পন্ন করে, সেগুলো থাকে মুরগির ঘাড়ে! তাই মাথা কেটে ফেলার সাথে সাথেই এরা মরে যায় না।

’মাইক, দ্য হেডলেস চিকেন’ যে কিনা পরিচিত ছিল মিরাকল মাইক নামে, সে থাকতো আমেরিকার কলারাডোর লয়েড ওলসেন নামের এক কৃষকের খামারে। যখন তার বয়স ৫ মাস, ১০ই সেপ্টেম্বর ১৯৪৫ সাল, তার মালিক সিদ্ধান্ত নেয় যে তাকে কেটেকুটে রান্না করা হবে। যেই ভাবা সে কাজ। মাইকের মালিক কেটে ফেললো তার মাথা!

মাথা কেটে মাইককে মাটিতে রাখলো লয়েড। কিন্তু এ কি কাণ্ড! গলা কাটা অবস্থায় মাইক উঠে দাঁড়ালো, হাঁটতে লাগলো উঠান জুড়ে! এমনকি মাটি থেকে খুঁটে খুঁটে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু খাবে কি করে? ওর তো মাথাই নাই! হতভম্ব লয়েড ভাবলো, চোখের সামনে মিরাকল ঘটে গেছে। মাইককে সে নিয়ে খামারঘরে রেখে দিলো সেদিনের মতো।

পরদিন সকালে লয়েড আবিষ্কার করলো, বেঁচে আছে মাইক! সে মাইককে খাওয়াতে লাগলো। পানি, দুধ, ছোট ছোট করে কাটা নরম ভুট্টার দানা। একটা সরু সিরিঞ্জে ভরে লয়েড সরাসরি খাবারগুলো মাইকের থ্রোট পাইপ দিয়ে চালান করে দিতো।

মাইক বেঁচে ছিল কারণ লয়েড যখন মাইকের গলা কাটে, তখন মাইকের জুগুলার ভেইন টা কাটতে পারেনি। তাই মাইক কেবল তার চোখে দেখার ক্ষমতা এবং ব্রেনের এমন একটা অংশ হারিয়েছিলো যা তার শরীরের মূল কার্যক্রম পরিচালনার সাথে সম্পর্কিত নয়। ধীরে ধীরে মাইকের নাম ছড়িয়ে পরতে লাগলো। পুরো আমেরিকা জুড়ে মানুষের মুখে মুখে মাইকের নাম! লয়েড মাইককে নিয়ে পুরো আমেরিকা জুড়ে শুরু করলো ট্যুর।

মানুষ পকেটের টাকা খরচা করে মাইককে দেখতে আসতো। ১৯৪৫ সালে মাইকের মাসিক আয় ছিলো ৪৫০০ ডলার। সেই সময় এটি ছিল একটি বিশাল অংকের টাকা। অনেক ধনকুবের মাইককে কিনে নিতে চেয়েছে। লয়েড বিক্রি করেননি। পত্রিকায়, টিভিতে, বিলবোর্ডে, মানুষের মুখেমুখে তখন শুধু মাইকের নাম। দীর্ঘ আঠারোমাস ভ্রমণ করে ১৭ই মার্চ ১৯৪৭ সালে আ্যরিজোনার ফিনিক্সে এসে পুরো আ্যমেরিকা ট্যুর শেষ করার আগেই মারা যায় যায় মাইক। গলায় ভুট্টা দানার টুকরা আটকে মারা যায় সে। লয়েড তাকে বাঁচাতে পারেনি।

কলারাডোর ফ্রুইটা গ্রামে গেলে দেখতে পাবেন মাইকের স্ট্যাচু। সেখানে প্রতিবছর মে মাসে ‘হেডলেস চিকেন ফেস্টিভ্যাল’ এর আয়োজন করা হয় মাইকের স্মরণে, যে মাথা ছাড়াই বেঁচে ছিল ১৮ মাস।

Related Posts

Leave a Reply