April 25, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular ব্যবসা ও প্রযুক্তি

‘হাঁসের মত পা’ হলেই হাজার কোটি টাকা!

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

কাশছোঁয় দাম, কিন্তু সন্ধান পাওয়া খুবই দুষ্কর। বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে প্রাণীটি। সাধারণত পিঠের দিক ধূসর। কখনো ধুসর-সবুজ আবার নীলচে-ধূসর রঙেরও হয়ে তাকে। শরীরে লাল, সাদা ও ধূসর রঙয়ের ছিট ছিট দাগ থাকে। কিছু তক্ষক আবার রং পাল্টাতে ওস্তাদ। স্থানীয়রা তাদের বলেন বহুরূপী। তক্ষকের মাথা বড়। দৈর্ঘে ১.৬ সেন্টিমিটার থেকে ৬০ সেন্টিমিটার। ওজন ১৫০ থেকে ৪০০ গ্রাম। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় প্রজননের সময় ছাড়া স্ত্রী ও পুরুষ তক্ষক একা ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। স্ত্রীরা খুব বেশি হলে দুটি ডিম দেয়। জন্মের সময় ছানা প্রায় নয় সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে। তবে ‘হাঁস পা’ তক্ষকের চাহিদা খুব। দেড়শ গ্রাম হলে বিক্রি করা যাবে ‘হাজার কোটি’ টাকা। দেশের যেখানেই থাকুক না কেন সন্ধানে মরিয়া পাচারকারীরা। প্রয়োজনে হেলিকপ্টার পাঠিয়েও সংগ্রহে আপত্তি নেই।

‘হাঁস পা’গুলোর দাম খুব চড়া। ইঞ্চির মাপ ধরা হয় চোখ থেকে লেজের শেষ পর্যন্ত। ‘মুরগি পা’গুলো ২৫৫ গ্রাম ওজন ও সাড়ে ১৫ ইঞ্চি লম্বা হতে হবে। ‘বার্মিজটা’র ওজন সাড়ে তিনশ’ গ্রামের নিচে হলে বিক্রির অনুপযুক্ত। জানা যায়, এ পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রশাসনের হাতে তক্ষকসহ অনেকেই ধরা পড়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রাণিটির মূল্য অনেক। চা বাগান ও বনবস্তি এলাকার ছেলেদের তক্ষক ধরার কাজে ব্যবহার করত। গত দু’বছরে ছবিটা পাল্টেছে। শহরের বিভিন্ন পেশার মানুষ বনবস্তির ছেলেদের সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে তক্ষক ধরার কাজে ব্যবহার করছে।

অনেকে তক্ষকের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। তক্ষক কেন এত দামী? ভারতের জলপাইগুড়ি প্রসন্নদেব মহিলা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান তথা সরীসৃপ গবেষক শিলা দত্ত ঘটক একটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মূলত এইচআইভি প্রতিষেধক তৈরির গবেষণায় তক্ষকের দেহাংশ ব্যবহার হয়। প্রাণীটির চামড়া দিয়ে বিভিন্ন বিলাসসামগ্রীও তৈরি করা হয়। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক তথা গবেষক ধীরাজ সাহা জানিয়েছেন, চীন-তিব্বতে তক্ষকের দেহাংশ দিয়ে তৈরি তেল যৌন ক্ষমতা বর্ধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সেখানে তক্ষকের দেহাংশ দিয়ে মাদকও তৈরি হচ্ছে।

এই চাহিদার জন্যই ডুয়ার্সসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তক্ষক ভুটান অথবা নেপাল হয়ে চীন, তিব্বত, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, জাপান, অস্ট্রেলিয়ায় পাচার হচ্ছে। তিনশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ গ্রাম ওজনের তক্ষকের দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালোই। তক্ষকের বাসভূমি ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ, ফিলিপাইনস, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, জাপান, দক্ষিণ-চিন, উত্তর-অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর-সহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে দেড় হাজার প্রজাতির তক্ষক রয়েছে।

উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে পুরনো গাছের কোটর অথবা পুরনো কাঠের বাড়িতে টোকে গেকো প্রজাতির তক্ষক বেশি দেখা যায়। মুখের টকটক শব্দই তক্ষকের জন্য কাল। বনবস্তির ছেলেরা প্রাণীটিকে পাকড়াও করে অল্প মূল্যে তক্ষক তুলে দিচ্ছে পাচারকারীদের হাতে। পর্যটকের ছদ্মবেশে ঘোরাফেরা করা পাচারকারীরা তা চড়া দামে বিক্রি করছে।

Related Posts

Leave a Reply