April 19, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

ঘুম নিয়ে ঘুম ভাঙান, নইলে ….

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

ধীরে ধীরে মানুষের ঘুম কমে আসছে। তাই ঘুম নিয়ে নানা চিন্তা-ভাবনা করে থাকেন সবাই। বহুকাল ধরে ঘুম বিষয়ে এমন কিছু ধারণা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে যা কিনা পুরোপুরি ভুল। এখানে জেনে নিন সেই ভুল ধারণার কথা।

১. সবারই প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। বহুকাল ধরে এ কথা সবাই জানেন। কিন্তু এ তথ্য মোটেও সঠিক নয়। মানুষের ঘুমের প্রয়োজন নির্ভর করে তার জেনেটিক বৈশিষ্ট্য, বয়স ও পরিশ্রমের ওপর। অনেকের খুব অল্প সময় ঘুমালেও চলে।

২. অ্যালকোহল ঘুম এনে দেয় বলে মনে করা হয়। আসলে অ্যালকোহল ঝিমুনি ভাব আনে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে গভীর ঘুম আনে না। এক অস্ট্রেলিয়ান গবেষণায় এ তথ্য দেওয়া হয়। বরং একটানা গভীর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।

৩. মাত্র এক রাতের ঘুমের অভাবে ক্ষতি হয় না বলেই মনে করতে পারেন। কিন্তু এতেই মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া ঘুমে অভাব ডায়াবেটিস, স্থূলতা, করোনারি ডিজিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

৪. হালকা গরম দুধ খেতে ঘুম আসে বলে অনেকের বিশ্বাস। দুধে রয়েছে ট্রিপটোফান যা দেহে প্রবেশ করলে সেরোটনিন হরমোনে পরিণত হয়। এটা ঘুমাতে সহায়তা করে ঠিকই। কিন্তু দুধ খাওয়ার ফলে তেমন সেরোটনিন উৎপন্ন হয় না যাতে ঘুম আসতে পারে।

৫. তন্দ্রা স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর বলে মনে করেন অনেকে। বলা হয়, এতে রাতের ঘুম নষ্ট হয়। কিন্তু ১০-২০ মিনিটের ঝিমুনিতে উপকার মিলতে পারে। বিজ্ঞানীরা জানান, দিনের বেলা হালকা তন্দ্রাতে আরো বেশি সজাগ ভাব চলে আসে।

৬. ঘুমের দুটি প্রাথমিক স্তর হলো আরইএম (র‌্যাপিড আই মুভমেন্ট) এবং নন-আরআইএম। বলা হয়, আরইএম স্তরে মানুষ স্বপ্ন দেখে। কিন্তু আসলে দুটো স্তরেই স্বপ্ন দেখতে পারে মানুষ। প্রথম স্তরে সাধারণত কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন দেখে মানুষ। আর দ্বিতীয় স্তরে প্রতিদিনের কার্যক্রমের ভিত্তিতে স্বপ্ন দেখে।

৭. ভেড়া গুনলে ঘুম চলে আসে। এর কোনো বৈজ্ঞানীর প্রমাণ মেলেনি যে ভেড়া গুনতে গুনতে মানুষ ঘুমাতে পারে। ৪১ জন ইনসমনিয়ায় আক্রান্ত মানুষের ওপর গবেষণা করে বলা হয়, দৃশ্যমান কিছু দেখে ঘুম আসে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

৮. অনেকেই স্লিপওয়াকার, অর্থাৎ ঘুমের মধ্যে উঠে হাঁটেন। বলা হয়, এদের ঘুম থেকে তুললে তারা ভয়ে মারা যাবেন। হতে পারে একজন মানুষ ঘুমের মধ্যে হাঁটছেন এবং আপনি তাকে জাগিয়ে দিলেন। এতে সে চমকে উঠতে পারেন ঠিকই। কিন্তু তার প্রাণ শঙ্কটাপন্ন হবে না।

৯. অনেকের বিশ্বাস, স্বপ্নের মধ্যে যদি নিজের মৃত্যু দেখেন তবে বাস্তবে আপনি মারা যাবেন। এটা আসলে কল্পকথা। এমন বহু ভুল ধারণা স্বপ্ন নিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে।

১০. সবচেয়ে গভীর ঘুম হয় আরইএম স্তরের ঘুমে। এই স্তরের ঘুমে আমাদের দেহ ও মস্তিষ্ক প্রায় সজাগ অবস্থায় থাকে। রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, হৃদস্পন্দনও বাড়ে। ঘুমিয়ে যাওয়ার প্রথম ৯০ মিনিটের মাথায় এই স্তরের শুরু। কিন্তু নন-আরইএম স্তরেই মানুষের সবচেয়ে গভীর ঘুম হয়ে থাকে।

১১. যাদের অ্যানেসথেশিয়া দেওয়া হয় তারা প্রায় ঘুমিয়ে থাকেন। আসলে এটি ভুল কথা। এ অবস্থায় মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক তরঙ্গ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এটা ঠিক স্বাভাবিক ঘুম নয়। মূলত ওষুধের প্রয়োগে মানুষকে কোমায় নেওয়া হয়।

১২. বলা হয়, ইনসমনিয়ার অর্থ আপনি ঘুমাতে পারছেন না। আসলে ইনসমনিয়া এমন নয়। অনেকের ঘুম খুব দ্রুত ভেঙে যায়া এবং আর ঘুম আসে না। আবার অনেকের এক রাতে বার বার ঘুম ভাঙে এবং ঘুম আসে। এ সবই ইনসমনিয়ার বৈশিষ্ট্য।

১৩. অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে ঘুম কম লাগে। এটি একটি ঘুম ধারণা। তবে বয়স বাড়লে ঘুম কম হয় এবং অনেক আগে ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু এ অভাব তারা দিনের বেলা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেন। অর্থাৎ ঘুম তাদের কম হলে চলে না। 

Related Posts

Leave a Reply