চোখে দেখেও আজও হয়নি বিশ্বাস..
কলকাতা টাইমস :
ভূত-প্রেতের ভয় কম বেশি সবারই আছে। যিনি জীবনে একবারও ভূত-প্রেত দেখেননি তিনিও হয়তো রাতে একা হাঁটতে ভয় পান। তাদের হয়তো ভূত-প্রেত দেখার গল্প শুনেই এমনটা হয়। তবে আজ বলবো এমন এক ব্যক্তির গল্প যিনি দিনে-দুপুরে নিজের চোখে এক পেতনি দেখেন বলেই দাবি করেন ।
আমি যখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি তখন ঠিক দুপুরে আমাদের পরিবারের সবার সামনে একটা ঘটনা ঘটে। রোকসানা নামে আমার এক পিসি ছিলেন। আমরা একই ক্লাসে পড়তাম। আমরা জানতাম না ওইদিনটি ছিল অমাবশ্যার।
ঠিক দুপুরে আমরা দুইজন আমাদের উঠানে বসে খেলছিলাম। হঠাৎ আমার পিসি রোকসানা বললো ‘তুই দাঁড়া আমি একটু আসছি।’ এই বলে আমার ফুফু দৌঁড়ে আমাদের বাড়ি থেকে রাস্তার দিকে চলে গেলেন।
আমাদের বাড়ি থেকে রাস্তা খুব কাছেই, আর ওই রাস্তার ওপারে ছোট একটা বিল (মাঠ) ছিল। বিলটার ঠিক মাঝখানেই তিনটি বড় তালগাছ ছিল। তিনটি তালগাছের গোড়াও ছিল একই স্থানে। আর ওই বিলে গভীর রাতে অনেকেই অনেক ভূতুরে কাণ্ড নাকি দেখেছেন।
যাই হোক, যা বলছিলাম, আমার পিসি ঠিক ওই বিলের দিকেই দেখলাম দৌঁড়ে চলে গেলেন। এর পরে অনেকক্ষণ ধরে তাকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবারের সবাই মিলে হন্যে হয়ে খুঁজলাম তাকে। কিন্তু কোথাও পাওয়া গেল না। এর কিছুক্ষণ পর দেখলাম পিসি ওই তিন তালগাছের গোড়ায় বসে কাঁদছে। কী অদ্ভুত তার চেহারা। মাথার চুলগুলো সব অগোছালো। চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। চোখের উপর-নিচ প্রচণ্ড কালো হয়ে গেছে। এটুকু সময়ে তার এত পরিবর্তন কীভাবে হলো! সবাই অবাক হলাম।
তারপরে সবাই তাকে নিয়ে বাড়ির উঠানে বিছানো মাদুরে বসানো হলো। সবাই তাকে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করতে লাগলো, কিন্তু সে কিছুই বলছে না। এমন সময় হঠাৎ ওই তিন তালগাছের উপর থেকে পিসির গলার আওয়াজ আসতে লাগলো। আওয়াজে সবাই প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেলো। ওদিকে তালগাছের মাথা থেকে জোরে জোরে পিসি চিৎকার করে বলছে ‘ওটাকে তোমরা নিয়ে গেছো কেন, ওটাতো পেতনি। আমি এখানে, আমাকে নামাও এখান থেকে।’
তালগাছের গোড়া থেকে আমরা যে জেক উঠানে নিয়ে এসেছিলাম হঠাৎ দেখি সে উধাও হয়ে গেছে। তখন আমরা সবাই বুঝতে পারলাম ওই ‘মানুষটা’ আসলে আমাদের পিসি না আর সে কোনো মানুষও না। ওটা আসলে একটা পেতনি ছিল। যা আমাদের পিসির রূপ ধারণ করেছিল।
এরপর বাঁশ দিয়ে বানানো সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠে পিসিকে ওই তালগাছের মাথা থেকে নামানো হলো। এ ঘটনার পর দুইদিন পর্যন্ত পিসি অজ্ঞান ছিলেন। তবে পরে ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হন।