November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular ব্যবসা ও প্রযুক্তি শারীরিক

‘নিরাপদ জল’ নাকি মলমূত্রের জীবাণু! কি খাচ্ছেন জানেন ? 

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
‘নিরাপদ জল’ হিসেবে আমরা অনেকেই পথে ঘাটে, রাস্তার পাশের দোকানে বিক্রি করা জারের অল পান করে তৃষ্ণা মিটাই; কিন্তু আমরা কি জানি প্রতি গ্লাস দু’টাকা হিসাবে পাওয়া এই জল  কতটা অনিরাপদ। গবেষণায় পাওয়া তথ্যে জানা যাচ্ছে, জারের জল নিরাপদ তো নয়ই বরং তা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে, পথে ঘাটে, রাস্তার পাশের দোকানে এসব জারের জলে রয়েছে ‘মলমূত্রের জীবাণু’ যা ছড়াচ্ছে আমাশয়, টাইফয়েড, কলেরা, ইউরিন ইনফেকশন ও জন্ডিসসহ অনেক জীবনঘাতী রোগ। সর্বস্বীকৃত প্রতিষ্ঠান এক্রিডেটেড ল্যাবরেটরি এসজিএস বাংলাদেশ লিমিটেড কর্তৃক নমুনা পানিসমূহের পরিমাণগত ও গুণগতমান বিশ্লেষণ করে এ তথ্য দিয়েছে তারা।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, কলিফর্ম মূলত বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী প্যাথোজেন, যেমন- ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও প্রোটাজেয়ার সৃষ্টিতে উত্সাহ যোগায় বা সৃষ্টি করে। বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া মানবদেহে নানাবিধ রোগ সৃষ্টি করে। ক্রমাগত মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস/নষ্ট করে দেয়। ফলস্বরূপ পরবর্তীতে যে কোনো রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব দ্বারা খুব সহজেই আক্রান্ত হবার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
বিশ্লেষণকৃত ফলাফলে দেখা যায় যে, বাজারজাতকৃত জার জলের শতভাগই উচ্চ মাত্রায় কলিফর্মযুক্ত। দমদম,বড়বাজার, শিয়ালদাহ প্রবাহিত স্থান থেকে সংগ্রহকৃত জলের নমুনায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কলিফর্ম ও ফেকাল কলিফর্মের  উপস্থিতি পাওয়া যায়। তবে বিভিন্ন জেলা থেকে নেওয়া জার জলের নমুনা সবচেয়ে দূষণযুক্ত নির্দেশ করে; ঐ সব নমুনায় সর্বোচ্চ টোটাল কলিফর্ম ও ফেকাল কলিফর্মের উপস্থিতির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৬০০ ও ২৪০ এমপিএন/১০০ মিলি মাত্রার। এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড মান অনুযায়ী জলে নাইট্রেট, লিড, ক্রোমিয়াম ও আয়রন থাকা যাবে না; কিন্তু নমুনা জারের জলে এগুলো পাওয়া গেছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, সুস্থভাবে জীবন ধারণের জন্য একজন প্রাপ্ত  বয়স্ক নর-নারীর দৈনিক ৬ থেকে ১৪ গ্লাস লিটার জল পান করা আবশ্যক। খাবার হিসাবে ব্যবহৃত জল অবশ্যই নিরাপদ হতে হবে, অন্যথায় জল বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
গবেষণার সাথে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা বলেছেন, বিগত দুই দশক থেকে ভারতে উৎপাদিত ব্র্যান্ড ও নন-ব্রান্ড বোতলজাত জল, জার জল ও আমদানিকৃত বোতলজাত জলের ব্যবহার লক্ষণীয় মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। হোটেল, অফিস, রাস্তার পার্শ্ব দোকান থেকে শুরু করে, উৎসব-অনুষ্ঠান, ভ্রমণ পথে, বাসা-বাড়িতে জারের খাবার জল ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হচ্ছে।
গবেষকরা বলছেন, জার পানির ক্ষেত্রে রিভার্স অসমোসিস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় না বা মান নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে উৎপাদিত হয়, ফলে সেখানে টিডিএস-এর মাত্রা বোতলজাত জলের চেয়ে বেশি পাওয়া যায় (৬২-৪৭৪ মিলিগ্রাম/লিটার)।
এছাড়াও টিডিএস-এর মাত্রা বেশি হলে পানির ক্ষরতা, হার্ডনেস ও লবণাক্ততা বৃদ্ধি পায়। ফলে, জলের পাইপ আটকে যায়। এমতাবস্থায় পাইপে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু এবং অন্যান্য অণুজীবের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
এ বিষয়ের গবেষকদের উপদেশ, ‘জারের জল নিরাপদ নয়। এমনকি নামি দামি অনেক ব্রান্ডের জলও নিরাপদ নয়। তাই জল পানের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। ফুটিয়ে জল খেতে হবে’।

Related Posts

Leave a Reply