ত্রিশ বছর মৃত মাকে ঘরে রেখেছিল মেয়ে
প্রতিবেশীরা জানতেন তিরিশ বছর আগে মৃত্যু হয় বৃদ্ধার মায়ের। কিন্তু সবাই জানলে কি হবে! মেয়ে বিশ্বাস করতেন তার মা এখনও জীবিতই আছেন। আর সে কারণেই মায়ের সৎকার না করে দেহ ঘরেই রেখে দেন তিনি।
মৃত্যুর আগে পর্যন্ত মেয়ে হয়তো সেভাবেই মাকে ঘরে রেখে দিতেন। কিন্তু সেই বৃদ্ধার আচার আচরণে প্রতিবেশীদের মনে সন্দেহ দেখা দেয়ায় তা আর সম্ভব হয়নি।
ডেইলি মেইল জানায়, কিছুদিন যাবত নিজের ফ্ল্যাট থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন বৃদ্ধা। ফলে প্রতিবেশীদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে। তারা অবশ্য ভেবেছিল, সেই বৃদ্ধাই না আবার ঘরে মরে পড়ে আছেন! এই সন্দেহে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেখে, ওই বৃদ্ধা মাটিতে পড়ে রয়েছেন। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় তারা। এরপর ঘরে তল্লাশি চালাতে গিয়ে বেরিয়ে আসে রোমহর্ষক ব্যাপারটি।
পুলিশ দেখে, পাশের ঘরেই সোফার উপরে পড়ে রয়েছে একটি কঙ্কাল। মাথাটা কাপড় দিয়ে ঢাকা, পায়ে রয়েছে নীল জুতো এবং সবুজ মোজা। আর শায়িত কঙ্কালকে ঘিরে রয়েছে কিছু ধর্মীয় মূর্তি। পুলিশ অন্য ঘরেও ঘুরে দেখে! অগোছালো পুরো ফ্ল্যাটে শুধু নোংরা আর বাতিল কাগজের ছড়াছড়ি।
পুলিশ কঙ্কালটিকে উদ্ধার করে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দেয়। এরপর হাসপাতালে ভর্তি বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করে তারা জানতে পারে আসল সত্য!
বৃদ্ধা নিজেই জানিয়েছেন, গত ৩০ বছর ধরে মৃত মাকে আগলে রেখেছিলেন তিনি। ঘটনাটি যাতে প্রকাশ হয়ে যায়, সেই ভয়ে কারও সঙ্গে মেলামেশাও করতেন না।
পুলিশ আরও জানতে পারে, অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন ৭৭ বছরের ওই বৃদ্ধা। সম্প্রতি হাঁটার ক্ষমতাও হারান তিনি। ফলে বাড়িতেই মায়ের কঙ্কালকে সঙ্গে নিয়ে পড়ে ছিলেন তিনি।
এদিকে প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, ওই বৃদ্ধা কারো সঙ্গে মিশতেন না। এমনকি ফ্ল্যাটের বাইরেও খুব একটা বের হতেন না। প্রতিবেশীরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছে যে সেই ফ্ল্যাটে কোনো বিদ্যুৎ, জল কিংবা গ্যাসের সংযোগও ছিল না।
অবশ্য অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হলেও চিকিৎসকেরা জানায় অনেকটাই ভালো আছেন তিনি। কিন্তু দু’টি পা তার একদমই অবশ হয়ে গেছে।