মেডিকেল কলেজগুলোতে রমরমা ভূতের পূজা!
কলকাতা টাইমস :
বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনে ভূত, প্রেতাত্মার মতো বিষয়গুলোতে আর কেউ বিশ্বাস করছেন না। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কাছে ভূতের বিষয়টি তো হাস্যকর মনে হওয়ারই কথা। কিন্তু ভাবা যায়, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোকে ভূতপূজার কথা।
ভারতের পিঠস্থান রাজ্যের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে বছরের পর বছর ধরে হচ্ছে ভূতের পূজা। অ্যানাটমি ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগগুলোতে হচ্ছে এই পূজা! কিছু চিকিৎসকের পৃষ্ঠপোষকতায় কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভেতর ডোমেরা বিদেহী আত্মা তাড়াতে করে চলেছেন ভূত পূজা। সাধারণত কোনো কোনো মর্গে আগস্টে আবার কোথাও মহালয়ার দিন এই পূজা হয়ে থাকে। শূকর মেরে, পায়রা উড়িয়ে করা হয় এই পূজা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ডোম জানান, অ্যানাটমি ও ফরেনসিক দুই বিভাগে অজস্র ‘ইউডি কেস’-এর দেহ আসে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর এসব দেহগুলো আসলে বিদেহী আত্মা (ভূত) হয়ে যায়। নিজের ও বউ-ছেলেমেয়ের এই প্রেতাত্মারা যাতে কোনো ক্ষতি করতে না পারেন, সেজন্যই এই পূজার আয়োজন।
এনআরএস-এর অ্যানাটমির এক ডোম বলেন, এই পূজা সবার মঙ্গলের জন্য হয়। যারা ভূতে বিশ্বাস করেন না তারা একদিন রাত ১২টা পর্যন্ত থাকলেই মর্গের পাশে অদ্ভূত জিনিস দেখাতে পারব।
আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. শুদ্ধধন বটব্যাল একজন নামকরা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ। তিনিও বললেন, হ্যাঁ, ওরা ভূতপুজো করে। চাঁদা দিয়ে সাহায্য করি, পুজোর প্রসাদও খাই। ওদের সহকর্মীই মনে করি। এটা ওদের বিশ্বাস। সাহায্য করে বিজ্ঞানের বিপরীতে কাজ করছি বলে মনে হয় না।
ফরেনসিকের এক সিনিয়র অধ্যাপক বললেন, চাকরি জীবনের গোড়ায় সুন্দর বলে একজন ডোম ছিলেন। উনি মৃতদেহে প্রণাম করে, ময়নাতদন্তের দেহ কাটা শুরু করতেন। মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন, অন্যের দেহে ছুরি-কাঁচি চালিয়ে, ক্ষতবিক্ষত করে আসলে মারাত্মক অপরাধ করে যাচ্ছেন। তাই পুজো করে পাপস্খালন।
তবে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) এইসব যুক্তিকে উড়িয়ে বললেন, জানতামই না এসব কাণ্ড। জানলে আগেই বন্ধ করে দিতাম।