অদ্ভূতুরে (গল্প)
[kodex_post_like_buttons]
রানু ভট্টাচার্য
কর্মসুত্রে প্রবাসী মেয়ের কাছে ক’টা দিনের জন্য এসেছে রঞ্জিতা। কুড়িতলার ফ্ল্যাটের জানালায় বসে দূরে আরব সাগরের দিকে চেয়ে
চেয়ে বেশ কেটে গেল দুটো দিন। আজ সন্ধ্যেয়
বেরোবে টুকটুকির সঙ্গে। সত্যি, কত বড় হয়ে
গেল মেয়েটা। এই তো সেদিন, বছর তিনেক বয়স হবে তখন, বানিয়ে বানিয়ে গল্প বানাতো
টুকটুকি। ‘একটা কুকুরের খুব বুদ্ধি ছিল।বুদ্ধিতে
মাথা ফুলে গেছে। একদিন কুকুরটা ঠাকুরকে
বলল – ঠাকুর, আমাকে একটা আলমারি বানিয়ে দাও। অমনি কুকুরটা হয়ে গেল একটা
আলমারি, আর যেই কেউ আলমারির দরজাটা
খুলল, আলমারিটা বলে উঠল, ঘেউ!!’
একা ফ্ল্যাটে গল্পটা মনে করে হেসেই সারা
রঞ্জিতা। পাঁচটা তো প্রায় বাজে। উঠে রেডী হবার
জন্য শাড়ী বার করতে গেল সে। কিন্তু টুকটুকির
আলমারিটা খোলা মাত্র ভয়ংকর কাণ্ড!!ভৌ ভৌ
ভৌ ভৌ ভৌ ভৌ ভীষণ শব্দে আলমারির ভেতর
থেকে বিরাট একটা কুকুর যেন রঞ্জিতার টুঁটি
টিপে ধরতে এল!! এক ধাক্কায় আলমারির
দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে বসে পড়ে হাঁফাতে
থাকে সে।এটা কি হল? টুকটুকির ছোটবেলাকার
সেই গল্পটা আজ মনে পড়ল আর আজই কিনা
এরকম একটা ঘটল?? নাঃ, নিশ্চয়ই মনের
ভুল। একটু ধাতস্থ হয়ে সন্তর্পণে আলমারিটা
একচুল ফাঁক করে রঞ্জিতা। তক্ষুনি আবার
সেই ভয়ংকর ভৌ ভৌ শব্দ!! যেন বিশাল এক
কুকুর তার ঘাড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল কামড়ে ধরল
তার গলাটা!!
কি হচ্ছে এসব তার সঙ্গে? কলকাতায় স্বামীকে ফোন করবে? নাকি টুকটুকিকে? ঠিক
তক্ষুনি ওঘরে মোবাইলটা উঠলবেজে।টুকটুকির গলা। – মা, রেডী হয়েছো তো? নেমে
এসো তা’হলে। ধরা গলায় রঞ্জিতা বলে, – নারে,
আলমারিটা খুলতে পারছি না। মেয়ে ওপরে
উঠে এসে যেই না আলমারিটা খুলেছে, অমনি
সেই বীভৎস ভৌ ভৌ, রঞ্জিতার ডাক ছেড়ে
কান্না, টুকটুকির প্রবল লুটোপুটি হাসি আর
হাসির ফাঁকে আলমারিতে খুটখাট কিসব
করতেই কুকুরের ডাক তক্ষুনি বন্ধ। খাটে
গড়াগড়ি দিয়ে হাসছে টুকটুকি, –হোঃহোঃহোঃহোঃ মা, এই কাণ্ড!! আরে দুদিন
তুমি ঘরে ছিলে তো, তাই বার্গলার অ্যালার্মটা
অন্ করে যাইনি। আজ ভুল করে অন্ করে
গেছি, হিঃহিঃহাঃহাঃ মা, তুমি এত ভীতু,হোঃ
হোঃহোঃহোঃহোঃহোঃ…..