অতীতে এসব ফল ও শস্যের ব্যবহার জানলে চমকাবেন আপনিও!
১। শস্য
অ্যাজটেক সভ্যতায় এক ধরণের নির্দিষ্ট শস্যকে জাদুকরী কিছু বলে মনে করা হতো। এই শস্য দিয়ে দেবতার মূর্তি তৈরি করে তার পূজা করা হত। পূজা শেষে সেই মূর্তি ভেঙ্গে সবাইকে খেতে দেওয়া হত।
এমনকি, নতুন কোন শিশুপুত্র জন্ম নিলে তাকে কী কাজ করতে হবে সেটা মনে করিয়ে দিতে এই শস্য দিয়ে বানানো হত নানারকম হাতিয়ার। পরবর্তীতে, ১৫১৯ সালে স্প্যানিশরা অ্যাজটেক সভ্যতা দখল করে নিলে আরো অনেক কিছুর সাথে এই শস্য উৎপাদন করাও নিষিদ্ধ করে দেয়।
২। শসা
শসা! নিশ্চয় ভাবছেন, কী এমন জাদুকরী কাজে ব্যবহৃত হত এই সাধারন জিনিসটি। শসার আবিষ্কার হয় ভারতে এবং এটি টানা ৩,০০০ বছর ধরে উৎপাদিত হয়েছে। সেখানে এমন কোন জাদুকরী কিছু ভাবা হয়নি শসাকে।
তবে রোমান সাম্রাজ্যে শসাকে জাদুর ফল মনে করা হত। গর্ভধারণে সাহায্য করে শসা— এমনটাই ধারনা করা হত সেখানে। নারীরা গর্ভধারণের জন্য শসা কোমরে বেধে রাখতেন। পরবর্তীতে বাচ্চা জন্ম নিলে যত্ন করে রেখে দেওয়া সেই শসা নষ্ট করে ফেলা হত। শুধু তাই নয়, ইঁদুর তাড়াতে, চোখের দৃষ্টি ভালো করে তুলতে ও বিছার কামড় সারাতেও শসা ব্যবহার করা হত তখন।
৩। পেঁয়াজ
পেঁয়াজ রান্নায় আর আমাদের কাঁদতে সাহায্য করে। আর কী? এইতো ভাবছেন! বাস্তবে মিশরে এর ব্যবহার ছিল একটু অন্যরকম। প্রাচীন মিশরের সবখানে পেঁয়াজের উপস্থিতি পাওয়া যায়। পিরামিড থেকে শুরু করে অন্যান্য স্থানেও নানা আকৃতির পেঁয়াজের ছবি দেখতে পাওয়া যায়।
এমনকি কিছু কিছু দেবতার সাথেও পেঁয়াজের ছবি পাওয়া যায় প্রাচীন মিশরে। মমির ভেতরেও পেঁয়াজের উপস্থিতি পাওয়া যায়। ভাবা হতো, পরের জন্মের সাথে সংযোগ রয়েছে পেঁয়াজের। প্রাচীন মিশরে আরো ভাবা হত যে, শরীরের সাথে সুন্দর বাল্ব আকৃতির কিছু থাকলে হারিয়ে যাওয়া শ্বাস আবার ফিরে আসে। আর সেই সুন্দর বাল্বটি ছিল পেঁয়াজ!
৪। আপেল
আপেল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে এই বিশ্বাস বা এই কথাটি কিন্তু আজকের নয়। যুগে যুগে বিভিন্ন সভ্যতায় আপেল নিয়ে নানারকম বিশ্বাস কাজ করেছে। আপেলের উপস্থিতি পাওয়া যায় গ্রীক পুরাণে। এছাড়াও আইরিশ পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, শক্তিশালী মানুষেরা সুঠাম ও মজবুত থাকার জন্য, বয়স কমিয়ে রাখার জন্য আপেল খেতেন।
বলকান সভ্যতায় বিশ্বাস করা হয় যে, আপেল ভালোবাসার প্রকাশ করে। কোনো নারী কোনো পুরুষের কাছ থেকে আপেল নিয়েছে মানে সেই নারী সেই পুরুষকে ভালোবাসে। এছাড়াও, কোনো পুরুষ কোনো নারীকে অনেক বেশি ভালবাসলে, সেই নারীর কাছে নিজের মনোভাব প্রকাশ করার সবচাইতে সহজ ও ভালো উপায় ছিল তাকে আপেল উপহার দেওয়া।
৫। পপি বীজ
পপি বীজ নেশাদ্রব্য হিসেবে অনেক পরিচিত বর্তমানে। তবে একটা সময় ব্যাপারটি ঠিক এমন ছিল না। তখন মনে করা হত, পপি বীজ মূলত ঘুমের দেবতা হিপনোসের প্রতিনিধি। আর তাই কারো ঘুমের সমস্যা হলে সেক্ষেত্রে পপি বিজ খেতে বলা হত। এছাড়া মানসিকভাবে কেউ যদি খুব সমস্যায় থাকতো, আবেগী হয়ে পড়লে পপি বীজ গ্রহণ করা হতো।
তবে অন্যদিকে, পপি বীজের আরেক নাম ছিল একেবারে ঘুমিয়ে পড়া বা মৃত্যুর দেবী। এমন ধারণা ছিল গ্রীসে। সেখানে পপি বীজকে একটু অন্যরকম বলে মনে করা হত। মধ্যযুগে, নারীরা নিজের সঠিক ভালোবাসাকে খুঁজতে ব্যবহার করতো পপি বীজ।
আজ কী ফল খাচ্ছেন? এগুলোর কোনো একটি নয়তো?