অবাক হবেন বড় বড় ব্যবসার উদ্ভট সব গোপনীয়তা জেনে !
কলকাতা টাইমস :
ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে কতশত বিষয়কে না জেনেই চাটুকারিতা বা প্রতারণা মনে করে অজান্তেই ভুল ধারণা নিয়ে বসে থাকেন অনেকেই। তবে কখনো কি খতিয়ে দেখেছেন মূলত এর পেছনে কারণগুলো কী হতে পারে? আজ তবে কথা হোক সেসব বিষয় নিয়েই।
চিপসের কোম্পানিগুলো কেন তাদের প্যাকেটে এতটা বাতাস ভরে রাখে?
এই বিষয়টি কিন্তু আসলেই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ভোক্তাদের প্রতারণা করার জন্য করেন না। প্যাকেটের ভেতরে নাইট্রোজেন ভর্তি থাকে। অক্সিজেন থাকলে চিপসগুলো খুব দ্রুত বিস্বাদ এবং দুর্গন্ধ হয়ে যায়। নাইট্রোজেন চিপসের তরতাজা ভাবটি বজায় রাখে, দহন প্রতিরোধ করে এবং জাহাজে করে নিয়ে যাওয়া আসার সময় চূর্ণ বিচূর্ণ হওয়া থেকে রক্ষা করে। নাসার প্রতিবেদকরা জানিয়েছেন যে, উড়োজাহাজ উড্ডয়নের সময় বাতাসের চাপে আকস্মিক পরিবর্তনের কারণে চিপসের প্যাকেটগুলো ফেটে যায়।
ওয়ালমার্টে কেন অভিবাদনের ব্যবস্থা রয়েছে?
১৯৮০ সালে লুইসিয়ানার ক্রাওলিতে ওয়ালমার্টের ব্যবস্থাপক সেই দোকানের ভেতরে আসা চোরদের নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন। তাই তিনি একজন মহিলাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন যিনি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে সেখানে আসা মানুষদের অভ্যর্থনা জানাতেন এবং কোন বিষয়ে তাদের সাহায্য করতে পারেন কিনা তা জিজ্ঞেস করতেন।
এই অভ্যর্থনার কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের নিছক উপস্থিতি সম্ভাব্য চোরদের ভীতসন্ত্রস্ত করতো। ক্রাওলি স্টোর পরিদর্শন শেষে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ওয়্যাল্টন অতি সত্তর ওয়ালমার্টের অন্যান্য স্টোরগুলোর জন্য অভ্যর্থনাকারী ট্রেডমার্ক হিসেবে জারি করেন।
ম্যাকডোনাল্ডসে কোকাকোলার স্বাদ বেশি ভালো কেন মনে হয়?
ম্যাকডোনাল্ডসের ভক্তদের কাছে সেখানকার কোকাকোলার অন্য রকম একটি স্থান রয়েছে। তবে তাদের এই স্বাদের পার্থক্যটা মাথায় নাও আসতে পারে। ম্যাকডোনাল্ডস অন্যান্য কোম্পানির মতো সোডা বিধায়ক ব্যবহার করে না। প্রথমে তারা প্ল্যাস্টিকের ব্যাগের পরিবর্তে স্টেইনলেস স্টিলের বড় পাত্রে সোডার সিরপ নেয়। এরপর সোডার ধারাযন্ত্রের বদলে অন্য একটি রেফ্রিজারেটরে জল ঠান্ডা করে নেয়।
বেশিরভাগ ফাস্টফুডের দোকানগুলোর চিহ্ন কেন লাল রঙের হয়ে থাকে?
লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, ম্যাকডোনাল্ডস, ওয়েন্ডিস, বার্গার কিং, কেএফসি, আর্বিস— বেশিরভাগ ফাস্টফুড দোকানগুলোর লোগো লাল রঙেরই হয়ে থাকে। কিন্তু কেন? এই বিষয়টি আপনি হয়তোবা শুনে থাকবেন যে, লাল রং ক্ষুধা বর্ধকের কাজ করে। কিন্তু আসলে ব্যাপারটি তা নয়। প্রকৃতপক্ষে আমরা বিপদের সাথে লাল রঙটিকে সংযুক্ত করি যার জন্য আমাদের মনযোগ সেখানে গিয়ে ঠেকে যায়। আর ফাস্টফুডের দোকান বা লোগোগুলোর রঙ যদি গাঢ় লাল হয় তাহলে মনোযোগ আকর্ষণের মাত্রা আরও বহুগুণে বেড়ে যায়।
কলমের ঢাকনায় কেন ছিদ্র থাকে?
কলমের ঢাকনার ছিদ্র দেখলে মনে হয় যেন এর জন্য কলমের কালি শুকিয়ে যাবে। তবে কলম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর এমনটি করার পেছনে কারণটা কিন্তু ভিন্ন। আর যদি বলি যে, কারণটি হলো আপনার জীবন! এই কথাটি শুনে কি খুব বেশি আশ্চর্য হবেন? আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, কলমের ঢাকনা ভীষণ ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই কলম প্রস্তুত করার সময় ঢাকনাতে একটি ছোট ছিদ্র করা হয় যেন গলায় আটকে গেলেও বাতাস চলাচলটা অব্যাহত থাকে।
চকলেট বারের নিচের দিক একটি নির্দিষ্ট গড়নেরই কেন হয়ে থাকে?
স্নিকারস বা আরও কিছু কিছু চকলেটের নিচের সমত অংশটি খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে আঁকাবাঁকা এক ধরনের গড়ন রয়েছে। এই উদ্ভট রেখাগুলো কিন্তু প্রস্তুতকারকদের নির্বাচিত নয়। চকলেট প্রস্তুতের সময় একটি পর্যায়ে ঠাণ্ডা করার সময় কনভেয়র বেল্টের ছাপ পড়ে এমন দাগ হয়ে যায়।
হেইঞ্জ কেচাপ কেন ‘৫৭ ভেরাইটিজ’ এর কথা বলে?
এই ৫৭ সংখ্যাটি আসলে কোন কিছুকেই নির্দেশ করে না। এটি বাজারজাতকরণের একটি কৌশলগত পদক্ষেপ। এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা হেনরি হেইঞ্জ ১৮৯৬ সালে একটি জুতা প্রস্তুতকারী কোম্পানিকে দেখেছিলেন একুশটি ধরন প্রদর্শন করতে এবং তার এই ভিন্ন রকমের বিশেষত্বটির প্রতি ভালোলাগা কাজ করে। হেইঞ্জের নিজস্ব ষাট ধরনের পণ্য থাকলেও হেনরি ৫৭ নম্বরটিকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে ধরে নেন। হেইঞ্জের বিজ্ঞাপনগুলোতে তখন থেকে এই ৫৭ নম্বরটি ব্যবহার শুরু করা হয় যা আজও অব্যাহত রয়েছে।
বড় বড় ব্যবসাগুলোর উদ্ভট গোপনীয়তা জেনে নিলেন তো? আপনি নিজে একজন ব্যবসায়ী হলে নিজের ব্যবসায়ে এমন অর্থবহ ভিন্ন গোপনীয়তা কাজে লাগাতে পারেন কিন্তু!