November 1, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

সৌভাগ্যের চার অধ্যায় 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

পনি কতটা সৌভাগ্যের অধিকারী তা আসলে নির্ভর করে আপনার মানসিকতা এবং ব্যবহারের ওপর। অনেককেই বলতে শোনা যায় ‘আমার ভাগ্যটাই খারাপ’ কিংবা ‘আমার চেয়ে তোমার ভাগ্য ভালো’ ইত্যাদি। কিন্তু কেন কিছু মানুষ অন্যদের তুলনায় বেশি ভাগ্যবান? এই প্রশ্নটি যদি কখনো আপনাকে ভাবিয়ে থাকে তাহলে আসলেই তা পুনর্বিবেচনা করে দেখবার সময় এসেছে।

‘মানুষ নিজেরাই তাদের ভালো এবং খারাপ ভাগ্য তৈরি করে থাকে।’ এমনটাই মনে করেন রিচার্ড ওয়াইজম্যান। তিনি মানুষের জীবনে ভাগ্যের ভূমিকা এবং তার প্রভাব বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি এটিকে ‘বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান’ বলে অভিহিত করছেন এবং এখানে স্বঘোষিত বা নিজেদের যারা সৌভাগ্যবান এবং দুর্ভাগ্যবান বলে মনে করেন সেইসব মানুষদের মধ্যে পার্থক্যগুলোর দিকে নজর দেয়া হচ্ছে।

ভাগ্য কোনো যাদুকরী ক্ষমতা নয় কিংবা যথেচ্ছভাবে সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তি নয়। আসলে এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আমরা কিভাবে চিন্তা করি এবং আচরণ করে থাকি তার ওপর।

বিশেষ করে যাদেরকে আমরা ‘সৌভাগ্যের অধিকারী’ বলে মনে করি তারা যে চারটি বিষয় সবসময় অবলম্বন করেন তা হচ্ছে :

১. নতুন নতুন সুযোগ ছিনিয়ে নেয়া

স্ব-ঘোষিত সৌভাগ্যের অধিকারী যারা তারা সবসময় সুযোগগুলোকে চিহ্নিত করতে পারেন এবং অবশ্যই সঠিক সময়ে তাকে কাজে লাগিয়ে থাকেন। যখনই তারা সামনে এগিয়ে যাওয়ার নতুন কোনো উপায় বা পন্থা দেখতে পান, আনন্দ চিত্তে তারা সেদিকে নিজেদের পরিচালিত করতে উদ্যোগী হন। কিন্তু হতভাগ্য মানুষেরা করেন এর ঠিক বিপরীত। এমনটাই বলেন মিস্টার ওয়াইজম্যান।

তার ভাষায়, তারা একটি বাধা-ধরা ছকের মধ্যে বাস করেন। তাই যদি কোনো সুযোগ তাদের সামনে আসে, তারা সেই সুযোগের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে ভয় পান।’

২. সহজাত প্রবৃত্তির দৃঢ়তাকে অনুসরণ

নতুন নতুন সুযোগ গ্রহণ করার জন্য নিজের সহজাত দৃঢ়তাকে অনুসরণ করা জরুরি। সৌভাগ্যবান মানুষেরা তাতে ভীত হননা। যদি কোনকিছু তাদের কাছে সঠিক বলে মনে হয় তাহলে তারা বিশ্বাসের সাথে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং এগিয়ে যান। কিন্তু যারা নিজেদের দুর্ভাগ্যবান মানুষ মনে করেন তারা দেখা গেছে যে, প্রকৃতিগত-ভাবে অতিরিক্ত বিশ্লেষণাত্মক মনোভাবের এবং পরিস্থিতি নিয়ে বারবার ভাবনা চিন্তা করতে ব্যস্ত থাকেন। এটা তাদের জন্য বিশাল এক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

মনোবিজ্ঞানী ওয়াইজম্যানের মতে, “এই বিষয়টির কারণে কাজ শুরুর ক্ষেত্রে তারা প্রচুর সময় নেয় এবং তাদের চিন্তা-ভাবনা খুব একটা ইতিবাচক হয়না।”

৩. সাফল্যের প্রত্যাশা

আশাবাদী হিসেবে সৌভাগ্যের অধিকারী মানুষেরা প্রতিটি পদক্ষেপ থেকে সাফল্য অর্জনের প্রত্যাশা করে। ‘তারা আশা করে, সব কাজ ঠিকঠাক মত হবে এবং সেই বিশ্বাসই একটি নিজস্ব দৈববাণীতে পরিণত হয়” বলে মনে করেন ওয়াইজম্যান। অর্থাৎ ইতিবাচক প্রত্যাশার মনোভাব সফলতা আনতে জোরালো প্রভাব রাখতে পারে।

তবে সবসময়ই যে এই বিষয়টি সঠিকভাবে কাজ করবে তেমন নয়। কিন্তু ইতিবাচক মনোভাব তাদের কঠিন দুঃসময়েও পথ চলতে সহায়তা করে। এই গুণটির ব্যাপক প্রভাব রয়েছে এবং শেষপর্যন্ত অন্যান্য মানুষকে তা আকর্ষিত করে।

হতভাগ্য লোকেদের বেলায়, হতাশা বা নিরাশাবাদী ধরণ তাদের মনোভাবকে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে তাদেরকে অন্য অনেক লোকজন এড়িয়ে চলে কারণ সবসময় তারা মনমরা, বিষণ্ণ থাকে, বলেন ওয়াইজম্যান।

৪. ইতিবাচক অবস্থান

ইতিবাচক থাকা সৌভাগ্যের চাবিকাঠি। আমাদের সবার জীবনেই অনেক খারাপ বা মন্দ ঘটনা ঘটছে। কিন্তু সৌভাগ্যবান মানুষেরা সেই অভিজ্ঞতা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। পরিস্থিতি যত খারাপই হোকনা কেন তা থেকে তারা শিক্ষা নিয়ে তাদের পথচলা চালিয়ে যান।

দেখা যায়, এই গুনটিই এমনকি দুর্ভাগ্যকে সৌভাগ্যে রূপান্তরিত করে। কিন্তু যারা নিজেদের ‘দুর্ভাগ্যের অধিকারী’ বলে বিবেচনা করে তারা নেতিবাচক বিষয়ের দ্বারা নিজেরা নিজেদের অবস্থানকে নিচের দিকে নিয়ে যায়। তারা মনে করে ভবিষ্যৎ অন্ধকার এবং তাই চেষ্টা করেও কোনও লাভ নেই। সুতরাং সৌভাগ্যের অধিকারী হতে চাইলে…

এটা যথেষ্ট সৌভাগ্যের বিষয় যে, এখনো আশা ফুরিয়ে যায়নি। রিচার্ড ওইয়াইজম্যান বলেন, কিছু কৌশল আয়ত্ত করতে পারলে সেটি যেকোনো ব্যক্তিকে নিজেকে সৌভাগ্যবান ভাবতে এবং সেরকমই আচরণ করতে সাহায্য করতে পারে।

এরকমই একটি কাজ হচ্ছে ‘লাক ডায়েরি’ বা ‘ভাগ্যের দিনলিপি’ লেখা যা আপনার ভাগ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে। ‘রোজকার জীবনে ইতিবাচক, সৌভাগ্যময় যা ঘটবে তা লিখে রাখা, সেটি যত ক্ষুদ্র নগণ্য ঘটনাই হোক না কেন সেটি মুখ্য নয়।”

এই বিষয়টি নেতিবাচক মনোভাব দূর করতে সহায়তা করে এবং জীবনের ইতিবাচক দিকগুলোতে মনোযোগ দিতে সহায়তা করে। এটা সত্য যে আমাদের জীবনে অনেক ঘটনাই ঘটে যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, কিন্তু ‘লাক ডায়েরি’ নিয়মিতভাবে বজায় রাখার ফলে তা দৃঢ় লড়াকু মনোভাব গড়ে তুলতে সহায়তা করে।

হয়তো তা রাতারাতি ঘটবে না। মিস্টার ওয়াইজম্যান বলেন, “কিন্তু কম-বেশি এক সপ্তাহ পর তা মানুষের জীবনে সত্যিকারভাবেই প্রভাব ফেলতে শুরু করে।’

Related Posts

Leave a Reply