কিমাশ্চর্য (গল্প)
[kodex_post_like_buttons]
রানু ভট্টাচার্য
ছুটির দিনগুলোতে রেশমী আর অতনু বেরিয়ে পড়তো এখানে সেখানে।আজ ধপ-ধপি তো কাল কাঁচড়াপাড়া। এক দিন এল বোড়ালে।ষ্ট্যাণ্ডে একটাই রিক্সা।মোড়ের ছেলে- গুলো বলল,কানুকে নিয়ে যান দাদা। কানে একটু খাটো, কিন্তু কানু খুব ভালো ছেলে।
কানু তাদেরকে দেখায় সেনদিঘী, ত্রিপুরসুন্দরী মন্দির, দিঘী থেকে পাওয়া প্রত্নবস্তু। ধারাবিবরনীও দেয় যেতে যেতে।এই হল ছেলেদের স্কুল, আর দূরে হলুদ বাড়ীটা, ওটা মেয়েদের।এই যে,এই পুরোনো বাড়ীটা আমাদের পোষ্টাফিস, আর ঐ নতুন সাদা বাড়ীটায়, ঐ যে,দর্জির দোকানের পাশে, ওটা কোপারেটিভ ব্যাংক।
ফুরফুরে হাওয়ায় মিঠে রোদে ঝলমলে রেশমী বলে, আচ্ছা কানু, এখানে জঙ্গলের মধ্যে খুব পুরোনো এক কালী মন্দির আছে শুনেছি, চলো তো ঘুরে আসি। সোৎসাহে কানু বলে, ঐ শুটিংয়ের বাড়ীতেই তো যাচ্ছি এখন।এখানে এসে সবাই ওটা দেখতে যায়। এই যে দেখুন, বাঁশবাগান। এখানেও শ্যুটিং হয়েছিল। বাধা দেয় রেশমী, না না, সে কথা বলছি না, বলছি, ঐ যে জঙ্গলের মধ্যে ডাকাতে কালী মন্দিরটা -কানুর তুরন্ত জবাব, হ্যাঁ হ্যাঁ, এই সবুজ ক্লাব বাড়ীটাতেই
আমাদের ডিফেন্স পার্টির অফিস। আমিও দিই তো রাত পাহারা। উঃ কি জ্বালা, রাগে গজ্গজ্ করে রেশমী, এতটাই কালা নাকি ছেলেটা! অতনু হেসে ওঠে রেশমীর দিকে তাকিয়ে, ইশারায় কানুকে দেখিয়ে নিরুচ্চারে বলে, বদ্ধ কালা একটা!
আবার নাছোড়বান্দা রেশমী।আচ্ছা কানু,কতকিছুই তো দেখাচ্ছ। ঐ যে তখন বললামনা, জঙ্গলের মধ্যে খুব পুরোনো সেই কালীমন্দিরটা একবার -একগাল হেসে কালা কানু রিক্সা থামায়। এখানে নামবেন তো? নামুন। ফিল্ম কোম্পানী এখানেও শ্যুটিং করেছিল। কেমন শালুক ফুল দেখছেন, পুকুরে? ওগুলো কিন্তু পদ্ম নয়। যান না, দুজনেই গিয়ে দাঁড়ান না, ছবি তুলে দিচ্ছি।
হো হো হাসতে থাকা অতনুর দিকে চেয়ে আরো রেগে যায় রেশমী। এত সুন্দর ছুটির দিনটা – আর জায়গা পেল না বেড়াতে আসার? নাও, এবার বোড়ালের ব্যাংক আর স্কুলবাড়ী দেখে ফিরে চলো!
ঠিক তক্ষুনি বাসষ্ট্যান্ডে ওদেরকে নামিয়ে দিয়ে রিক্সা ঘুরিয়ে নিয়ে কানু বলে, পরের রোববার আবার আসবেন বৌদি।অনেকদূরে ঐ জঙ্গলের মধ্যে খুব পুরোনো একটা কালীমন্দির আছে, ওখানে নিয়ে যাবো আপনাদের।