বেসুরো হলেও সপ্তসুর তুলুন রোজ, হবে ৭ ম্যাজিক
কলকাতা টাইমস :
‘শিং নেই তবু নাম তার সিংহ’ – এই গানটা প্রতিদিন জোড়ে জোড়ে গাইলে কি হবে জানেন? জানি তো! লোকে পাগল বলবে! ঠিক বলেছেন। তবে তার সঙ্গে আপনার শরীরেরও অনেক উন্নতি ঘটবে, সে কথা জানেন কি? গান গাইলে শরীর ভাল হয়? একেবারেই!
গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত গান গাইলে শরীর এবং মস্তিষ্কের ভেতর এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে ছোট-বড় অনেক রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। ফলে আয়ু বাড়ে চোখে পরার মতো। সেই সঙ্গে স্ট্রেস লেভেল কমতে থাকার কারণে মন আনন্দে ভরে ওঠে।
১. ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: শুনে হয়তো অবাক হচ্ছেন। কিন্তু একথা ঠিক যে নিয়মিত গান গাইলে বাস্তবিকই ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। আসলে গান গাওয়ার সময় সারা শরীরে এবং ত্বকের ভেতর অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে ত্বকের বয়স কমতে সময় লাগে না। আর বলিকরেখা যখন মিলিয়ে যেতে শুরু করে তখন ত্বকের সৌন্দর্য বাড়তে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, গান গাওয়ার সময় মুখের পেশির সচলতাও বৃদ্ধি পায়। এই কারণেই ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ে চোখে পরার মতো।
২. মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: গান গাওয়ার সময় ব্রেনে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিভাবেই মনোযোগ এবং স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে, সেই সঙ্গে বুদ্ধির বিকাশ ঘটতেও সময় লাগে না।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: ইউনিভার্সিটি অব ফ্রাঙ্কফুর্টের গবেষকদের এক পরীক্ষায় দেখা গেছে গান গাওয়ার সময়, তা জোরে হোক কী আস্তে, শরীরের ভেতর “ইমিউনোগ্লোবিউলিন-এ” নামক একটি উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। যে কারণে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
৪. পারকিনসন রোগের চিকিৎসা: পারকিনসন রোগে ভুগতে থাকা রোগীরা যদি নিয়মিত অল্প-বিস্তর গান গেয়ে থাকেন, তাহলে শরীররে অনেক উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে রোগের প্রকোপ কিছুটা হলেও কমে। শুধু তাই নয়, কথা বলার ক্ষমতাও বাড়তে থাকে। ফলে দৈনন্দিন জীবনের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না।
৫. গান গাওয়া এক ধরনের শরীরচর্চা: নিয়মিত গান করলে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে ভোকাল কর্ডের শক্তি বাড়ে। প্রসঙ্গত, বতর্মান সময়ে আমাদের দেশে প্রতিটি বড় শহরে যে হারে বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়ছে, তাতে আরও বেশি করে ফুসফুসের খেয়াল রাখার প্রয়োজন বেড়েছে।
৬. স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদ কমায়: গান গাওয়ার সময় মস্তিষ্কের অন্দরে এন্ডোরফিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যার প্রভাবে মানসিক চাপ তো কমেই, সেই সঙ্গে মন খুশিতে ভরে ওটে। তাই এবার থেকে যখনই মন খারাপ করবে, তখনই দু’কলি গান গেয়ে নেবেন, দেখবেন সঙ্গে সঙ্গে উপকার মিলবে।
৭. একাকিত্ব দূর করে: গান গাইতে জানলে পাড়ার সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গানের সুযোগ এসেই যায়। ফলে লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা বাড়তে থাকে। বাড়ে বন্ধুর সংখ্যাও। ফলে স্বাভাবিকভাবেই একাকিত্ব দূর হয়।
প্রসঙ্গত, আপনি যদি বেসুরো বাথরুম সিঙ্গারও হন, তাতেও কোনও ক্ষতি নেই। দেখলেন তো গান গাইলে কত উপকার পাওয়া যায়। তাই ভুলেও গান গাওয়া বন্ধ করবেন না যেন! প্রয়োজন শুধু বাথরুমে নয়, কাজের ফাঁকে অফিসেও মাঝে মাঝে একটু গান গেয়ে নেবেন। দেখবেন শরীর এবং মন একেবারে চাঙ্গা হয়ে উঠবে।