৮০ টন বিষ খেয়ে এখন তারা সংখ্যায় লক্ষাধিক!
হেন্ডারসন আইল্যান্ডের বুনো ইঁদুরগুলো বাচ্চা পাখি ও সামুদ্রিক কচ্ছপের বড় শত্রু হয়ে উঠেছিল। দুই মিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র প্রয়োগের কয়েক সপ্তাহ পর শত্রু নিধনের সংখ্যা মাত্র ৬০-৮০টি!
ওষুধ প্রয়োগের কয়েক বছর পর ইঁদুর হয়তো অনেক মরেছে। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে তাদের সংখ্যা ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ছাড়িয়েছে। বিষ প্রয়োগে আগে যা ছিল, এখনো তাই রয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজের বিশেষজ্ঞ মাইকেল ব্রুক জানান, প্রত্যেকটি স্ত্রী ইঁদুর কয়েক মাস পর পর বাধা ডজন বাচ্চা জন্ম দেয়। স্ত্রী প্রজাতির বাচ্চাগুলো ২-৩ মাসের মধ্যে বড় হয়ে যায়। গণিতের হিসাব করা হলে এদের আগের সংখ্যা বৃদ্ধিতে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না। এ ধরনের প্রজেক্ট হয় সফল হয়, অথবা ব্যর্থতার মুখ দেখে।
এই প্রজেক্ট ব্যর্থতার কারণ রয়াল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স সাপ্তাহিকে তুলে ধরা হয়েছে। এতে রোডেন্টকে উৎখাত কতটা কঠিন তা তুলে ধরা হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আইল্যান্ড কনজারভেশনের ব্রাড কেইট জানান, ওষুধ প্রয়োগে হয়তো অল্প কয়টা টিকেছিল। কিন্তু তারাই কয়েক বছরের মধ্যে আবার আগের সংখ্যায় ফিরে এসেছে।
হেন্ডারসন দ্বীপটি ইঁদুরে পূর্ণ। এই দ্বীপে ৮০০ বছর আগে এদের আগে পলিনেশিয়ান নাবিকরা। তাদের প্লাস্টিক বা ধাতুর ড্রামে করে ইঁদুর চলে আসে। এরা দ্বীপে বসবাসরত পাখিদের বাচ্চাগুলো খেয়ে ফেলে। এদের কারণে ৯৫ শতাংশ পাখি কমে যায়। এদের বাঁচাতে রয়াল সোসাইটি এ দ্বীপের প্রাণ বৈচিত্র্য বাঁচাতে এই বিশাল উদ্যোগ হাতে নেয়। এ প্রজেক্টের প্রধান নিউ জিল্যান্ড-ভিত্তিক কনসালটেন্ট নিক টর।
ওষুধ প্রয়োগের ৭ মাস পর ন্যাশনাল জিওগ্রাফির অভিযাতী মাইক ফে দ্বীপের পাখির সংখ্যা নির্ণয়ের চেষ্টা করেন। সেখানে গিয়ে দেখেন, ইঁদুর গাছের এক ডাল থেকে অন্য ডালে লাফির পড়ছে। পাখি উজাড় হয়ে গেছে।
এ প্রজেক্ট ব্যর্থতার আরেকটি কারণ থাকতে পারে। ওষুধ প্রয়োগের কয়েক দিন আগে দুর্ভাগ্যজনকভাবে দ্বীপে বন্যা হয়ে যায়। তবে এত দ্বীপটি ফুলে-ফলে ভরে উঠেছিল।
তবে এতে ভেঙে পড়েনি রয়াল সোসাইটি। তারা শেষ না করা কাজ শেষ করতে আবারো ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দ্বিতীয়বারের মতো অভিযান চালানো হবে। যদি ইঁদুর পুরোপুরি দূর করা যায়, তবে সামুদ্রিক পাখিদের সংখ্যা শতগুন বেড়ে যাবে বলে জানান ব্রুকস।