মুখে লোহার মুখোশে ঢাকা ৩৫০ বছরের রহস্য!
কলকাতা টাইমস :
৩৫০ বছরের পুরনো ফ্রেঞ্চ রহস্য উন্মোচিত হলো। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসবিদ পল সনিনো তার নতুন বইয়ে সাড়ে তিন শ বছর আগেকার লোহার মুখোশ পরা এক মানুষের মুখোশ খুলতে সক্ষম হয়েছেন।
বইটিতে বলা হয়, লোহার মুখোশ পরা মানুষটি ১৬৬৯ সালে বন্দি হয়েছিলেন। তাকে ফ্রান্সের বাস্তিলসহ অন্যান্য জেলে তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে বন্দি রাখা হয়। ১৭০৩ সালে ওই বন্দির মৃত্যু ঘটে। তার পরিচয় এতদিন ধরে রহস্য হয়েই ছিল। সনিনোর মতে, ১৯৯৮ সালে ‘দ্য ম্যান ইন দ্য আয়রন মাস্ক’ সিনেমার মাধ্যমে ছবিটি ব্যাপক পরিচিত লাভ করে। এতে অভিনয় করেন লিউনার্দো ডি ক্যাপ্রিও।
এমনকি ওই মুখোশ পরিহিত মানুষটির পরিচয় দার্শনিক ভলতেয়ার ও লেখক আলেক্সান্দার দ্যুমার চোখকেও ফাঁকি দেয়। তবে তাদের তত্ত্ব বেশ জনপ্রিয় হয়। তাদের বলেছিলেন, মানুষটি লুইস চতুর্দশের জমজ ভাই ছিলেন।
ইতিহাসবিদদের অধিকাংশ মনে করেন, ব্যক্তিটির নাম উসটাচি ডুগার। মাঝে মধ্যে তাকে মুখোশটি পরানো হতো। তবে তা লোহার তৈরি ছিল না। ওটা আসলে ভৃত্যদের জন্যে বিশেষ মুখোশ ছিল। তবে ইতিহাসবিদরা নিশ্চিত নন যে, তাকে কেন ৩০ বছর ধরে এত নিরাপত্তাবেষ্টনীতে বন্দি রাখা হয়েছিল।
‘দ্য সার্চ ফর দ্য ম্যান ইন দ্য আয়রন মাস্ক : এ হিস্টোরিক্যাল ডিটেকটিভ স্টোরি’ বইটিতে সনিনো পাঠককে বহু ইতিহাসের মধ্য দিয়ে নিয়ে গেছেন। ব্যাপক অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে বন্দির পরিচয় তুলে এনেছেন।
গবেষণার মাধ্যমে সনিনো জানান, ডুগার ছিলেন সেই সময়ের ট্রেজারার কার্ডিনাল মাজারিনের ভৃত্য। লুইস চতুর্দশের সময় ট্রেজারার ছিলেন শীর্ষ মন্ত্রী। লুইসের শাসনের প্রথম দিকে মাজারিন প্রচুর অর্থের মালিক বনে যান। সনিনোর ধারণা, অর্থের কিছু অংশ ভৃত্য চুরি করেছিলেন। আর তারই শাস্তি ভোগ করতে হয় এভাবে। মাজারিন ইংল্যান্ডের আগের রাজা ও রানির কাছ থেকে বিপুল সম্পদ অর্জন করতে সক্ষম হন বলে মনে করেন সনিনো। মুখোশ বানানোর কারণ হলো, এ ধরনের কর্মচারী চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ঝামেলা সৃষ্টি হবে। তাই তার পরিচয় লুকাতেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এখানে জীবন জটিল নয়। কারণ মানুষ তার চেয়ে অনেক বেশি জটিল হতে পারে, বলেন সনিনো।