বিশ্বখ্যাত খাবার ‘সেঞ্চুরি এগ’ তৈরি হয় পচা ডিম থেকে!
সেঞ্চুরি এগের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা না গেলেও বিজ্ঞানীদের ধারণা ৫০০ বছরেরও বেশি সময় আগে চীনের মিং শাসনামলে এই খাবারটি উদ্ভাবন করা হয়। তবে ডিমটির প্রস্তুতি ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়া রয়ে গেছে প্রায় আগের মতোই।
ডিমটি প্রস্তুতের জন্য প্রথমে একটি বড় পাত্রে কড়া রঙ চা, চুন, লবণ এবং ছাইয়ের মিশ্রণ এক রাত রেখে দেয়া হয়। পরের দিন হাঁস, কোয়েল অথবা মুরগির ডিম ওই মিশ্রণের সাথে যুক্ত করা হয় এবং সাত সপ্তাহ থেকে পাঁচ মাস সময়ের জন্য তা পুনরায় রেখে দেয়া হয়।
তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এরপর উজ্জ্বল কমলা কুসুমের সাদা ডিমটি আর খুঁজে পাওয়া যায় না। এর রঙ হয়ে যায় ঘন বাদামি আর হালকা সবুজ। অনেকটা ঘোড়ার মূত্রের মতো তীব্র আর ঝাঁঝালো গন্ধের কারণে অনেকে একে বলে থাকেন ‘হর্স ইউরিন এগ’ (ঘোড়ার মুত্রের ডিম)। অর্থাৎ প্রক্রিয়াজাত করার পর এটিকে পচা ডিম বলেই মনে হয়।
প্রথমে কয়েকশ বছর ধরে খাবারটি শুধু গ্রামাঞ্চলে দেখা গেলেও ১৯৪০ সালে চীনের গৃহযুদ্ধে অনেক রাঁধুনী শহরে চলে আসেন। তারা সঙ্গে করে আনেন ঐহিত্যবাহী ওই খাবার।
‘অনেক সময় বিদেশিরাও খাবারটি খুঁজতে আসেন। তবে এটার রঙ আর গন্ধে বিরক্তবোধ করেন। ব্যাপারটি আসলে মানসিক। গন্ধটি বাজে হলেও খাবারটি অসাধারণ।’
তবে খাবারটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করেছেন চিনারা, তাদের মতে ‘সময় পরিবর্তিত হচ্ছে। এই খাবরাটির প্রতি তরুণ প্রজন্মের আগ্রহও দিন দিন কমে যাচ্ছে।’
‘খাবারটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হলেও সম্ভবত তা আরো কয়েক শতক টিকে থাকবে। যারা চিনাদের কাছে এই খাবারটির জন্য যান তাদের আমরা ছোটবেলার স্বাদ থেকে বঞ্চিত করতে চান না।