February 23, 2025     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular বিনোদন

একবেলা খাবার জোটাতে নাচের স্কুলে যেতেন এই বিশ্বখ্যাত তারকা 

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

মন বহু তারকা আছেন যাদের জন্য গোটা বিশ্ব পাগল। কিন্তু জানেন কি এই তারকাদের শৈশব কেমন কেটেছে। আজ আপনাদের জানাই সেই তারকাদের সম্পর্কে –

১. কার্লোস অ্যাকোস্টা
বিখ্যাত এই ব্যালে নৃত্য শিল্পী খুবই দরিদ্র একটি পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। শৈশবে তিনি প্রায়ই জুতার অভাবে খালি পায়ে চলাফেরা করতেন।
১৯৭৩ সালে কিউবার হাভানায় জন্মগ্রহণকারী কার্লোস অ্যাকোস্টা ছিলেন এক দরিদ্র ট্রাক ড্রাইভারের ১১তম সন্তান। তার মা ছিলেন তীব্র স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত একজন নারী। কৈশোরে তাকে কিউবান ন্যাশনাল ব্যালে স্কুলে পাঠানো হয় শুধু দিনে একবেলা খাবার যোগাড় করার জন্য। ১৯৯১ সালে তিনি গ্রাজুয়েট হন। চুড়ান্ত পরীক্ষায় শীর্ষস্থান দখল করায় তাকে একটি গোল্ড মেডেলে ভুষিত করা হয়।
অ্যাকোস্টা বিশ্বের সেরা সেরা ব্যালে কম্পানিগুলোর সাথে নেচেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কম্পানিটি হলো, লন্ডনের রয়্যাল ব্যালে। তিনি বিশ্বের সেরা ব্যালে নাচিয়েদের একজন হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছেন।
২. অশ্বিন উইলেমসে
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ প্রদেশের ক্যালেডনে মাত্র ১৬ বছর বয়সে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন অশ্বিন উইলেমসে। দুবার পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছিলেন তিনি। এক সময় তার সব বন্ধু হয় জেলে বন্দি হয়েছেন আর নয়তো মারা গেছেন। এরপর তিনি রাগবি খেলার প্রতি নিজের অনুরাগ আবিষ্কার করেন এবং জীবনটাকে পুরোপুরি বদলে ফেলেন।
স্থানীয় রাগবি টিম সোয়ার্টবার্গে খেলা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরুর করে বিশ্ব রাগবির খ্যাতির শিখরে পৌঁছে যান অশ্বিন উইলেমসে।

৩. মালালা ইউসুফজাই
মাত্র ১৭ বছর বয়সে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়ে বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী নোবেল বিজয়ীর খেতাব অর্জন করেন মালালা ইউসুফজাই। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে জন্ম গ্রহণ করেছেন মালালা ইউসুফজাই। শৈশব ও কৈশোরে তিনি এমন একটি অঞ্চলে বেড়ে উঠেছেন যা ছিল ইসলামি চরমপন্থী তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে। যেখানে মেয়েদেরকে বিদ্যালয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়।
১১ বছর বয়সে বিবিসি উর্দু বিভাগে ছদ্মনামে ব্লগিং শুরু করেন মালালা। সেখানে তিনি তালেবানদের অধীনে মেয়েদের জীবনের দুঃখ-দুর্দশাগুলো নিয়ে লেখালেখি করেন।
এছাড়া নারী অধিকার নিয়ে সোচ্চার হয়ে খ্যাতি অর্জনের ফলে তালেবানরা তাকে মাত্র ১৫ বছর বয়সে হত্যার চেষ্টা চালায়। এতে তালেবানদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে। মালালাকে হত্যা চেষ্টার দায় স্বীকার করার পর পাকিস্তানের ৫০ জন বিখ্যাত ইসলামি ধর্মতাত্বিক তার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেণ।
নারীদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে আন্দোলনের স্বীকৃতি স্বরুপ মালালাকে শাখারভ পুরস্কার, ন্যাশনাল ইয়ুথ পিস প্রাইজ অফ পাকিস্তান এবং নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
৪. অপরাহ উইনফ্রে
যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি প্রদেশের দরিদ্র গ্রামাঞ্চলে জন্ম গ্রহণ করেন অপরাহ উইনফ্রে। শৈশবে নিজ পরিবারের একাধিক সদস্যের হাতে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন অপরাহ। অবশেষে নির্যাতন সইতে না পেরে মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসেন। এরপর ন্যাশভিলে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন বাবার সঙ্গে থাকা শুরু করেন তিনি। সেখানেই তিনি স্কুলের গণ্ডি পার হওয়ার আগেই একটি রেডিওতে চাকরি নেন।
টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। এরপর স্থানীয় সান্ধ্য সংবাদ অনুষ্ঠানের সহকারি অ্যাংকর হিসেবে কাজ করেন। সেখান থেকে তিনি শিকাগোর একটি টক শোতে স্থানান্তরিত হন।
শিকাগোতে তিনি নিজের প্রোডাকশন কম্পানি “দ্য অপরাহ উইনফ্রে শো” গড়ে তোলেন। তার এই শো যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যাট শোর জগতে বিপ্লব ঘটিয়ে দেয়। অল্প সময়ের মধ্যেই তার অনন্য পাপ স্বীকার এবং আবেগি স্টাইলের চ্যাট শো একটি অনন্য ব্র্যান্ড হয়ে ওঠে।
সমকামিদের অধিকার সহ অনেক সামাজিক ট্যাবুর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন উইনফ্রে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই সমাজের সংখ্যালঘুদের অধিকার আদায়ের অগ্র সৈনিক এবং একজন বিশ্বপ্রেমিক হয়ে ওঠেন তিনি।
তার অপরাহ অ্যাঞ্জেল নেটওয়ার্ক বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দাতব্য প্রকল্পসমূহের জন্য ৮০ মিলিয়ন ডলারের এক বিশাল তহবিল সংগ্রহ করে। আটলান্টার মোরহাউজ কলেজের ৪০০ শিক্ষার্থীর বৃত্তির ব্যবস্থা করতে তিনি অর্থ সরবরাহ করেন।
৩.১ বিলিয়র ডলার মূল্যমানের সম্পদের মালিক অপরাহ উইনফ্রে আমেরিকার শীর্ষ আফ্রিকান-আমেরিকান ধনী।

৫. চার্লি চ্যাপলিন
চার্লি চ্যাপলিনের শৈশবের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে কারখানা ও কাঙ্গাল বিদ্যালয়ে। আর তার মার সঙ্গে নির্দিষ্ট সময় পরপর বেশ কিছু দিনের জন্য তিনি পাগলা গারদে গিয়েও কাটাতেন। কিন্তু মাত্র ৩০ বছর বয়সেই তিনি বিশ্বের সেরা তারকাদের একজন হয়ে ওঠেন। নির্বাক সিনেমায় ভবঘুরের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি বিশ্বব্যাপী খ্যাতি লাভ করেন।
জার্মানির স্বৈরশাসক অ্যাডলফ হিটলারকে ব্যাঙ্গ করে নির্মিত সিনেমা “দ্য গ্রেট ডিক্টেটর” সহ তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত বেশ কয়েকটি সিনেমায় চিত্রনাট্য লেখা, পরিচালনা এবং অভিনয় করেছেন।
তিন তিনবার সিনেমার সর্বোচ্চ পুরস্কার অস্কার, ফ্রান্সের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা লিজিয়ন দ্য অনার এবং ব্রিটিশ নাইটহুড খেতাবপ্রাপ্ত চ্যাপলিনকে এখনো সিনেমা শিল্পর শীর্ষ মেধাবীদের একজন হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।

Related Posts

Leave a Reply