শিশুর অতিরিক্ত কান্না? থামবে সুচ ফোটালেই !
শিশুর কান্না অতি স্বাভাবিক বিষয়। খিদে বা কোনো সমস্যার জানান দিতে তারা কান্নার আশ্রয় নেয়। কিন্তু অতিরিক্ত কান্না মোটেও ভালো বিষয় নয়। যদি আপনার শিশু দিনে বা একটানা তিন ঘণ্টার বেশি কাঁদে, তবে সম্ভবত আপনার শিশুটি ইনফ্যান্টাইল কোলিক বা বেবি কোলিকে আক্রান্ত। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়, কোলিন ব্যথার কারণে শিশুরা মাত্রাতিরিক্ত কাঁদলে নিরাময়ের কার্যকর উপায় হিসাবে রয়েছে আকুপাংকচার।
শিশুরা দিনে তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কাঁদলে তাকে ইনফ্যান্টাইল কোলিক বলে ধরে নেওয়া হয়। তা ছাড়া এই অবস্থা সপ্তাহে তিন দিন ধরে টানা তিন সপ্তাহ চললে একই সমস্যা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
গবেষণায় বলা হয়, প্রতি ৫টি পরিবারের মধ্যে একটি পরিবারের শিশুর এই সমস্যা রয়েছে। তারা খুব বেশি কাঁদে। শিশুর যন্ত্রণাসহ পরিবারেরও ব্যাপক পেরেশানির সৃষ্টি হয় এতে।
এ ঝামেলা থেকে শিশুকে বাঁচাতে ও নিজে বাঁচতে শিশুকে সুচ ফোটাতে হবে। ভাবতে নিশ্চয়ই অবাক লাগছে? যে শিশু কাঁদছে তাকে সুচ ফোটালে কান্না কিভাবে থামে? কিন্তু এটাই চিকিৎসা। অর্থাৎ, আকুপাংকচার দারুণ কার্যকর এক চিকিৎসা।
সুইডেনের লান্ড ইউনিভার্সিটির কাজসা ল্যান্ডগ্রেন জানান, যে শিশুরা দিনে ৩ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কান্না করে, তাদের চিকিৎসকায় আকুপাংকচার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা হতে পারে।
অতীতে বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়েছে, চীনের এই প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি দেহের ব্যথা, পেটের সমস্যা দূরীকরণ এবং অস্থিরতা দূর করতে পারে।
এ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দুই ধরনের আকাপাংকচার পদ্ধতি ব্যবহার করেন ১৪৪টি শিশুর ওপর। এদের বয়স ২-৮ সপ্তাহের মধ্যে। এদের তিনটি দল গঠন করা হয়। প্রথম দলের শিশুদের দেহের একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে আকুপাংকচার করা হয়। দ্বিতীয় দলের শিশুরা সর্বোচ্চ ৫টি স্থানে আকুপাংকচার পায়। আর তৃতীয় দলের শিশুদের কোনো সুচ ফোটানো হয়নি। তাদের জন্য অন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
দেখা গেছে, তিনটি দলের শিশুদেরই কান্না অনেক কমে এসছে। কিন্তু প্রথম দুই দলের শিশুদের কান্না কমে আসার পরিমাণ ও হার অনেক বেশি। আকুপাংকচার যাদের দেওয়া হয়েছে, তাদের সমস্যা অনেকটাই কমে গেছে। প্রাচীন এই চিকিৎসা সত্যিই এক বিস্ময় বলে মত দেন বিশেষজ্ঞরা।
অস্থিরতা এবং কান্নাকাটি করা শিশুদের স্বাভাবিক ও সহজাত আচরণ। কিন্তু একে স্বাভাবিক মাত্রায় রাখতে চিকিৎসার দরকার। আর সে ক্ষেত্রে কোনো ওষুধ প্রয়োগ না করে আকুপাংকচার সুস্থতা প্রদানে সক্ষম।