অবাক হবেন না ! মৃত্যুর দুই দিন পরও দেহে থাকে ‘আত্মা’!
কলকাতা টাইমস :
মৃত্যুর পর সঙ্গে সঙ্গেই যে দেহের সম্পূর্ণ মৃত্যু হয় তা নয়। গবেষকরা বলছেন মৃত্যুর দুই দিন পরেও দেহের কিছু অংশ সচল থাকে। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ফক্স নিউজ।
মৃত্যু হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যখন সকল শারিরীক কর্মকাণ্ড যেমন শ্বসন, খাদ্য গ্রহণ, পরিচলন, ইত্যাদি থেমে যায়। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় মৃত্যু সম্পর্কে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা গেছে, যা জানলে অবাক হবেন অনেকেই।
মৃত্যু মূলত একটি লাইটের সুইচ বন্ধ করার মতো বিষয় নয়, যেখানে দপ করেই আলো নিভে যায়। গবেষকরা বলছেন, মৃত্যু হলো কম্পিউটারের শাট ডাউন করার মতো পরিস্থিতি। যেখানে ধীরে ধীরে তা ক্রমে বন্ধ হয়ে যায়। আর নতুন গবেষণায় এ বিষয়টিই উঠে এসেছে।
গবেষকরা বলছেন, মৃত্যুর দুই দিন পর পর্যন্ত দেহের সব অঙ্গের মৃত্যু হয় না। আর প্রাথমিকভাবে মৃত্যু হয়েছে মনে হলেও এ সময়ে দেহের কিছু জিন সক্রিয় থাকে।
এ বিষয়ে গবেষণাটি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের গবেষকরা। তারা মৃত্যুর পরও দেহের ভেতরে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণায় জানতে পেরেছেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এক্ষেত্রে এক ধরনের জিনের কার্যকলাপও তারা শনাক্ত করেছেন। যার কার্যকলাপ দেখা যায় হৃৎস্পন্দন বন্ধ হওয়ার দুই দিন পর পর্যন্ত।
মৃত্যু বিভিন্ন স্তরে ঘটে থাকে। সোমাটিক মৃত্যু হল সামগ্রিকভাবে কোন জীবের মৃত্যু। নির্দিষ্ট অঙ্গ, কোষ বা কোষাংশের মৃত্যুর আগেই এটি ঘটে। এতে হৃৎস্পন্দন, শ্বসন, চলন, নড়াচড়া, প্রতিবর্ত ক্রিয়া ও মস্তিষ্কের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। সোমাটিক মৃত্যু ঠিক কখন ঘটে তা নির্ণয় করা দুরূহ, কেননা কোমা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, এবং ঘোর বা ট্রান্সের মধ্যে থাকা ব্যক্তিও একই ধরনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে থাকেন।
সোমাটিক মৃত্যুর পর অনেকগুলি পরিবর্তন ঘটে যা থেকে মৃত্যুর সময় ও কারণ নির্ণয় করা যায়। মারা যাবার পরপরই পার্শ্ববর্তী পরিবেশের প্রভাবে দেহ ঠাণ্ডা হয়ে যায়, যাকে বলে অ্যালগর মর্টিস। মারা যাবার পাঁচ থেকে দশ ঘণ্টা পরে কঙ্কালের পেশীগুলি শক্ত হয়ে যায়, যাকে বলে রাইগর মর্টিস। এ পরিস্থিতি তিন-চার দিন পরে শেষ হয়ে যায়। রেখে দেয়া দেহের নীচের অংশে যে লাল-নীল রঙ দেখা যায়, তাকে বলে লাইভর মর্টিস। রক্ত জমা হবার কারণে এমন হয়।
মৃত্যুর পর দেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিভিন্ন সময় নষ্ট হওয়া শুরু হয়। হৃৎপিণ্ডের কোষগুলো ১৫ মিনিট এবং কিডনি প্রায় ৩০ মিনিট বেঁচে থাকতে পারে। এই কারণে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সদ্যমৃত দেহ থেকে সরিয়ে নিয়ে জীবিত ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। তবে সম্পূর্ণ দেহের কিছু না কিছু অংশের কার্যক্রম দুই দিন পর্যন্ত চলতে দেখা যায়।