রাজীব গান্ধী নন, ইনি ছিলেন সোনিয়া গান্ধীর প্রথম প্রেম !
কলকাতা টাইমস :
ভারতের রাজনীতিতে গান্ধী পরিবার বিশেষ গুরুত্ব রাখে। বংশ পরম্পরায় এই বংশ ভারতের ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। ইন্দিরা থেকে রাজীব রাজীনীতির জন্য নিজের প্রাণ দিয়েছেন। তাই এই পরিবারের ছোট ছোট কথা জানতেও শুধু ভারত নয় বিশ্ব অপেখ্যা করে। যেমন ধরুন একসময় বিদেশিনী আন্তোনিয়া মাইনো থেকে রাজীব গান্ধীর স্ত্রী হওয়া সোনিয়া গান্ধীর জীবন। রাজীব-সোনিয়ার প্রেম বিবাহের্ পরের ইতিহাস আমাদের জানা কিন্তু সোনিয়ার বিয়ের আগের জীবন জানেন কি। জানতে উৎসুক হয়ে উঠলেন তো?
তাহলে প্রথমেই জানাই আন্তোনিয়া মাইনো ওরফে সোনিয়ার জীবনে রাজীব প্রথম প্রেম নন। প্রথম প্রেমে মাত্র চার বছরেই ইতি টানেন প্রেমিক-প্রেমিকা। এরপর আর তাদের প্রেম এগোয়নি। মাঝপথেই তা নষ্ট হয়ে যায়। পরে প্রেমিক ও প্রেমিকা দূরে সরে যান। বলা ভালো, ভাগ্য তাদের মিলতে দেয়নি।
তখন তিনি আন্তোনিয়া মাইনো। চৌদ্দ বছর বয়সের ফুটফুটে এক মেয়ে। প্রেমে পড়লেন এক ফুটবলারের। নাম ফ্রাঙ্কো লুইসন। সময়টা ১৯৬০-এর দশক। সেই সময় ফ্রাঙ্কোর সঙ্গে পরিচয় আন্তোনিয়া মাইনোর। প্রথমে দেখা, তার পরে প্রেম।
এক সাক্ষাৎকারে সোনিয়ার প্রথম প্রেমিক ফ্রাঙ্কো লুইসন টাইমমেশিনের সাহায্যে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন সেই ১৯৬০-এর দশকে। আন্তোনিয়া মাইনো ও ফ্রাঙ্কোর প্রেম শেষ পর্যন্ত পূর্ণতা পায়নি। খুব মিষ্টি সম্পর্ক ছিল দু’ জনের। চার-চারটে বছর টিকে ছিল তাদের প্রেম।
প্রেম পূর্ণতা না পেলেও ফ্রাঙ্কো এখনো সোনিয়া সম্পর্কে গভীর শ্রদ্ধাশীল। সোনিয়া যে এখন এ জায়গায় পৌঁছেছেন তাতে বেশ খুশি ফ্রাঙ্কো। এক সাক্ষাৎকারে ফ্রাঙ্কো বলেছেন, আন্তোনিয়া মাইনোর সঙ্গে আমার প্রেম একটা আশীর্বাদ। আমরা একে অপরের প্রেমে পড়েছিলাম। ফ্রাঙ্কো ও আন্তোনিয়ার প্রেমের কথা জানতো দুই পরিবারও। তারা তা স্বীকারও করে নিয়েছিলেন। ফ্রাঙ্কো যেতেন আন্তোনিয়ার বাড়িতে। খুব ভালোভাবেই তাকে আপ্যায়ন করা হত।
সাক্ষাৎকারে ফ্রাঙ্কো বলেছেন, সোনিয়া তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। সোনিয়ার জীবনে রাজীব গান্ধী না এলে হয়তো ফ্রাঙ্কোর সঙ্গেই বিয়ে হত। গোড়ায় ফ্রাঙ্কো ভেবেছিলেন, ফুটফুটে আন্তোনিয়া বোধহয় ছলনা করছেন। কিন্তু আন্তোনিয়াও গভীরভাবে প্রেমে পড়েছিলেন ফ্রাঙ্কোর। ফ্রাঙ্কোর অনুশীলন দেখতে আসতেন আজকের সোনিয়া গান্ধী। টুর্নামেন্ট হয়ে গেলে, খেলা না থাকলে আন্তোনিয়া ও ফ্রাঙ্কো বেড়াতে যেতেন।
ফ্রাঙ্কো বলেছেন, আন্তোনিয়ার প্রথম প্রেমিক ছিলাম আমি। আন্তোনিয়া বিয়ে করতে চেয়েছিলেন ফ্রাঙ্কোকে। ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার জন্য ফ্রাঙ্কোই বিয়ের প্রস্তাব পিছিয়ে দিতেন।
১৯৬৪-তে উচ্চশিক্ষার জন্য ইতালি ছেড়ে সোনিয়া গেলেন ইংল্যান্ডে। সোনিয়া সেই সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেননি ফ্রাঙ্কো। ইংল্যান্ডে যাওয়ার পরও সোনিয়া চিঠি লিখতেন ফ্রাঙ্কোকে।
এক ছুটিতে সোনিয়া যখন ইতালিতে ফেরেন, তখন ফ্রাঙ্কো অনুভব করেন যে, সোনিয়া পুরোদস্তুর বদলে গেছেন। তার জীবনে চলে এসেছেন রাজীব গান্ধী। ফ্রাঙ্কোর সঙ্গে পরে বিয়ে হয় নোরার। নোরা বলছিলেন, তিনি সোনিয়াকে হিংসা করতেন। ফ্রাঙ্কোর বন্ধুরা সোনিয়া সম্পর্কে নানান কথা বলতেন। সব শুনেটুনে নোরার মনে হত, সোনিয়া বোধহয় আবার ফিরে আসবেন ফ্রাঙ্কোর জীবনে। নোরার কাছ থেকে ফ্রাঙ্কোকে কেড়ে নেবেন তিনি।
কিন্তু সে আর হয়নি। সোনিয়া গান্ধী বিয়ে করেন রাজীব গান্ধীকে। ইতালি ছেড়ে স্বামীর দেশেই পাকাপাকিভাবে রয়ে যান সোনিয়া গান্ধী। কিন্তু তাতেও ভাগ্য ফেভার করেনি সোনিয়া গান্ধীর। ১৯৯১ সালের মে মাসে রাজীব গান্ধীকে হত্যা করে শ্রীলঙ্কাভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন লিবারেশন টাইগার অব তামিল ইলমের (এলটিটিই) সদস্যরা।