আপনার এই পোষ্যরা কিন্তু মৃত্যুকে আগাম দেখতে পায়!
কলকাতা টাইমস :
মৃত্যুর আগাম সংবাদ মানুষের আগে নাকি জীবজন্তুরা পায়। কিন্তু এ তথ্য যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনিই ভালো জানেন। তবুও প্যারানর্মালবাদীরা নাকি এ বিষয়ে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন- কেবল বিড়ালই নয়, আরো অনেক প্রাণীই মৃত্যুকে আগাম জানাতে সমর্থ।
প্যারানর্মালবাদীরা ছাড়াও বিভিন্ন দেশের সংস্কারে এ ব্যাপারে বহু বিচিত্র তথ্য সন্নিবিষ্ট রয়েছে। ২০০৭ সালের জুলাই মাসে ইংল্যান্ডের একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হয় মৃত্যু-বিষয় বিড়ালের সংবেদ নিয়ে একটি গবেষণা-নিবন্ধ।
তাতে দেখানো হয়, রোজ আইল্যান্ডে অস্কার নামে একটি বিড়াল কারোর মৃত্যুর সময়ে আশ্চর্য আচরণ করে। একটি হাসপাতালে তাকে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়। সেখানে কোনো রোগীর মৃত্যু আসন্ন হলে বিড়ালটি সেই মৃত্যুপথযাত্রীর বিছানার পাশে গিয়ে বসে থাক।
এভাবে অস্কার ২৫টি মৃত্যুকে আগাম জানিয়ে দেয়। কেবল বিড়াল নয়, আরো অনেক প্রাণীর মৃত্যুকে আগাম জানাতে সমর্থ। দেখা যাক কোন কোন প্রাণী কীভাবে এ কাজটি করে।
• একটি প্রাচীন প্রবাদে জানানো হয়েছিল, পেঁচা গান গাইলে জানতে হবে, কারোর মৃত্যু আসন্ন। পেঁচার একটি বিশেষ ডাককেই এখানে ‘গান’ বলা হয়েছে। ক্যাথলিক সন্ন্যাসীরা পেঁচাকে দীর্ঘকাল ধরে ‘ডেভিলের অ্যাসোসিয়েট’ বলে বর্ণনা করে এসেছেন।
• কালো প্রজাপতি সম্পর্কেও একই রকমের সংস্কার বহু সভ্যতায় বহমান রয়েছে। আসলে এটি এক প্রকার মথ। রাতচরা কালো পতঙ্গকে অনেকেই অশুভ ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করেন। কালো পতঙ্গের অনুষঙ্গে মৃত্যুকে দেখেছেন, এমন কাহিনী ছড়িয়ে রয়েছে ইউরোপের অনেক দশের সাহিত্যেই। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবিস্মরণীয় ছোটগল্প ‘মরণ ভোমরা’য় একটি কালো ভ্রমর ছিল অনিবার্য মৃত্যুর অগ্রদূত।
• বাদুড়কে দক্ষিণ আমেরিকার মায়া ও আজটেক সভ্যতায় মৃত্যুর আগ্রদূত বলে মনে করা হত। বাদুড় খুবই রহস্যময় প্রাণী। ইউরোপের সংস্কৃতিতে তার স্থান পরলোক আর ইহলোকের মাঝামাঝি একটা এলাকায়। বাদুড় নিয়ে মৃত্যু-সংক্রান্ত সংস্কার কম নেই।
• সাদা পেঁচাকে ভারতে মা লক্ষ্মীর বাহন মনে করা হয়। কিন্তু ইউরোপে সে খুব সুবিধের প্রাণী নয়। বাড়ির আশপাশে তার উড়ানকে অনেকেই মৃত্যুর পূর্বাভাস বলে মনে করেন। এ ভাবনার পেছনে কাজ করছে উইচক্রাফ্ট নিয়ে ইউরোপীয়দের দীর্ধকালীন সংস্কার। সাদা পেঁচা উইচদের অ্যাসোসিয়েট হিসেবে প্রসিদ্ধ। উইচদের সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব সেখানে দীর্ঘকালীন। তবে এ ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন জে কে রাওলিং। হ্যারি পটারের অ্যাসোসিয়েট হেডইউগ একটি সাদা পেঁচা। সে কখনোই ‘অশুভ’ নয়।
শাস্ত্র মতে, মৃত্যুর আগে যমরাজ প্রত্যেককে পাঠান ৪টি চিঠি। কীভাবে চিনে নেবেন সেই চিঠিগুলি?
আত্মহত্যাকারীদের আত্মার কী গতি হয়? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
• কালো ঘোড়াকেও মৃত্যুর অগ্রদূত মনে করে ইউরোপ। কোনও শবযাত্রায় কেউ যদি কোনও কালো ঘোড়াকে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখেন, তার ঘাড়ে মৃত্যু নিঃশ্বাস ফেলছে বলে ধরতে হবে।
• পশ্চিমে এমন বিশ্বাসও রয়েছে যে, কোনো মোরগ যদি কোনো মুরগির সঙ্গে ‘কথা বলে, তাহলে নাকি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেখানে কারোর মৃত্যু ঘটবে। তবে এমন ক্ষেত্রে নাকি অবিবাহিতা মেয়েদের মৃত্যুর আশঙ্কাই বেশি থাকে। যদি দু’টি মুরগি একটি মোরগের সঙ্গে গুফতগু করে তাহলে জানতে হবে কোনও দম্পতির মৃত্যু আসন্ন। আর যদি কোনও মুরগি কোনও মোরগের ডাককে নকল করে, তাহলে বুঝতে হবে, সেখানে মৃত্যু ঘোরাফেরা করছে।
• বিড়াল ও আসন্ন মৃত্যুর কথা আগেই বলা হয়েছে। কেবল রোড আইল্যান্ডের অস্কার নয়, বিড়াল মাত্রই মৃত্যুর পূর্বাভাস দেয়। বিড়াল নাকি মৃত্যুর গন্ধ পায়।
• কুকুরের আচরণেও আসন্ন মৃত্যুর প্রভাব পড়ে। তারা এমন কোনো অমঙ্গলের আঁচ পেলে কান্নার সুরে ডাকাডাকি করতে থাকে।
• দিনের বেলায় যদি কোনো বাড়িতে শিয়াল ঢুকে, তবে সেই বাড়িতে কারোর মৃত্যু সুনিশ্চিত বলে বিশ্বাস দেশ-বিদেশে।