হীরের খনি থেকে উঠে এলো এ কোন ভয়ঙ্কর জীব!
কলকাতা টাইমস :
উত্তর রাশিয়ার মিরনিনস্কি জেলার উদাচনি খনিতে শ্রমিকরা কাজ শুরু করেছিলেন আর পাঁচটা দিনের মতোই। কিন্ত খননকার্য কিছুদূর এগনোর পরেই এক বিদঘুটে প্রাণীর দেহের কাঠামো উঠে আসে বালির ভিতর থেকে।
সাইবেরিয়ার একটি হীরের খনি থেকে মাটি খোঁড়ার সময় উঠে এলো এক অদ্ভুত-দর্শন প্রাণীর জীবাশ্ম। উত্তর রাশিয়ার মিরনিনস্কি জেলার উদাচনি খনিতে শ্রমিকরা কাজ শুরু করেছিলেন আর পাঁচটা দিনের মতোই। কিন্ত খননকার্য কিছুদূর এগনোর পরেই এক বিদঘুটে প্রাণীর দেহের কাঠামো উঠে আসে বালির ভিতর থেকে। খবর যায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে। বিশেষজ্ঞরা এসে বুঝতে পারেন, আবিষ্কৃত দেহাংশটি আসলে একটি জীবাশ্ম বা ফসিল।
যে প্রাণীটির জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে তার আকৃতি খূব দীর্ঘ নয়। খুলিটি শক্ত, এবং মুখের ভিতর লম্বা ও শক্তপোক্ত শ্বদন্ত রয়েছে। এই শ্বদন্ত থেকে বোঝা যাচ্ছে প্রাণীটি ছিল মাংসাশী। খনি শ্রমিকরা ভেবেছিলেন এটি বোধহয় আদপে কোনও ছোটখাটো ডাইনোসরের দেহ। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তা নয়। বরং প্রাণীটি হল, আধুনিক উলভেরিন গোত্রের কোনও পূর্বপুরুষ। এই উলভেরিন হল ছোটখাটো ভল্লুক জাতীয়, বড় শ্বদন্ত সম্পন্ন মাংসাশী প্রাণী। মাস্টেলিডা পরিবারভুক্ত ভোঁদড়, বেজি, কিংবা নকুলের মতোই আর একটি মাংসাশী প্রাণী হল উলভেরিন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনওভাবে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এই প্রাণীটি বালি চাপা পড়ে গিয়েছিল, এবং সেই অবস্থাতেই সেটি মমিতে পরিণত হয়। যথেষ্ট ভালভাবেই মমি হয়েছিল সে, কারণ প্রাণীটির গায়ের চামড়া এবং লোম এখনও অক্ষুণ্ণ রয়ে গিয়েছে। এমনকী তার খুলির ভিতরে তার মস্তিস্কের কিছুটাও অবশিষ্ট রয়েছে এখনও।
কিন্তু কতদিন আগে জীবিত ছিল এই প্রাণী? সেই নিয়ে দ্বন্দ্বে বিজ্ঞানীরা। যে অঞ্চলে জীবাশ্মটি মিলেছে সেখানকার বালি মেসোজাইক যুগের, অর্থাৎ প্রায় ২৫ থেকে ২৬ কোটি বছরের পুরনো। এই যুগটি জীববিবর্তনের ইতিহাসে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময়েই সারা পৃথিবীতে সরীসৃপ, স্তন্যপায়ী ও ডাইনোসররা বিস্তারলাভ করে। আবার এই পর্বেরই শেষ দিকে পৃথিবী থেকে অবলুপ্ত হয়ে যায় বেশ কিছু প্রাণীও।
এই নব-আবিষ্কৃত জীবাশ্মটিও কি সেই সময়কার? জীববিজ্ঞানীরা বলছেন, আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার আগে সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। তবে যদি এই প্রাণী মেসোজাইক যুগের বলেই প্রমাণিত হয়, তাহলে সেই যুগের পৃথিবী সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।