এখানে এই চার ধরনের ফেসবুক পোস্ট করলেই আপনি সোজা শ্রীঘরে সঙ্গে লাখ-লাখ জরিমানা
কলকাতা টাইমস :
থাইল্যান্ডের পূর্বে রাজা ছিলেন জাতীয় ঐক্যের প্রতীক আর বর্তমান রাজা বিতর্কিত একজন লোক। বর্তমান শাসক মাহা ভাজিরালোঙ্গকর্ন শুধু বিতর্কিত ব্যক্তিই নন সঙ্গে ভীষণ ভাবে রাজতন্ত্রের পৃষ্টপোষক। আর তাই রাজতন্ত্রের কোন সমালোচনা, আলোচনা তিনি সহ্য করতে পারেন না। সমূলে বিনাশ করেন সমস্ত সমালোচনাকে। আর তাই জনগণের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রেও তিনি চালু করেছেন বেশ কয়েকটি আইন।
যার মধ্যে রয়েছে দেশের নাগরিকরা তার সমালোচনা করে অনলাইন কিছুই লিখতে পারবেন না। কারণ থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্রের সমালোচনা করা নিষিদ্ধ। এই আইন সবসময়ই সক্রিয় ছিল। আর ২০১৪ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় আসার পর দেশের সামরিক সরকার এখন ওই একই আইন ব্যবহার করে সেনা শাসনের বিরোধীদের টুটি চেপে ধরছে।এ পর্যন্ত ৪১৩ নাগরিককে সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।
যে পাঁচ বিষয়ে অনলাইন সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করলে আপনি গ্রেপ্তার হবেন সেগুলো হলো:
১. রাজার কুকুরকে নিয়ে ঠাট্টা করলে : এর শাস্তি, ৫ লাখ বাথ জরিমানা এবং ৮৬ দিন কারাদণ্ড
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে থানাকোর্ন সিরিপাইবুন নামের ২৭ বছর বয়সী কারখানা শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয় সদ্যপ্রয়াত রাজা ভুমিবল আদুলায়েদজ এর কুকুর টোঙ্গদায়েঙ্গ-কে নিয়ে একটি “রম্য” ফেসবুক পোস্ট লেখার কারণে। তিনি লিখেছিলেন, “রাজার মতোই রাজার কুকুরটিও একটি প্রিয় প্রতীক।”
প্রথমে তাকে ৩৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিন্তু থানাকোর্ন এর আইনজীবি তাকে ৫ লাখ বাথ জরিমানার বিনিময়ে দিয়ে ৮৬ দিনের কারাদণ্ড ভোগের পর বের করে নিয়ে আসেত সক্ষম হন।
২. “সমালোচনামূলক” মন্তব্যসহ ফেসবুকে ছবি পোস্ট করাসহ ছয়টি পোস্ট : প্রতিটি পোস্টের জন্য ১০ বছর করে কারাদণ্ড
পোঙ্গসাক শ্রিবুনপেঙ্গকে (৪৮) ২০১৫ সালে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেয় একটি থাই সামরিক আদালত। ২০১৩ সালে তিনি ফেসবুকে সমালোচনামূলক মন্তব্যসহ থাই রাজা ও রানীর চারটি ছবি এবং দুটি কটু মন্তব্যমূলক পোস্ট করেছিলেন। প্রথমে তাকে ছয়টি পোস্টের প্রতিটির জন্য ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরে তার সাজা কমিয়ে অর্ধেক করা হয়। তার করা মন্তব্যগুলোকে সবচেয়ে নির্মম মন্তব্য বলে আখ্যায়িত করা হয়। তবে তিনি ঠিক কী লিখেছিলেন তা জানা যায়নি। তার এক বন্ধু “ছায়ো”কেও প্রথমে ১৮ বছরের এবং পরে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ছায়ো তার সঙ্গে ফেসুবকে চ্যাট করার সময় রাজাকে অপমান করেছিল।
৩. এমন কারো সঙ্গে বিবাহিত হওয়া যিনি অমনোরম ছবি পোস্ট করেন: আটকাদেশ এবং জিজ্ঞাসাবাদ
আরেকটি বিখ্যাত ছবি পোস্টের ঘটনায় স্কটিশ সাংবাদিক অ্যান্ড্রু ম্যাকগ্রেগর মার্শাল এমন কিছু বিতর্কিত ছবি প্রকাশ করেন যা জার্মান গণমাধ্যমেও প্রকাশ করা হয়। ছবিগুলোতে থাই ক্রাউন প্রিন্সকে মিউনিখ বিমান বন্দরে বিশৃঙ্খল অবস্থায় দেখা যায়।
এবং তিনি তার কুকুরটি সম্পর্কেও তামাশামূলক মন্তব্য করেন। এ ঘটনায় ওই সাংবাদিককে না পেয়ে তার স্ত্রী নোপওয়ান বুনলুয়েসিল্পকে থাইল্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ব্যাংকক পরিদর্শনে এসে থাই পুলিশের হাতে আটক হন। তবে গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রচার হলে পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
৪. ম্যাসেজ পাওয়ার পর “ইয়াহ” বলা: আটকাদেশ এবং ৫ লাখ বাথ
প্রকাশ্যে রাজতন্ত্রের সমালোচনা করা অপরাধ। আর এখন ব্যক্তিগত মতামত ধারন করার ফলেও ফৌজদারি অভিযোগ আনা হচ্ছে। এমনকি রাজতন্ত্রবিরোধী কোনো অযাচিত ফেসবুক ম্যাসেজের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানালেও!
থাই অ্যাকটিভস্ট সিরাউইথ সেরিটিওয়াট এর মা পাটনারি চাঙ্কিজ (৪০)-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনি রাজতন্ত্রের সমালোচনামূলক একটি ব্যক্তিগত ম্যাসেজের প্রতিক্রিয়ায় “ইয়াহ” বলেছিলেন। এক শব্দের ওই মন্তব্যে তাকে ব্যাঙ্কক সামরিক আদালত আটকাদেশ দেয়। পরে তাকে ৫ লাখ বাথ জরিমানার বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হয়।