এরকম স্বামী বা স্ত্রীকে পাকড়াও করতে শেষে ‘মিস্ট্রেস হান্টার’ !
কলকাতা টাইমস :
জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতারণায় ক্ষুব্ধ চীনের গৃহবধু এবং স্বামীরা তাদের জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর বিয়ে বহির্ভুত সম্পর্ক হাতে-নাতে পাকড়াও করতে ভাড়া করছেন মিসট্রেস হান্টার বা উপপত্নী শিকারি।
ঝু লাইফেই এমনই একটি উপপত্নী শিকারি ভাড়া দেওয়া ফার্মের প্রধান। ফার্মটির নাম চ্যাংঝু সিনসিয়ার হার্ট ম্যারেজ অ্যান্ড ফ্যামিলি কনসাল্টিং। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন মনোবিজ্ঞানী, আইনজীবি, পরামর্শক এবং রুপচর্চা বিশেষজ্ঞ।
সম্প্রতি স্বামীকে পরকীয়া থেকে ফেরাতে এক মহিলার গায়ে মুরগির রক্ত ছিটিয়ে এবং তার গাড়ি ভেঙ্গেচুরে নকল সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজানো হয়। উদ্দেশ্য ছিল ওই মহিলার স্বামীর মনোযোগ তার দিকে ফেরানো।এই ধরনের একটি প্রকল্প গড়ে ছয়মাস স্থায়ী হয়। এবং এতে খরচ পড়ে ১৫ হাজার ডলার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
এসব প্রকল্পের একটি প্রধান কৌশল হলো, স্বামী বা স্ত্রীর তাদের জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর গোপন প্রেমিক/প্রেমিকার মুখোমুখি হওয়া। এছাড়া অন্য কোনো মহিলা বা পুরুষ ভাড়া করে সঙ্গী বা সঙ্গিনীর ওই গোপন প্রেমিক/প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করিয়ে এবং বিয়ের কথা বলে তাকে দূরে সরিয়ে নেওয়া।
এরকম একটি ঘটনায়, এক স্ত্রী তার স্বামীর পরকীয়া প্রেমিকাকে উচ্চ বেতনের চাকরি দেওয়ার কথা বলে অন্য শহরে চলে যেতে বলেন এবং তার স্বামীর সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে বলেন।
ঝুর সেবা বেশ ব্যায়বহুল। তবে খদ্দেরদের প্রত্যাশা এর ব্যায়ভার শিগগিরই কমে আসবে। যা বিয়ে বিচ্ছেদের খরচের চেয়েও কম হবে। ২০০২ সাল থেকে শুরু করে চীনে বিয়ে বিচ্ছেদের হার তিনগুন বেড়েছে।
তবে প্রাণপণ চেষ্টার পরেও তথাকথিত এই মিসট্রেস হান্টার বা উপপত্নী শিকারীরা সবসময়ই সফল হন না। ঝুর এক চতুর্থাংশ মামলাই ব্যর্থ হয়েছে। উপরোল্লিখিত, শরীরে মুরগির রক্ত ছিটিয়ে গাড়ি দুর্ঘটনার নাটক করে স্বামীকে পরকীয়ায় বাধাদানের চেষ্টাকারী মহিলার স্বামিটি অবশেষে তার পরকীয়া প্রেমিকাকে ত্যাগ করেছেন। একজন পরকীয়া প্রেম “বিভাজন বিশেষজ্ঞ” স্বামীটিকে বোঝান যে শুধু তার টাকার লোভেই তার পরকীয়া প্রেমিকা তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। আর এর মাত্র ১৩ দিন পরেই ওই স্বামী তার পরকীয়া প্রেমিকাকে ত্যাগ করেন।
তবে সমালোচকরা বিতর্ক তুলেছেন, এই ধরনের সেবা নৈতিক ও আইনী দিক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। গুয়াংদং প্রদেশের বিয়ে এবং পরিবার পরামর্শক অ্যাসোসিয়েশন এর পরিচালক লিউ ওয়েইমিন নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেন, শুধু এই ধরনের সেবার মাধ্যমেই একটি পরিবারকে পুণরায় একত্রিত করা সম্ভব নয়। বরং স্বামী এবং স্ত্রীদেরকে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার মাধ্যমেই তাদের সমস্যার সমাধান করতে হবে।
তবে ঝু অবশ্য বিষয়টিকে ভিন্নভাবে দেখেন। আর তিনি জোর দিয়ে বলেন, তার প্রতিষ্ঠান বৈধ এবং আইনসম্মত। তিনি অবশ্য এও স্বীকার করেছেন, “লোকে আমাদের ঘৃনা করেন”। তিনি এ ব্যাপারেও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ যে তিনি “ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করছেন”।