এক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীকে ২ বছরের জন্য জেলে পাঠালো আদালত
নিউজ ডেস্কঃ
প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে এক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিল হায়দরাবাদের স্থানীয় এক আদালত। একইসঙ্গে ওই বিদেশি নাগরিককে সহায়তা করার অভিযোগে এক ভারতীয় নাগরিককেও এক বছরের সাজা দিয়েছে আদালত। সে অর্থে হায়দরাবাদে এই প্রথম কোনো রোহিঙ্গাকে সাজা দেওয়া হল।
বুধবার হায়দরাবাদ শহরের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মিয়ানমারের বাসিন্দা মোহাম্মদ তাহের ওরফে আবু তাহেরকে (৩০) ফরেনারস অ্যাক্ট ও ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় অভিযুক্ত করে এবং দুই বছরের কারাবাসের সাজা ও দশ হাজার ৬০০ টাকার আর্থিক জরিমানা করে। আবু তাহেরকে বিভিন্নভাবে সহায়তার অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক হেমনাথ কুমারকে এক বছরের সাজা ও ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযোগ হেমনাথ কুমারের সহায়তায় স্থানীয় পরিচয়পত্র ও নথি দেখিয়েই আবু তাহের ভারতীয় আধার কার্ড তৈরি করে।
রচাকোন্ডা পুলিশ কমিশনার মহেশ এম ভাগবত জানান, ‘মিয়ানমার থেকে প্রথমে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে আবু তাহের, এরপর ২০১৫ সালে সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতায় আসে সে। কলকাতায় বেশ কিছুদিন থাকার পর সেখান থেকে দিল্লি হয়ে হায়দরাবাদে পৌঁছায় আবু এবং সেখানে কুকাটপল্লী এলাকায় লোধা ভবনে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ শুরু করে। হায়দরাবাদ শহরে থাকার সময়ে আবুর সাথে পরিচয় হয় হেমনাথ কুমারের, কারণ ওই নির্মাণ সংস্থায় সুভারভাইজার হিসাবে কাজ করতেন হেমনাথ। এরপর কুকাটপল্লী থেকে শাহীননগরে চলে যান তাহের। ২০১৬ সালে স্থানীয় তরুণী কাশ্মীরা বেগমের সাথে বিয়ে হয় তাহেরের। বিয়ের পরই ভুয়া পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নথি দেখিয়ে আধার কার্ড বের করে সে।
ইতিমধ্যে অবৈধভাবে এক রোহিঙ্গার বসবাস ও ভুয়া নথি দেখিয়ে ভারতীয় আধার কার্ড তৈরির অভিযোগ পেয়েই আবু তাহেরের সন্ধানে নামে হায়দরাবাদ শহরের পুলিশ। এরপর ২০১৬ সালের মে মাসে আবুকে আটক করা হয়, উদ্ধার করা হয় আবুর ভারতীয় আধার কার্ড ও ড্রাইভিং লাইন্সেস। আবুর সাথেই আটক করা হয় ভারতীয় নাগরিক হেমনাথ’কেও। এরপর দুই জনের বিরুদ্ধেই আদালতে চার্জ গঠন করা হয়।
পুলিশ কমিশনার জানান, ‘গত দুই বছর ধরে প্রতারণা, মানব পাচার, হত্যার চেষ্টা, ছদ্মবেশ ধারন সহ বিভিন্ন ঘটনায় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ১৯টি অপরাধমূলক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে এখনও পর্যন্ত ৩১ জনকে’।