ধর্ম বাঁচাতে প্রতি বছর ৫ হাজার ‘পাকিস্তানি’ ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য
কলকাতা টাইমস :
হিন্দু হলেও এরা পাকিস্তানী। কারণ বাপ্ ঠাকুরদা থেকে শুরু করে এদের জন্মও পাকিস্তানে। পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকে ের সেখানকার বাসিন্দা। পরিসংখ্যান বলছে পাকিস্তানে হিন্দু ছিল ২৩ শতাংশ। যত সময় গড়িয়েছে তা তো বাড়েইনি। উল্টে কমেছে মারাত্মক হারে। ২০১৭ সালে এসে দেখা যাচ্ছে, তা দাঁড়িয়েছে মোটে ৫ শতাংশে। জোর করে ধর্মান্তকরণের জেরেই দলে দলে পাকিস্তান ছাড়ছেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা।
ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ হলেও প্রথম প্রতিশ্রুতি অবশ্য অন্যরকমই ছিল। বলা হয়েছিল, পাকিস্তানে সব ধর্মের মানুষই তাদের ধর্মাচরণের সমান অধিকার পাবেন। অক্ষুণ্ণ থাকবে হিন্দুদের মৌলিক অধিকার। সসম্মানেই সে দেশে থাকতে পারবেন তারা। কিন্তু বাস্তব বলছে সে প্রতিশ্রুতি তো পরে রাখা হয়নি, উল্টো তা উড়িয়েই দেওয়া হয়েছে প্রতি পদে পদে। বেড়েছে জোর করে ধর্মান্তকরণের ঘটনা। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে গত কয়েক দশকে পাকিস্তান ছাড়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা।
ধর্মের চাপ তো আছেই। তার উপর আছে অত্যাচার ও নির্যাতন। পাকিস্তান ছাড়তে বাধ্য করার জন্য সংখ্যালঘু হিন্দু মহিলাদের উপর চলেছে শ্লীলতাহানির মতো ঘটনা। হয় অন্য ধর্ম গ্রহণ, নয় এই নির্যাতনের মুখোমুখি দাঁড়াতে হচ্ছে হিন্দুদের। এমনকী ব্যবসায়ীদের অপহরণ করে বসবাস ওঠানোও আকছারই ঘটছে পাকিস্তানে।
হিন্দুদের ধর্মাচরণ বা গরুকে পুজো করা নিয়ে চলে ঠাট্টা-তামাশা। তাতে হিন্দুদের ধর্মীয় বোধেই আঘাত লাগে। যদিও তা নিয়ে বিন্দুমাত্র হেলদোল নেই সংখ্যাগুরু মুসলমানের। ফলত হিন্দুরা দেশ ছাড়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবং তা এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে পাকিস্তানে হিন্দুদের সংখ্যা কমেছে মারাত্মকভাবে। আগে পাকিস্তানের প্রায় সব জায়গাতেই হিন্দুদের দেখা মিলত। কিন্তু এখন সিন্ধ প্রদেশ ও গুটিকয় জায়গা ছাড়া সে দেশে হিন্দুদের দেখা মেলাই ভার।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, সিন্ধ প্রদেশে প্রতি বছর প্রায় ১০০০ মহিলাকে জোর করে ইসলাম গ্রহণ করানো হয়। প্রতি মাসে প্রায় ২০ জন মহিলা বিশেষত তরুণীরা এর শিকার হন। প্রশাসনের তরফ থেকেও এ ব্যাপারে কোনও সাহায্য করা হয় না। তার উপর আছে শরিয়তি আইনের নামে অত্যাচার ও নির্যাতন। এর জেরে প্রতি বছর প্রায় ৫০০০ জন হিন্দু পাকিস্তান ছেড়ে ভারতেই আশ্রয় নিচ্ছেন।