ভারতে কঠিন, তাই বাংলাদেশে ইসকন মন্দিরে হামলার ছক জেএমবির
বাংলাদেশে ইসকনের যে কোনও মন্দিরে বড়সড় হামলা চালাতে পারে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর মদতে চলা নব্য জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর মতো সংগঠন। গত কয়েক মাসে জোগাড় করা বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ভারতের প্রথম সারির একাধিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
লোন উল্ফ অর্থাৎ সংগঠিত ভাবে নয়, কোনও সংগঠনের সরাসরি নির্দেশ ছাড়াই মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ব্যক্তিবিশেষ এই হামলা চালাতে পারে। সাম্প্রতিক অতীতে লন্ডন, প্যারিস, নিউ ইয়র্কের মতো জায়গায় এ রকমই বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলা হয়। হামলা পরবর্তী সময়ে আইএস তার দায় নিয়েছে বটে, কিন্তু হামলাকারীর সঙ্গে তাদের সাংগঠনিক কোনও সরাসরি যোগাযোগ পাওয়া যায়নি।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাস ধরে আইএসের মতো সংগঠনের বিভিন্ন প্রচার শাখা ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনসাসনেস (ইসকন)-কে ‘হিন্দুত্বের প্রতীক’ হিসাবে প্রচার শুরু করেছে। সম্প্রতি ‘উম্মাহ নিউজ’ নামে আইএসের একটি প্রচার চ্যানেলেও ইসকনকে ‘হিন্দুত্বের প্রতীক’ হিসাবে তুলে ধরে আক্রমণ করা হয়েছে। ভারতীয় গোয়েন্দাদের দাবি, আইএস মনোভাবাপন্ন বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর যে সব নথি তাঁরা পেয়েছেন, তা থেকে স্পষ্ট- ওই সংগঠনের উপর হামলার ছক কষা হয়েছে। এক গোয়েন্দার কথায়, ‘সামগ্রিক ভাবে ইসকন ওদের টার্গেট। এখনও পর্যন্ত পাওয়া বিভিন্ন তথ্য যা ইঙ্গিত দিচ্ছে, তা থেকে আমাদের ধারণা, বাংলাদেশে ইসকনের কোনও মন্দিরে হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’
কেন্দ্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জেএমবি বা নব্য জেএমবি-র মতো সংগঠন পশ্চিম এশিয়ায় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা টাকা সাহায্য পায় জিহাদি কার্যকলাপ চালানোর জন্য। কিন্তু সেই তহবিলের জোগান নির্ভর করে সংগঠনের সাফল্যের উপর। তাই এই মুহূর্তে বড় ধরনের একটি হামলা চালিয়ে শিরোনামে আসতে মরিয়া বাংলাদেশের এই জঙ্গি গোষ্ঠী।’
গোয়েন্দাদের দাবি, যে পদ্ধতিতে ওই জঙ্গি সংগঠনগুলি এগোচ্ছে, তাতে ভারতে ইসকনের কোনও মন্দিরে হামলা চালানো কঠিন। বরং অনেক সহজ বাংলাদেশে আঘাত হানা।
ভারতীয় গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সিলেটে ইসকনের একটি মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছিল। তবে তার সঙ্গে সরাসরি কোনও জঙ্গিগোষ্ঠীর যোগ ছিল না। গোয়েন্দাদের দাবি, লোন উল্ফ অর্থাৎ স্থানীয় কোনও ব্যক্তি বা একাধিক ব্যক্তিকে মতাদর্শগত ভাবে হামলায় মদত দিয়ে এই ‘অপারেশন’ চালানোর পরিকল্পনা হচ্ছে। সংগঠিত ভাবে করলে হামলার আগেই পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একটি অংশ জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাকেও গোটা বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছে।