আজ কোটিপতি , একদিন পাঁচ টাকার জন্য এই তারকা যা করেছিলেন তা বিশ্বাস হবে না
কলকাতা টাইমস :
ভাঙা কুটির থেকে আজ রাজপ্রাসাদের বাসিন্দা গ্রেট খালি। বিশ্ব জুড়েই তাঁর নাম। কিন্তু তাঁর এই অজানা কাহিনি কতজন জানেন?
তাঁর নামই এখন শেষ কথা। অজস্র টাকার মালিক তিনি। অথচ একটা দিন এমন ছিল, যখন টাকার অভাবে তাঁকে গাছ লাগানোর কাজে নামতে হয়েছিল।
ফেলে আসা দিনের কথা খালি লিখেছেন তাঁর আত্মজীবনী ‘দ্য ম্যান হু বিকেম খালি’ বইতে।
সেই বইতেই খালি লিখেছেন, তাঁর বাবাকে উদয়অস্ত পরিশ্রম করতে হত। সামর্থ্য ছিল না তাঁর বাবার। খালির স্কুলের ফি নিয়মিত দেওয়াও সম্ভব হয়ে উঠত না তাঁর বাবার পক্ষে। স্কুলের ফি জমা পড়ত। সেই সঙ্গে খালির উপরে চাপ বাড়াতে থাকতেন স্কুলের শিক্ষকরা। সতীর্থরা খালির অস্বাভাবিক রকমের লম্বা চেহারার জন্য উপহাস করত। স্কুল শিক্ষকদের পড়ানোও বুঝে উঠতে পারতেন না এই নামী কুস্তিগির। সব মিলিয়ে ছোট্ট খালির কাছে পরিস্থিতি হয়ে উঠেছিল দুর্বিষহ। ছেলেবেলার সেই সব দিন কাটিয়ে আজকের খালি হয়ে ওঠার কাহিনি অনুপুঙ্খ ভাবে খালি লিখেছেন তাঁর আত্মজীবনীতে।
বইতে ১৯৭৯-র এক গ্রীষ্মের কথা তুলে ধরেছেন খালি। সেই সময়ে মাঠের সব শস্য শুকিয়ে গিয়েছিল। কানাকড়ি বাড়িতে মজুত ছিল না। দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পরে প্রায় মাসখানেক কেটে গেলেও স্কুলের ফি জমা দিতে পারেননি খালি। প্রধানশিক্ষক নিয়ম করে কথা শোনাতে শুরু করেন খালিকে। একদিন ক্লাসটিচার সবার সামনেই বকাবকি করতে শুরু করে দেন তাঁকে। সহপাঠীরা হাসাহাসি শুরু করে দেয়। তখনই খালি স্থির করে ফেলেন, অনেক হয়েছে আর তিনি স্কুলমুখো হবেন না।
যেমন ভাবনা তেমনই কাজ। স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে খালি একটা কাজের সন্ধান শুরু করেন। পেয়েও যান একটি কাজ। বাড়ি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে গাছ লাগানোর কাজ পান খালি। প্রতিদিন পাঁচ টাকা করে পেতেন এই বিশ্বখ্যাত কুস্তিগির। স্কুলের আড়াই টাকা যেখানে দিতে পারতেন না, সেই জায়গায় পাঁচ টাকা! এ তো স্বর্গ পাওয়া।
রাজি হয়ে যান খালি। কিন্তু তাঁর বাবা প্রথমটায় সেই কাজে সম্মতি দেননি। অনেক বুঝিয়েসুঝিয়ে খালি রাজি করান তাঁর বাবাকে। পরিবারের জন্য তিনি কিছু করতে চান, সেটাই বুঝিয়ে বলেন তাঁর বাবাকে। বাবাও শেষমেশ রাজি হয়ে যান। এভাবেই শুরু হয়েছিল খালির জীবন। আজ তিনি গোটা বিশ্বে সমাদৃত।