যেকোন তর্কে জিততে পারবেন যদি মানেন এই সাত উপায়
এখানে এমন কয়েকটি সফল কৌশল তুলে ধরা হলো, যাতে আপনি বিনীত এবং শিক্ষিত উপায়ে বিতর্কে জিতে আসতে পারবেন।
১. জিততে চেষ্টা করবেন না
কারো ধারণায় আঘাত করলে তাদের মেজাজ পঞ্চমে চড়ে বসে। তারা একবার উত্তেজিত হয়ে পড়লে আর তাদের পাওয়া দায় হয়ে পড়বে।
সুতরাং আপনি যদি প্রতিপক্ষকে তর্কে পরাভুত করতে চান তাহলে জেতার চেষ্টা না করে বরং ‘চরম সম্মতি’ কৌশলটির চর্চা করুন। প্রতিপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করুন এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে এর যৌক্তিক এবং সম্ভবত অর্থহীন উপসংহারের দিকে টেনে নিয়ে যান।
২. সুশীল হন
বিতর্ক কখনোই যৌক্তিক নয়। সুতরাং প্রতিপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গিকে শ্রদ্ধা করুন। তা যতই হাস্যকর শোনাক না কেন।
লোকে যখন কোনো উপায়ে নিজের মূল্য নির্ণয় করতে শেখে তারা তখন এমন তথ্য গ্রহণেও আরো সহনশীল হয় যা তাদের বিদ্যমান বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ করে। এরপর যে আবেগগত সংযোগ স্থাপিত হবে তার মাধ্যমে আপনি যৌক্তিক হয়ে উঠতে পারবেন।
৩. খোলা বা আলোচনা উসকে দেওয়ার মতো প্রশ্ন করুন
আপনি যদি আপনার স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হন তাহলে এমন প্রশ্ন করুন যাতে তারা খোলামেলা আলোচনা উদ্বুদ্ধ হন।
উদারহণত :
১. তোমার কাছে যদি পৃথিবীর সব অর্থ তাকত তাহলে তুমি কীভাবে বদলাতে?
২. আগামী তিন বছরে তুমি তোমার জীবনটাকে কেমন দেখতে চাও?
৩. তুমি তোমার চাকরি কেমন পছন্দ করছ?
খোলা প্রশ্ন করলে প্রতিযোগিতামূলক বিতর্কও অনেক সময় সহযোগিতামূলক হয়ে ওঠে।
৪. আত্মবিশ্বাসী হন
লোকে কখনো কোনো ঘরের সবচেয়ে স্মার্ট লোকটির কথা শোনে না। ২০১৩ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে লোকে বরং এমন কারো কথা শোনেন যিনি ভাব করেন যে ঠিক বিষয়টি কী তা তিনি জানেন।
কারো কথা শোনার আগে লোকে তার ভাবভঙ্গি, লিঙ্গ, বর্ণ বা আত্মবিশ্বাস পরখ করে দেখেন।
৫. দেখান যে মানুষ একমত
লোককে কোনো জিনিস আপনার দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখাতে চাইলে ‘সামাজিক প্রমাণ’ সবচেয়ে সেরা কৌশল। এর মাধ্যমে এমনকি অপরিচিত লোককেও নিজের দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে টেনে নিয়ে আসা যায়।
সামাজিক প্রমাণের কারণে আমরা ধারণা করি যে অন্য লোকে যা করছে তা বিশেষ একটি পরিস্থিতিতে সঠিক আচরণ। যেমন কোনো রেস্টুরেন্টের সামনে লম্বা লাইন দেখে আমরা ধারণা করতে পারি ভেতরের খাবার হয়ত খুবই সুস্বাদু। আর এ কারণেই কোনো তারকাকে দিয়ে প্রচারণা চালানো অতটা কার্যকর একটি বাজারজাতকরন কৌশল।
৬. গ্রাফ ব্যবহার করুন
২০১৪ সালে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, লোকে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস করেন। ফলে বিজ্ঞানসম্মত বলে মনে হয় এমন কিছু করলে লোকে আপানাকে আরো বেশি বিশ্বাসযোগ্য বলে বিবেচনা করবে। যেমন কোনো কিছু বুঝাতে গিয়ে গ্রাফ এঁকে দেখালেন। লোকের মনে বিজ্ঞান এতটাই মর্যাদাপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
৭. শুধু গল্প নয় বাস্তব তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করুন
আপনার আঙ্কেল বা কলেজের রুমমেট কী করে একগাদা মাখন খেল তার বিবরণ শুধু একটি রম্য গল্পের মতোই শোনাবে। কিন্তু আপনি যদি লোকের বিশ্বাস জন্মাতে চান তাহলে আপনাকে বাস্তব তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করতে হবে।
আরো ভালো কোনো বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের চেষ্টা করুন।
বিজ্ঞানীরা প্রায়ই ‘ঐকমত্য’কে চূড়ান্ত বিচারে বিতর্কে জেতার উপায় হিসেবে ব্যবহার করেন। বৈজ্ঞানিক ঐকমত্য মানে হলো, সকল বিজ্ঞানীদের সামষ্টিক মতামত; শুধু যার সঙ্গে বিতর্ক করছেন তার সঙ্গে ঐকমত্য নয়।
একজন বা দুজন হয়ত ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন। কিন্তু যদি বেশির ভাগ বিজ্ঞানীই একমত পোষণ করেন তাহলে তাকে বলা হয় বৈজ্ঞানিক ঐকমত্য। অর্থাৎ বিষয়টির পক্ষে এতো বেশি সাক্ষ্য-প্রমাণ আছে যে সকল বিজ্ঞানী এতে একমত না হয়ে পারেন না।