অপারেশনের আগে স্যালাইনের বদলে ফরমালিন ড্রিপ, দুঃসহ মৃত্যু তরুণীর !
নিউজ ডেস্কঃ
রাশিয়ায় ২৭ বছরবয়সী এক তরুণীর দেহে ভুলবশত স্যালাইনের বদলে ফরমালিন ড্রিপ পুশ করে দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। আর তার ফলে দুদিন ধরে দু:সহ যন্ত্রণা পেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ওই তরুণী। চিকিৎসা ক্ষেত্রে এমন ভয়ানক বিপর্যয় খুব কমই ঘটে। ওই ফরমালিন ড্রিপটি ছিল একটি সলিউশন যা তেরি হয়েছে ফরমাল ডিহাইড থেকে। যা মূলত মৃতদেহের শিরায় পুশ করা হয় যেন সেটি পঁচে না যায়। একতারিনা ফেদায়েভা নামের ও তরুণীর মা হাসপাতালের যারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে তার মেয়েকে খুনের অভিযোগ করেছেন।
রাশিয়ার উলায়নোভস্ক শহরের বাসিন্দা ওই তরুণী তার একটি সাধারণ সার্জারির জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। অপারেশনের আগেই তাঁর দেহে স্যালাইনের বদলে মৃতদেহের পঁচন রোধে পুশ করা হয় এমন একটি ফরমালিন ড্রিপ চালু করে দেওয়া হয়। এরপর দুদিন ধরে দু:সহ যন্ত্রণা এবং খিঁচুনিতে ভুগে কোমায় চলে যান একতারিনা। তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। দুবার তার হার্ট বন্ধও হয়ে যায়। এরপর তাকে রাজধানী মস্কোর একটি নামকরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয়নি। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিকল হয়ে পড়ায় তার মৃত্যু হয়। একতারিনার মা জানান, সার্জারির শেষে যখন তাকে যখন অপারেশন থিয়েটার থেকে ওয়ার্ডে আনা হয় তারপরই তার শরীরে খিঁচুনি শুরু হয়। তার পা গুলো কাঁপছিল। পুরো শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে উঠছিল। আমি তাকে মোজা পরাই। ভারী পোশাক পরিয়ে দিই। এরপর একটি কম্বলও তার গায়ে চাপিয়ে দেই। কিন্তু সে এমনভাবে কাঁপছিল যে তা অবর্ণনীয়।
কিন্তু ওই সময় কোনো ডাক্তার তাকে দেখতে আসেননি। তার পেটে ব্যাথা হচ্ছিল এবং ক্রমাগত বমিও করছিল সে।কিন্তু বুঝতে পারিনি যে তাকে স্যালাইনের বদলে ফরমালিন দেওয়া হয়েছে। আর হাসপাতালের লোকরা জানত যে তারা তার শরীরে বিষাক্ত কিছু পুশ করা হয়েছে। অথচ তারা তাকে বাঁচাতে কিছুই করছিল না, ফরমালিন ভেতর থেকে তার দেহকে খেয়ে ফেলছিল। যারা তার সার্জারি করেছিলো তারা জানত যে তারা কিছু একটা মারাত্মক ভুল করেছে। যার জন্য তাকে বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তারা কিছুই করেনি।
একতারিনা ডাক্তারদের কাছে সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করছিল। কিন্তু তারা তাকে বাড়ি গিয়ে মুরগির স্যুপ রান্না করে খেতে বলল। এবং শান্ত থাকতে বলল। আমি বললাম, দয়া করে তাকে বাঁচান। সে আমার একমাত্র সন্তান। কিন্তু তারা চাইল আমি যেন চলে যাই এবং সবকিছু গোপন রাখি। রাতেই তার অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো। ফরমালিন নিয়েই একতারিনা ১৪ ঘন্টা বেঁচে ছিল। এরপর সে কোমায় চলে যায়। প্রধান মহিলা ডাক্তার একতারিনার মাকে বলেন, চিকিৎসাগত একটি ভুলের কারণে সে কোমায় চলে গেছে। তার হার্ট, ফুসফুস এবং লিভার কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।
সেখান থেকে তাকে প্রথমে আঞ্চলিকি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তাররা তার মাকে বলেন, যে তার দেহে ফরমালিন ড্রিপ পুশ করা হয়েছে। যা মূলত মৃতদেহের ভেতরে পুশ করা হয় পঁচনরোধের জন্য। সেখানে ৫২ ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয় তাকে বাঁচানোর জন্য। এরপর তাকে মস্কোর একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তাকে বাঁচানো যায়নি।