মোদিকে পরামর্শ মনমোহনের, ‘নীরবতা ভেঙে বেশি কথা বলুন’
নিউজ ডেস্ক :
বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে নীরব থাকার জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং’কে সেসময় প্রায়ই নিশানা করতেন গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার দল বিজেপি। কিন্তু সে নীরব মনমোহনই যে তাকে এই এইভাবে কথার খোঁচায় আহত করতে পারেন তা হয়তো তিনি সপ্নেও ভাবেননি। নরেন্দ্র মোদিই এখন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের উন্নাও এবং জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়ায় ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এবার মোদির নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মনমোহন সিং। তিনি বললেন, ‘মোদি যেন তাঁর নিজের দেওয়া উপদেশ মেনে চলেন এবং তিনি যেন আরও বেশি করে কথা বলেন’।
বুধবার সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদিকে নিশানা করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেন, ‘একটা সময় প্রধানমন্ত্রী (মোদি) আমাকে যে পরামর্শ দিয়েছিলেন, আমি মনে করি মোদির উচিত সেই পরামর্শ মেনে চলা এবং আরও বেশি করে এইসব সামাজিক ইস্যুতে তাঁর বক্তব্য রাখা। মিডিয়ার বিভিন্ন রিপোর্টেই আমি জানতে পারি যে, আমার কম বলা নিয়ে মোদিজি আমার খুব সমালোচনা করতেন। আমি মনে করি যে, আমাকে তিনি যে উপদেশটা দিতেন, এবার তাঁর (মোদি) সেই উপদেশটা মেনে চলা উচিত’।
যদিও ধর্ষণের ঘটনায় অবশেষে মোদির নীরবতা ভাঙা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন মনমোহন। দেশজুড়ে প্রতিবাদের পর গত শুক্রবারই নীরবতা ভাঙেন মোদি এবং জানান, ‘ভারতের মেয়েরা ন্যায় বিচার পাবে’।
কাঠুয়ায় নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঠিকমতো সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতি’র সরকারকেও দায়ী করেন মনমোহন সিং। রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে মনমোহনের অভিমত, ‘এই ঘটনায় পিডিপি নেত্রী মেহেবুবা মুফতি সক্রিয় হলে তাদের জোট সরকারের অংশীদার বিজেপি’র ওপর হয়তো প্রভাব পড়তো’। তাঁর অভিমত, ‘জোট সরকারে হয়তো বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাপ থাকে কিন্তু একটি আট বছরের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ ও খুন করে প্রায় এক সপ্তাহ একটি মন্দিদের ভিতর ফেলে রাখার মতো ঘটনাকে উপেক্ষা করার বিষয়টি সত্যিই খুব দুঃখজনক ঘটনা’।
২০১৯ সালে দেশটির সাধারণ নির্বাচনের আগে আইন-শৃঙ্খলা ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দেন মনমোহন সিং। তিনি জানান, ‘দেশের সাধারণ মানুষ সরকারের ক্ষমতাকে অপব্যাবহার করছে, তারা ভাবছেন অপরাধ করেও তারা ছাড় পেয়ে যাবেন…আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি রাজ্যের দায়িত্ব। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আইন-শৃঙ্খলা সুনিশ্চিত করা এবং সংখ্যালঘু, দলিত ও নারীদের সাথে যথাযথভাবে কার্যকর করার লক্ষ্যে রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশ পাঠাতে পারে।’