বাঁচতে চাইলে ভুলেও ট্যাপের জল একদম নয়, না হলে কিন্তু…!
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
সম্প্রতি ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড নিউট্রিশন একজামিনেশন সার্ভেতে একটি তথ্য উঠে এসেছে। তাতে বলা হয়েছে ভারতের পাশাপাশি বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই ট্যাপ ওয়াটারে অতিরিক্ত মাত্রায় সিসা এবং আরও সব ক্ষতিকর উপাদানের খোঁজ পাওয়া গেছে, যা ধীরে ধীরে দাঁতের ক্ষয় তো ঘটাচ্ছেই, সেই সঙ্গে শরীর লেদ বা সিসার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে দেখা দিচ্ছে আরও সব জটিল রোগ। কারণ সিসা এক ধরনের বিষ, যা বেশি মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করলে মারাত্মক ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই আমাদের সারা রাজ্য জুড়ে যে জল সরবরাহ করা, তাতে এমন ধরেনর কোনও বিষাক্ত উপাদান আছে কিনা না জেনে এমন ধরনের জল পান করা উচিত নয়।
প্রসঙ্গত, শরীরে লেদের মাত্রা বাড়ছে যে যে পরিস্থিত মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে সে সম্পর্কে জেনে রাখা একান্ত প্রয়োজন।
লেদ বা সিসা কতটা বিষাক্ত?
গবেষণা বলছে এই পৃথিবীতে যত ধরনের বিষাক্ত উপাদানের খোঁজ আজ পর্যন্ত পাওয়া গেছে, সিসা তাদের মধ্যে একেবারে উপরের দিকে রয়েছে। এর টক্সিসিটি এতটাই বেশি যে নির্দিষ্টি পরিমাণের বেশি শরীরে প্রবেশ করলে দেহে একাধিক অঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এই উপাদানটি থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবে। আর এখন যখন জানতে পারা যাচ্ছে যে পানীয় জলে সিসা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, তাহলে আরও বেশি করে সাবধান হতে হবে কিন্তু!
শরীরে লেদের মাত্রা বাড়তে থাকলে কী কী লক্ষণ দেখা দেয়:
এক্ষেত্রে সাধারণত যে যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পায়, সেগুলি হল-তলপেটে যন্ত্রণা, তলপেটে বারে বারে ক্র্যাম্প লাগা, স্বভাব খিটখিটে হয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়, ঘুম ঠিক মতো না হওয়া, মাথা যন্ত্রণা, বাচ্চাদের গ্রোথ আটকে যাওয়া, ক্ষিদে কমে যাওয়া, অসম্ভব ক্লান্তি, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি কমতে থাকা, রক্তাল্পতা এবং কিডনির কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া প্রভৃতি।
প্রসঙ্গত, কোনও বাচ্চার শরীরে যদি সিসার মাত্রা বাড়তে থাকে, তাহলে উপরিক্ত লক্ষণগুলির পাশাপাশি আরও কিছু সিম্পটমসের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। যেমন- স্বভাবে পরিবর্তন বা বিহেবিরাল প্রবলেম, বুদ্ধি কমে যাওয়া, শ্রবণশক্তি কমতে থাকা, শারীরিক বৃদ্ধি আটকে যাওয়া ইত্য়াদি।
শরীরে লেদের পরিমাণ অনেক মাত্রায় বেড়ে গেলে কী কী হতে পারে?
সাধারণত দেহে হঠাৎ করে লেদের পরিমাণ বেড়ে যায় না। ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে যখন বিপদ সীমায় পৌঁছায়, তখনই বিপদ! কারণ রোগী যদি শরীরিক দিক থেকে শক্তপোক্ত না হয়, তাহলে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন পরতে পারে। তাহলে এখন প্রশ্ন হল কী কী লক্ষণ দেখা গেলে সময় নষ্ট না করে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত? এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে এইসব লক্ষণগুলি প্রকাশ পাচ্ছে কিনা। যেমন- মারাত্মক পেটে যন্ত্রণা, বারে বারে বমি হতে থাকা, হাত-পায়ে অসারতা, জ্ঞান হারিয়ে ফেলা প্রভৃতি।
লেদের কারণে যে বিষক্রিয়া হয়েছে কিনা তা বোঝা যায় কিভাবে?
এক্ষেত্রে প্রথমেই রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয়। কারণ শরীরে লেদের উপস্থিতি রক্তের নমুনা থেকেই মূলত জানতে পারা যায়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষার পর যদি দেখা যায় রক্তে শিসার পরিমাণ ৫ মাইক্রোগ্রাম/ডেসিলিটার, তাহলে কিন্তু চিন্তার বিষয়। যদিও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এনভারোমেন্টাল হেল্থ সায়েন্সের রিপোর্ট অনুসারে শরীরে লেশমাত্র লেদও ক্ষতিকারক। তাই এই বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়া মানে কিন্তু বেজায় বিপদ!
চিকিৎসা:
এক্ষেত্রে প্রথমেই চিকিৎসকের জানার চেষ্টা করেন শরীরে কোথা থেকে লেদের প্রবেশ ঘটছে। শিসার সোর্স সম্পর্কে জানার পর তা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে এমন কিছু ওষুধ দেওয়া হয় যাতে প্রস্রাবের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এমনটা হলে শরীরে জমে থাকা লেদ ধীরে ধীরে ইউরিনের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে শুরু করে। অনেক সময় এক্ষেত্রে অ্যাকটিভেটেড চারকোল ব্যবহার করেও চিকিৎসা করা হয়ে থাকে।