‘মিনি লাভ স্টোরি’! না না, আসলে ….
এগুলো সবই ছোট ছোট প্রেমের গল্প। ঠিক গল্প নয়, সবই জীবনের সত্য ঘটনা, আধুনিক জীবনের প্রেম। নিউ ইয়র্ক টাইমস পাঠকদের কাছ থেকে ১০০ শব্দের ‘লাভ স্টোরি’ সংগ্রহ করে। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাদের কাছে জমা হয় অল্প কথার অপূর্ব সব গল্প, ভালোবাসার গল্প। সবাই তাদের জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর বয়ান করেন সেখানে। এখানে তেমনই কয়েকটি ভালোবাসার খুদে গল্প তুলে ধরা হলো।
গোটা জীবনের সুখ
একটা বিয়ের পরের ঘটনা। সেখানে আমাদের পুত্রধনই সেরা ব্যক্তিত্ব ছিল। স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে সাবওয়ে ধরে হাঁটছি। হঠাৎই এক তরুণকে দেখতে পেলাম। সে প্লাটফর্মে থাকা এক প্রেমিক জুটির সঙ্গে কথা বলেই যাচ্ছে। সে চিৎকার করে বলছে, ‘তাকে (মেয়েটাকে) প্রপোজ করো! এখোনি! তুমি না করলে কেউ না কেউ ঠিকই করবে’। সে আমার দিকে তাকিয়ে জোরকণ্ঠে বললো, ‘মেয়েটাকে তার (ছেলে) প্রপোজ করা উচিত, ঠিক না?’ আমি তার কথা সাঁয় দেয়ার পর সে জুটিকে উদ্দেশ করে বললো, ‘দেখেছো, এই বয়স্ক ভদ্রলোকও আমার সাথে একমত’। পরে অবশ্য সে আমাকে বলে, ‘আশা করছি আমি আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলে দেইনি। আমি চেয়েছি তারা সেই জিনিসটিই পাক যা তোমরা পেয়েছো- গোটা জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য।’ (ড্যান ব্রডি)
একটা বাড়ি বনাম একটা ঘর
ঘরটা এখন একাই খুঁজে বেড়ান তিনি
কাজ শেষে সোজা বাড়ি যেতে মন চায় না। আমি তার পছন্দের কাজটি করার সিদ্ধান্ত নিই- হারিয়ে যাওয়া আর বাড়ি-ঘরের সন্ধান করা। বিভিন্ন পথে আমি গাড়ি চালিয়ে যাই। পথে ছোট-বড় নানা বাড়ি দেখি আর ভাবি, এদের ভেতরে আমাদের জীবনটা কেমন হবে। শহরের কোনো বাড়ি, যেখানে আমরা প্যাটি বানাবো আর কলেজ ফুটবল দেখবো। অথবা খামারবাড়ি টাইপের কিছু, যেখানে আমাদের সন্তানের প্রথম জন্মবার্ষিকী পালন করবো। আমি আসলে ঘরের সন্ধান করছিলাম। আর এখন আমি তা একাই খুঁজে বেড়াই। (খোলে প্যাটারসন)
সে হাত রাখার জন্য আমার মাথাটাকে ব্যবহার করে
রোয়ান রেমুন্ডোর মাথাটা সঙ্গীর হাত রাখার কাজেই ব্যবহৃত হয়
তার উচ্চতা ৬ ফিট ৫ ইঞ্চি। স্টেফ কারির চেয়েও লম্বা। আর আমি পাঁচটা সাবওয়ে স্যান্ডউইচকে এক করলে যতটা ততটাই লম্বা। আমি আসলে আমার চেয়ে লম্বা ছেলের সাথেই প্রেম করতে চাই। তবে তা সব সময় মনে পুষে রাখতাম না। তার সাথে আমার অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। তাকে ধরতে গেলের আমার কিন্ডারগার্টের স্মৃতি মনে পড়ে। আমার মায়ের স্কার্ট ধরতে আমাকে যত উঁচুতে সম্ভব হাতে তুলতে হতো। হ্যাঁ, সে ওই ধরনের পুরুষ যার পেছনে বসে আমি কনসার্ট বা মুভি দেখার কাজটিকে মোটেও পছন্দ করবো না। তবে এটা সৌভাগ্য যে, সে আমার সামনে নয়, পাশে থাকার সিদ্ধান্তই নিয়েছে। (রোয়ান রেমুন্ডো)
টিমোথি আমার জন্যে অপেক্ষা করছে
টিমোথির অপেক্ষা
অ্যারিজোনায় বাবা-মায়ের কাছে গেলেই আমি আমার ছেলেবেলার রুমটি ব্যবহার করি। কুকুরগুলো আমাকে দেখলেই আপ্লুত হয়ে ওঠে। একবার ওখানে যাওয়ার পর বিকেলের এক ফ্লাইটেই নিই ইয়র্ক ফেরার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি আমার জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে সবাইকে বিদায় জানালাম। বিমানবন্দরের সিকিউরিটি লাইনে দাঁড়িয়ে আমি মায়ের পাঠানো একটা মেসেজ খুললাম। মা একটা ছবি পাঠিয়েছে। আমাদের বাড়ির ছোট্ট চিহুয়াহুয়া (কুকুর) আমার বিছানায় অপেক্ষা করছে। আমি কেঁদে ফেললাম। মনে হচ্ছে টিমোথি (কুকুর) যে কিনা আমার সঙ্গে পুরোটা সময় কাটিয়েছে, তাকে বলা হয়নি যে আমি চলে এসেছি। (এলিজাবেথ হার্নান্দেজ)
চোখের জ্যোতি অত্যাবশ্যক নয়
এক ছুটিতে জন আর জেনিফার
পনেরো বছর আগে অনলাইনে কারো সাথে পরিচয় ঘটা মানে নিজের বিষয়ে নানা তথ্য শেয়ার করা। আমার আর জনের মধ্যে এগুলো তাৎক্ষণিকভাবে ঘটতে থাকলো। নিরেট কৌতুক আর চুটকি মিশিয়ে কথা বলা চলতে থাকলো। তিন সপ্তাহ এভাবে মেসেজ চালাচালির পর আমার মধ্যে আগ্রহের চেয়েও বেশি কিছু তৈরি হয়েছে বুঝতে পারলাম। ছেলেটা খুব মজার, বুদ্ধিমান, সফল এবং দয়াবান হৃদয়ের ছিল। পরে জানতে পারলাম তার চোখে ত্রুটি রয়েছে। কাজেই ভবিষ্যতে তার অন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমি আমার ল্যাপটপ বন্ধ করে ভাববার জন্যে ২৪ ঘণ্টা সময় নিলাম। কিন্তু আমার সময় লাগলো দুই ঘণ্টা। অন্ধত্ব তার পছন্দ করে বেছে নেয়া বিষয় নয়। কাজেই আমার জন্যে তা কেন হবে? হৃদয় কথা বললো- দৃষ্টি আসলে অত্যাবশ্যক নয়।