সাবধান : করোনার পরও পৃথিবী কাঁপাতে ফিরে আসছে এই পুরনো মারাত্মক রোগগুলি
বর্তমানে গোটা বিশ্ব করোনার দাপটে ধরাশায়ী। কিন্তু জানেন কি এমন কিছু পুরোনো রোগও আছে যা করোনাকে পেছনে ফেলে দিতে পারে। এর থেকেও মারাত্মক কথা হল আবারো ফিরে আসছে পুরনো কিছু রোগ-বালাই। করোনা নাকি কিছুই নয় এই রোগগুলির কাছে। এই বিষয়ে নানা পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
১. প্লেগ : মধ্য যুগে এক মারাত্মক খুনী ছিল রোগটি। এক সময় হারিয়ে যায় রোগের বালাই। কিন্তু বিগত বছর আমরিকায় ১৬ জন প্লেগে আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু ঘটে। ইয়েরসিনিয়া পেস্টিস ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত বীবর থেকে প্লেগ ছড়ায়। অথবা এই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত যেকোনো প্রাণী বা মাছি থেকে প্লেগ ছড়াতে পারে।
এখন প্লেগ একটি বিরল রোগ। মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানোর কোনো সম্ভবনাই প্রায় নেই। বিশেষ করে বনের ইঁদুর, বীবর ইত্যাদি প্রাণীর স্পর্শ থেকে দূরে থাকবেন।
২. মাম্পস : এক সময় শিশু এবং তরুণদের মধ্যে প্রায়ই মাম্পস দেখা যেতো। ১৯৬৭ সালে ভ্যাক্সিনেশনের পর মাম্পস ৯৯ শতাংশ দূর হয়েছে। তবে ২০১৫ সালে আমেরিকায় ৬৮৮ জন মাম্পস-এ আক্রন্তের সন্ধান মেলে। কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাস, কথা বলা এবং খাবার শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে এ রোগের ভাইরাস ছড়াতে পারে।
এ রোগ থেকে দূরে থাকার একমাত্র উপায় মিসলেস-মাম্পস-রুবেলা ভ্যাক্সিন নেওয়া। এটি শিশুদের দেওয়া হলেও যে কেউ চাইলে নিতে পারেন।
৩. মিসলেস : মাম্পসের মতোই এক সময় মিসলেস ছড়িয়ে পড়ে। এক সময় আমেরিকার প্রতিটি শিশুই ১৫-তে পা দিলে এ রোগে আক্রান্ত হতো। ১৯৬০-এর দশকে ভ্যাক্সিন নেওয়ার পর ২০০০ সালে আমেরিকা থেকে মিসলেস দূর হয়। কিন্তু ২০১৪ সালে এ রোগে ৬৬৭ জনকে আক্রান্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ২০১৫ সালে আরো ১৮৯ জন আক্রান্ত হন। কাশি ও সর্দির মাধ্যমে এ রোগের ভাইরাস ছড়ায়।
এ রোগের আসলে কোনো চিকিৎসা নেই। ভ্যাক্সিন নিলে প্রতিরোধ করা সম্ভব। মিসলেস, মাম্পস এবং রুবেলার দুটো ডোজ ভ্যাক্সিন নিলে ৯৭ ভাগ সফলতার সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।
৪. টিউবারকুলোসিস : ১৮৮২ সালে মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কৃত হয়। আমেরিকা এবং ইউরোপের প্রতি ৭ জন মানুষের একজন এ ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তবে অ্যান্টিবায়োটিক জাদুর মতো মৃত্যুহার কমিয়ে আনে। ব্যাকটেরিয়াটি এখনো আছে। প্রতিবছর গোটা দুনিয়ায় প্রতি ৩০ লাখ মানুষের মধ্যে ২ জন মারা যান এর কারণে। ২০১৪ সালে আমেরিকায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৪২১ জন।
আক্রান্ত মানুষের কাশি, সর্দি এবং কথা বলার মাধ্যমে রোগ ছড়াতে পারে। তবে স্পর্শ বা খাবার ভাগাভাগির মাধ্যমে এটি ছড়ায় না। চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। আবার ৬-১২ মাস ধরে অ্যান্টিবায়োটিক নেওয়ার মাধ্যমে নিরাপদ থাকা যায়।
৫. স্কারলেট ফিভার : কয়েক শত বছর ধরে এই জ্বরের কথা প্রায় ভুলে গেছে মানুষ। স্ট্রেপটোককাস ব্যাকটেরিয়া এ রোগের কারণ। কিন্তু এশিয়ায় কয়েক বছর ধরে এ রোগে আক্রান্তদের শনাক্ত করেছেন গবেষকরা। হং কংয়ে গত ৫ বছরে ৫ হাজার এবং চীনে ১০ হাজার মানুষ স্কারলেট ফিভারে আক্রান্ত হয়েছেন।
স্কারলেট ফিভার সাধারণত ৫-১২ বছর বয়সী শিশুদের হয়। অ্যান্টিবায়োটিক দ্বারা রোগ নিরাময় সম্ভব। অন্যান্য ওষুধের প্রয়োগে চিকিৎসা সম্ভব নয়। এশিয়া নতুনভাবে এ রোগের প্রাদুর্ভাব তাই চিন্তিত করে তুলেছে বিজ্ঞানীদের।