তিনটির একটি, দুধ যখন ‘সাদা বিষ’
কলকাতা টাইমস :
দুধ হলো সুষম খাদ্য। এর মধ্যে রয়েছে ৬টি ভিটামিন। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এই দুধকে এবার সাদা বিষের তালিকায় ফেলতে চাইছেন । আমাদের খাদ্যতালিকায় তিনটি ‘সাদা বিষ’ থাকার কথা পুষ্টিবিজ্ঞানীরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছে। এগুলো হলো- লবণ, পরিশোধিত চিনি এবং ময়দা। এ তালিকায় চতুর্থ বিষ হিসেবে অতি পুষ্টিকর দুধের নাম যোগ করতে চান বিজ্ঞানীরা। তবে খাঁটি দুধ নয়, এতে নানা ধরনের উপাদান মিশিয়ে যে দুধ বাজারে ছাড়া হয়, সেই দুধটি নিঃসন্দেহে সাদা বিষের তালিকায় চলে আসে।
বিজ্ঞানীরা জানান, খাদ্যপণ্যে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে আমরা নানা উপাদান মিশিয়ে থাকি। একইভাবে দুধেও ভেজাল করতে উপকরণ মেশানো হয়। কিন্তু কি মেশানো হচ্ছে বা এটি মেশালে দুধ কতটা ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে সে সম্পর্কে ভেজালকারীর কোনো ধারণা নেই। ক্রেতা প্রাথমিক অবস্থায় এই ভেজাল শনাক্ত করতে পারেন না।
দুধের ভেজাল করা হলে তার স্বাদ নানাভাবে বদলে যায়। বাণিজ্যিকভাবে দুধে ভেজালের সময় বড় আকারের পাত্রে তা ফোটানো হয়। এ প্রক্রিয়ায় দুধের ক্রিমের পরিমাণ কমিয়ে ফেলা হয়। ক্রেতা যেন বুঝতে না পারে সে জন্যে এতে পানি মেশানো হয়। এর স্বাদ, ঘনত্ব এবং সান্দ্রতা বজায় রাখতে আরো মেশানো হয় ফরমালিন, ইউরিয়া, স্টার্চ, নিউট্রালাইজার (সোডিয়াম বাই কার্বনেট, সোডিয়াম কার্বনেট, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড), ডিটারজেন্ট, সোডিয়াম ক্লোরাইড, স্কিম মিল্ক পাউডার, সুক্রোজ, গ্লুকোজ/ডেক্সট্রোজ এবং হাইড্রোজেন পার অক্সাইড। অনেক সময় এসব উপাদানকে সলিড নন-ফ্যাটস (এসএসএফ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পানি মেশানো দুধ থেকে হারিয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক ফ্যাটের বিকল্প হিসেবে এসব উপাদানের সহায়তা নিতে হয়।
বিশ্বের অন্যতম দুধ উৎপাদনকারী দেশের একটি ভারত। সে দেশের ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথোরিটি অব ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই) জানায়, এখানকার বাজারজাত অধিকাংশ দুধই ভেজাল মিশ্রিত। ডিটারজেন্ট মিশ্রিত দুধ স্বাস্থ্যের জন্যে মারাত্মক ক্ষতিকর। বাজারের ৮ শতাংশ দুধে ডিটারজেন্ট পাওয়া গেছে। অন্যান্য বহুল ব্যবহৃত ভেজাল করার উপাদান হলো ইউরিয়া, স্টার্চ, গ্লুকোজ এবং ফর্মালিন। বাজার থেকে ১৭৯১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ জানায়, এ ধরনের উপাদান দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গে ক্ষতিসাধন করতে পারে। ক্যান্সার থেকে শুরু করে মৃত্যুর কারণ হতে পারে দুধ। কাজেই দুধ পুষ্টিকর খাদ্য। কিন্তু এতে ভেজার মিশ্রিত থাকলে তা নিঃসন্দেহে সাদা বিষ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।