পুরুষ সেজে বাবার ধার শোধের মরিয়া চেষ্টা সিতারার !
নিউজ ডেস্কঃ
পাঁচবোন, নেই একটিও ভাই। তাই আঞ্চলিক প্রথা মেনে পুরুষ সেজে থাকতে হয় আফগানিস্তানের সিতারা ওয়াফাদারকে। পুরুষদের মতো পোশাক পরা তো আছেই, পুরুষদের রীতিও মেনে চলতে হয় কিশোরী সিতারাকে। একা সিতারা নয়, পুত্রহীন অনেক দম্পতির সন্তানকেই এভাবেই জীবন কাটাতে হয়।
পূর্ব আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে এই প্রথার নাম ‘বাচাপোসি’। ১৮ বছর বয়স সিতারার। পূর্ব আফগানিস্তানের নানগড়হার এলাকায় একটি দরিদ্র পরিবারে থাকেন তিনি। বাড়ির পুরুষ সদস্যের মতোই কায়িক পরিশ্রম করে রোজগার করতে হয় তাকে। ভোর হলেই পুরুষদের মতো পোশাক পরে বাবার সঙ্গে একটি ইঁটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতে যান সিতারা। এমনকী লোকজনের সঙ্গে কথা বলার সময়েও ইচ্ছাকৃতভাবে কণ্ঠস্বর মোটা করে নেন।
সিতারা জানান, ‘আমি যে মেয়ে, সেটা আমি নিজেই বিশ্বাস করতে ভুলে গিয়েছি। যে ইঁটভাটায় আমি কাজ করি, সেখানে বেতন পাই না। ইঁটভাটার মালিকের কাছ থেকে আমার বাবা একসময় টাকা ধার করেছিল। সেটা এখানে খেটে শোধ করতে হয়।’ সিতারার বাবাও সব জায়গায় তাকে নিজের ছেলে হিসেবেই পরিচয় দেন। পুরুষদের ধর্মীয় আচার আচরণও মেনে চলেন তিনি।
সিতারা বলেন, ‘বাড়ির বাইরে যখন বের হই, প্রায় কেউই বুঝতে পারেন না যে আমি পুরুষ নই। যেদিন সেটা লোকে বুঝতে পারবে, সেদিন থেকে আমার জীবনে অনেক সমস্যা তৈরি হবে। আমাকে ধর্ষণ বা অপহরণ করা হতে পারে। সেই ভয় হয়তো আমাকে কাজ করা বন্ধ করে দিতে হবে। আট বছর বয়স থেকে এখানে কাজ করছি। স্কুলে যাওয়া বা খেলাধুলো করার সুযোগ আমি পাইনি।’ প্রতিদিন ৫০০ ইঁট বানানোর চেষ্টা করেন সিতারা। লক্ষ্যপূরণ করতে পারলে ১৬০ আফগানি শোধ করা হয়েছে বলে ধরা হয়। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে এই হাড়ভাঙা খাটুনি। সিতারার বাবার ঋণের পরিমাণটা নেহাত কম নয়, ২৫ হাজার আফগানি।