এই যুবক শাড়ি পরেন, কারণ লুকিয়ে সৌভাগ্যে !
তিনি রূপান্তরকামী নন। ক্রস ড্রেসিংএর পক্ষপাতীও নন। কিন্তু ৩৪ বছর বয়সী এই যুবক পছন্দ করেন শাড়ি পরতে। মহিলাদের পোশাক হিসেবে ফ্যাশনে চমক দিতে নয়। তিনি মনে করেন শাড়ি হল আদ্যন্ত ভারতীয় পুরুষের পোশাক। পুরুষের পোশাক হিসেবেই শাড়ি পরেন তিনি। মনে করেন‚ শাড়ি পরার সৌভাগ্য থেকে পুরুষদের বঞ্চিত হওয়ার কোনও অর্থ নেই।
তিনি হিমাংশু বর্মা। পেশায় শিল্প সংগ্রাহক এবং শিল্পবোদ্ধা। কাজের জন্যই শাড়ি নিয়ে গবেষণা করছিলেন। ক্রমশ শাড়িই হয়ে ওঠে তাঁর ধ্যানজ্ঞান। হিমাংশু মনে করেন‚ শাড়িতে যদি পৌরুষ প্রতীয়মান না হয় তাহলে ভারতবর্ষে অতীতে কোনও পুরুষই পুরুষ ছিলেন না। কারণ মুসলিম অভিযান এবং ব্রিটিশ উপনিবেশ হওয়ার আগে অবধি বারো হাতের শাড়িই ছিল প্রধান ভারতীয় পোশাক। স্ত্রী পুরুষ নির্বিশেষে।
ধুতিকে শাড়ির অপভ্রংশ হিসেবেই দেখতে চান হিমাংশু। তাঁর বক্তব্য হল‚ বেনারসি থেকে বালুচরি। বা জারদৌসি থেকে মসলিন। এই সব ধরনের শাড়ি ভারতীয় অভিজাত পুরুষের অঙ্গে উঠেছে অতীতে। হয়তো মহিলারা যেভাবে দেহে জড়িয়েছেন‚ পুরুষদের ক্ষেত্রে সেটার ধরন বদলে গেছে। ভারতের এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে পাল্টে গেছে কায়দা। কিন্তু আদপে পোশাকটা তো শাড়িই থেকে গেছে।
হিমাংশু মনেপ্রাণে শাড়ির জয়গান গেয়ে যান। প্রচার করেন। প্রথম সাক্ষাতে অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে আলাপকালে বলেন ‘ জয় শাড়ি !’ হ্যান্ডলুম থেকে মহার্ঘ্য ! হিমাংশুর সংগ্রহে আছে হরেক কিসিমের শাড়ি। প্রতি বছর তাঁর শাড়ির প্রদর্শনী নিয়ে শিল্পমহলের আকর্ষণ থাকে তুঙ্গে।
মাঝে স্বাদ বদলাতে হিমাংশু কুর্তা পায়জামাও পরেন। কিন্তু সঙ্গে অবশ্যই থাকে শাড়ি। এমনকী‚ ট্রাউজার্সের সঙ্গেও পরেন শাড়ি। আবার পিঠ উন্মুক্ত গভীর কাটের ব্লাউজের সঙ্গেও অঙ্গে জড়ান শাড়ি। শুধু নজর টানতে বাইরেই নয়। বাড়িতেও হিমাংশুর পরনে থাকে সেই আদি অকৃত্রিম শাড়ি।
লোকে কী বলল‚ পাত্তা দেন না হিমাংশু। কারণ তিনি তো আর কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শাড়ি পরেন না। পরেন‚ তাঁর ভাল লাগে বলে। যেমন লাগত অতীত ভারতের রাজবংশীয় এবং অভিজাত পুরুষদের।