লজ্জাজনক : ১৪ কোটি মেয়ে নিঁখোজেও ভারত-চীন টক্কর
কলকাতা টাইমস :
বর্তমানে সীমান্তে একে -অপরের সঙ্গে ভিড়তে প্রস্তুত ভারত-চীন। দু’দেশেই চলছে একে-অপরের সঙ্গে নানা জিনিস ব্যান করার প্রতিযোগিতা। কিন্তু তাই বলেও দেশের কন্যা সন্তান নিখোঁজের মত লজ্জাজনক বিষয়েও দু’দেশে দেখা দেবে প্রতিযোগিতা তা যেন মেনে নেওয়া যায় না। গত পাঁচ দশকে বিশ্বজুড়ে নিখোঁজ হয়েছে অন্তত ১৪ কোটি ২৬ লাখ মেয়ে। এই সময়ের মধ্যে মেয়েদের নিখোঁজ হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। মঙ্গলবার জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ ভয়াবহ তথ্য।
ইউএনএফপিএ’র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭০ পর্যন্ত মেয়েদের নিখোঁজ হওয়ার সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ১০ লাখ, ২০২০ সালে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ২৬ লাখেরও বেশি।
তাদের হিসাবে, সবচেয়ে বেশি মেয়ে নিখোঁজ হয় চীনে। গত ৫০ বছরে দেশটিতে হারিয়ে গেছে অন্তত ৭ কোটি ৩০ লাখ মেয়ে। এর পরেই রয়েছে ভারত। সেখানে নিখোঁজ মেয়েদের সংখ্যা ৪ কোটি ৫৮ লাখ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ভারতে গড়ে ৪ লাখ ৬০ হাজার মেয়ে জন্মের পরপরই নিখোঁজ হয়েছে। এর মধ্যে তিন ভাগের দুইভাগ ঘটনাতেই দায়ী করা হয়েছে পারিবারিক লিঙ্গবৈষম্যকে। কন্যাসন্তান না চাওয়ার কারণের অনেকে নিখোঁজ হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
চীনের পরিসংখ্যানও প্রায় একই। পৃথিবীর মোট কন্যাসন্তান মৃত্যুর মধ্যে ৯৫ শতাংশই ঘটছে এই দুই দেশে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রতি এক হাজার কন্যাশিশুর মধ্যে জন্মের পরপরই ১৩.৫ জন শিশু মারা যায় বা নিখোঁজ হয়। পাঁচ বছরের কম বয়সী কন্যাশিশু মারা যায় প্রতি নয়জনের মধ্যে একজন। কারণ একটাই, তারা মেয়ে। বলা বাহুল্য, মেয়েশিশুদের এই মৃত্যু বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাগুলো হত্যা ছাড়া আর কিছু নয়।
শুধু হত্যা বা নিখোঁজই নয়, সংস্থাটির এ প্রতিবেদনে সারা বিশ্বে মেয়েদের ওপর চলা ভয়ানক লিঙ্গভিত্তিক অত্যাচারের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, মেয়েদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন তো রয়েছেই, পাশাপাশি বিশ্বের নানা প্রান্তে চলছে ব্রেস্ট আয়রনিং থেকে জেনিটাল মিউটিলেশনের মতো ঘৃণ্য সব প্রথা। এই বছরেও ৪১ লাখ কিশোরীর যোনির ক্লিটোরিস কেটে দেওয়ার প্রথা চলছে বিশ্বে। এতে অকালে প্রাণ হারাতে হচ্ছে অসংখ্য মেয়েকে।