নকল যুদ্ধ জিততে বাবা-মাকে ফতুর করে শেষে স্কুটার সারাইয়ের দোকানে ছেলে
কলকাতা টাইমস :
ভার্চুয়াল বা নকল বন্দুক-গুলি বলাই ভালো। তা কেনার জন্য লাখ-লাখ টাকা জলাঞ্জলি দিলো ছেলে। তিনি পাবজি খেলোয়াড়। ভার্চুয়াল যুদ্ধের সময় তার প্রয়োজন অনেক বন্দুক, গোলাবারুদ সহ একাধিক যুদ্ধ সরঞ্জাম। অগত্যা ভরসা বাবার ব্যাংক ব্যালেন্স। ভার্চুয়াল গোলাবারুদ কিনে বাবার অ্রাকাউন্ট ফাঁকা করে ফেলেছে ১৭ বছরের ওই কিশোর। টাকার অঙ্ক শুনে আঁতকে উঠছে সকলে, ১৬ লাখ টাকা। এই টাকা চিকিৎসা ও ছেলের উচ্চ শিক্ষার জন্য সঞ্চয় করা হয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পাঞ্জাবে।
ছেলের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বাবা-মা অবগত ছিলেন না। কারণ লকডাউনের সময় তাদের ছেলে অনলাইনে পড়াশোনার জন্য স্মার্টফোনটি ব্যবহার করছিল। কাজেই অনলাইনে লেনদেন করা ছেলেটির পক্ষে সহজ হয়ে ওঠে। স্মার্টফোনে ছিল তার বাবার ব্যাংকের বিবরণ এবং কার্ডের বিশদ তথ্য। বাবা ময়ের অগোচরে টানা একমাস ধরে চলছিল এই গোলাবারুদ ও বন্দুকের শপিং।
ছেলের বাবা-মা ব্যাংক স্টেটমেন্ট হাতে পেতেই গোটা বিষয় সম্পর্কে অবগত হয়। টাকা কাটার পর ফোনে আসা মেসেজ ডিলিট করে ফেলত গুণধর ছেলে। কাজেই বাবা জানতে পারতেন না। পাবজি খেলায় মশগুল ছেলে মায়ের প্রভিডেন্ট ফান্ডও খালি করে দিয়েছে।
ছেলেটির বাবা সরকারি চাকুরে, কর্মসূত্রে পরিবারের কাছে থাকেন না। তিনি জানিয়েছেন, ওই টাকা তিনি বাঁচিয়েছিলেন ছেলের উচ্চশিক্ষার জন্য এবং ভবিষ্যতে চিকিৎসা সংক্রান্ত খরচের কথা ভেবে। ধরা না পড়ার জন্য তার ছেলে এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে নিয়মিত টাকা ট্রান্সফার করত। এই টাকা উদ্ধারের জন্য পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, কারণ তা খরচ করা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে।
রক্ত জল করে জমানো টাকা ছেলে এইভাবে উড়িয়ে দেওয়ায় রেগে আগুন বাবা তাকে একটি স্কুটার সারানোর দোকানে কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এত কিছুর পরেও ও চোখের সামনে ঘরে বসে সময় কাটাবে এটা তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না, লেখাপড়ার জন্য আর একটা মোবাইলও কিনে দিতে পারবেন না ছেলেকে। তাই তাকে দোকানে কাজকর্মের জন্য লাগিয়েছেন যাতে ও বুঝতে পারে টাকা রোজগার করতে কতটা ঘাম ঝরাতে হয়।
অত্যন্ত জনপ্রিয় হলেও পাবজি নিয়ে বিতর্ক কম নয়। অসম্ভব নেশা ধরানো এই গেম বন্ধ করার জন্য বহুবার দাবি উঠেছে। কিন্তু এখনও রমরমিয়ে চলছে পাবজি খেলা।