জেনে নিন, কী করে বুঝবেন খারাপ আছেন?
অফিসে বসে রোজকার মতো কাজ করছেন। হঠাৎ সহকর্মী হয়তো বলে উঠলেন, ‘আজ ভীষণ ক্লান্ত লাগছে। কিছু ভাল লাগছে না।’ খেয়াল করে দেখবেন, বেশিরভাগ সময়েই আপনার উত্তর হয়- আমারও কিছু ভাল লাগছে না। আজকাল দিনে ২৪ ঘণ্টাই ভাল না লাগায় ভুগছেন বহু মানুষ। কাজ ভাল লাগছে না, বাড়িতে ভাল লাগছে না, প্রিয় গান, প্রিয় সিনেমা, প্রিয় খাবার, প্রিয় মানুষ... কোনোকিছুতেই আগ্রহ নেই। সবসময় বেজার মুখ করে যন্ত্রের মতো কাজ করে যাওয়া। আর এই সমস্যা গোটা বিশ্বের। এই কিছু ভাল না লাগার নেপথ্যে রয়েছে একটি জরুরি কারণ- ক্লান্তি। চিকিৎসকরা বলছেন, অনেকসময় কাজের চাপে মানুষ সোজাসুজি ক্লান্তিটুকুও অনুভব করতে পারে না। কিন্তু শরীর এবং মনে বিভিন্ন রূপে ক্লান্তি ফুটে ওঠে। যার মধ্যে একটি হল, সবকিছুতে অনীহা এসে যাওয়া। ঠিক সময়ে এই বিষয়টিতে নজর না দিলে মনে বাসা বাঁধতে পারে অবসাদ। তাই শারীরিক এবং মানসিক ক্লান্তি চিনে নিন এই পাঁচটি লক্ষণে-
১. রাতে ঘুম নেই : কিছু ভাল লাগছে না। তার ওপর রাতে ঘুম আসছে না। অর্থাৎ, ভাল না লাগার সময়সীমা আরও বেড়ে যাচ্ছে। এর মূল কারণ ক্লান্তি। চিকিৎসকদের মত, দিনের পর দিন ক্লান্তিকে পাত্তা না দিলে ঘুম কমে যেতে বাধ্য। তখন বিছানা আঁকড়ে চোখ বন্ধ করে পড়ে থাকলেও আর ঘুম আসবে না।
২. ক্ষত সারছে না : দু’সপ্তাহ আগে পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে হাত কেটেছিল। হঠাৎ খেয়াল করলেন, সেই সামান্য ক্ষত এখনও সারেনি! কিংবা আরেকটু বড় ক্ষত, রয়ে গেছে এক মাস। গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত ক্লান্তি কমিয়ে দিতে পারে ক্ষত শুকানোর ক্ষমতা।
৩. ঘুমে ব্যাঘাত এবং উদ্ভট স্বপ্ন : ঘুমোতে গেলেন ঠিক সময়ে। ঘুম এসেও গেল। আচমকা বিশ্রী স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙল। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলেন, ঘুমিয়েছেন মাত্র ২০ কিংবা ৩০ মিনিট। এরপর আবার ঘুম এবং আবারও একই ব্যাপার। প্রায়শই বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া এবং বাজে স্বপ্ন দেখাও হতে পারে ক্লান্তিরই প্রতিক্রিয়া।
৪. শরীরচর্চায় ক্লান্তি : সবাই বলে, ব্যায়াম করলে শরীর ফিট থাকে। তা শুনে আপনিও মনস্থির করে নামলেন শরীরচর্চায়। কিন্তু দু’মিনিটের মধ্যে মনে হল দু’ঘণ্টা ব্যায়ামের ক্লান্তি নেমে এসেছে। ঘুম পাচ্ছে। অথবা মাথা ঘুরছে। এড়িয়ে যাবেন না। আপনি শারীরিক এবং মানসিকভাবে খুবই ক্লান্ত।
৫. ব্রণ, চোখের নীচে কালো দাগ, অ্যালার্জি : অত্যধিক ক্লান্তির লক্ষণ ফুটে উঠতে পারে ত্বকেও। মাসের পর মাস ব্রণর সমস্যায় ভুগছেন। আপনি ভাবছেন, ধুলোময়লা কিংবা পেটের গণ্ডগোল থেকে হচ্ছে। কিন্তু আসল কাজটি করে চলেছে আপনার ক্লান্তি। এর জেরে চোখের নীচে কালো ছোপ এবং ত্বকে অ্যালার্জিও দেখা যেতে পারে।
৬. কফিও ব্যর্থ : যদিও ক্যাফিনের প্রভাব সবার ওপর সমান নয়। তবে দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত ক্লান্ত মানুষদের ওপরেই ক্যাফিন নিজের জাদু চালাতে পারে না। ফলে আপনি হয়তো নিজেকে চাঙ্গা করতে কাপের পর কাপ কফি পান করে চলেছেন। কিন্তু ক্লান্তভাব রয়ে যাচ্ছে তার জায়গাতেই।