এই অভিযান ছিল এক ভয়ঙ্কর অভিশাপ
ব্রিটেনের রাজকীয় নৌবাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় উত্তর-পশ্চিম মেরু অভিমুখে অভিযান পরিচালিত হয় ১৮৪০-এর দশকের শেষ দিকে। ওই অভিযানে দুই বিখ্যাত জাহাজ ডুবে যায়। আজো ওই ঘটনা আধুনিক যুগের এক ‘অভিশাপ’ নামে পরিচিত।
ব্রিটিশ অভিযাত্রী স্যার জন ফ্রাঙ্কলিনের নেতৃত্বে ১৮৪০-এর দশকের শেষ দিকে পরিচালিত অভিযানে এইচএমএস ইরেবাস এবং এইচএমএস টেরর’র ভাগ্যে কী ঘটেছিল প্রায় ১৭০ বছর ধরে তা এক রহস্যই বটে। এখন থেকে দুই বছর আগে ২০১৬ সালে সন্ধান মেলে এইচএমএস টেরর নামের জাহাজটির।
এরও দুই বছর আগে ২০১৪ সালে অপর জাহাজ এইচএমএস ইরেবাস খুঁজে পাওয়া যায়। ১৮৪৮ সালে জাহাজ দুটি যে জায়গায় ডোবে বলে ধারণা করা হতো সেখান থেকে ৬০ মাইল দূরে বরফাবৃত সমুদ্রের তলদেশে পরিত্যক্ত অবস্থায় এ দুটির ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। জাহাজডুবির ওই ঘটনার বিষয় হয়েছে এ পর্যন্ত অসংখ্য গান, কবিতা ও উপন্যাসের।
ওই অভিযানে অংশ নেওয়া নাবিকদের ভাগ্যে ঠিক কী ঘটেছিল তা এখনো রহস্যাবৃত।
বরফযুক্ত আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিমের শর্টকাট পথটি খুঁজে বের করতে ১৮৪৫ সালে ১২৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে রওনা দেন ফ্র্যাঙ্কলিন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ১৮৪৮ সালে কিং উইলিয়াম আইল্যান্ডের কাছে বরফের মধ্যে আটকে যায় জাহাজ দুটি। এরপর আর কোনো হদিস মেলেনি। মনে করা হয়, ওই ঘটনায় হতাশ হয়ে নিরাপদ স্থানের উদ্দেশ্যে জাহাজ দুটি ত্যাগ করেছিলেন ফ্র্যাঙ্কলিন এবং অন্যরা।
অনুসন্ধানকারীদের বক্তব্যের ভিত্তিতে , জাহাজ দুটির ধ্বংসাবশেষের ভেতর মানুষের কোনো কঙ্কাল পাওয়া যায়নি।
অভিযানে দুই জাহাজসহ নাবিকদের পরিণতি নিয়ে ইতিহাসবিদদের অনুসন্ধান চলতে থাকে।
এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, জাহাজের নাবিকদের বেশিরভাগ মৃতদেহই উদ্ধার করা যায়নি। সেগুলো কানাডিয়ান আর্কটিকের সঙ্গে মিশে গেছে। তবে, কয়েকটি সমাধির সন্ধান পাওয়া গেছে। সেগুলোর পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, টিনজাত খাবারের বিষাক্ততা এবং জাহাজের জল পরিস্রাবণ ব্যবস্থা অভিযান ব্যর্থ করার পেছনে দায়ী।
প্লস ওয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন এই ধারণাটি চ্যালেঞ্জ করে। এতে বলা হয়, ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে অবস্থিত রয়্যাল নেভি সিমেট্রিতে প্রাপ্ত কিছু হাঁড় ও দাঁতের অংশ হতভাগ্য নাবিকদের। এগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে তারা মারা গিয়েছিলেন ক্ষুধার শিকার হয়ে।