৮০০ কোটি সব দান করে ‘গরিব’ হওয়ার স্বপ্নপূরণ ধনকুবেরের
কলকাতা টাইমস :
স্বপ্ন পূরণ করলেন এক ধনকুবের। নিজের অর্জিত সম্পদ দান করাই ছিল তার বহুদিনের স্বপ্ন। কয়েকশ’ কোটি টাকার মালিক হলেও অন্যদের মতো নিজের সম্পত্তি বৃদ্ধি করাই তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল না।
বাঁচার জন্য ন্যূনতম প্রয়োজনের অতিরিক্ত উপার্জিত অর্থ দান করেই জীবনকে সার্থক করতে চেয়েছেন তিনি। সম্প্রতি সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন মার্কিন ধনকুবের চার্লস চাক ফিনে।
কলেজের সহপাঠী রবার্ট ওয়ারেল মিলানের সঙ্গে প্রথম ডিউটি ফ্রি শপ খোলেন তিনি। বিমানবন্দরে রিটেল দোকানের এই চেন ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। দিনে দিনে ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকে ফিনের ব্যবসা। মার্কিন কোটিপতিদের তালিকাতেও ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল, জীবদ্দশাতেই জীবনের সব রোজগার দান করে যাবেন তিনি। এ কথা কয়েক বছর আগেই জানিয়েছিলেন ফিনে।
সম্প্রতি ফিনের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। নিজের ৮শ কোটি ডলারের সম্পত্তি বিশ্বের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে দান করেছেন তিনি। দানের মাধ্যমে স্বপ্ন পূরণ করে স্বেচ্ছায় ‘গরিব’ হয়েছেন ফিনে। স্বপ্ন পূরণের পর নিজের খুশিও গোপন করেননি তিনি।
ফোর্বস পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, টাকার ব্যবহার অন্যরকম ভাবে করতে চেয়েছিলাম। এই কাজ আমায় তৃপ্তি দিয়েছে। স্বপ্ন পূরণ করতে পারায় আমি খুব খুশি।
কোটিপতি হওয়ার পর থেকেই গোপনে বিভিন্ন সংস্থাকে দান করতেন তিনি। কিন্তু সেই খবর প্রকাশ্যে আনতেন না। এজন্য তাকে ‘জেমস বন্ড অব ফিলানথ্রপি’ বলেও ডাকা হত। ২০১২ সালে ফিনে ঘোষণা করেন, তিনি ও তার স্ত্রীর অবসর জীবনের জন্য ২০ লাখ ডলার রেখে দেবেন। বাকি সব সম্পত্তি দান করবেন। ১৪ সেপ্টেম্বর সম্পত্তি দানের মাধ্যমে সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন তারা।
নিজের ৮শ কোটি ডলার সম্পত্তির মধ্যে ৩৭০ কোটি ডলারই শিক্ষা খাতে খরচের জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে দিয়েছেন ফিনে। এ ছাড়াও মানবাধিকার, সামাজিক পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যখাতে তার দানের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য।
তার এমন পদক্ষেপে রীতিমতো আবেগাপ্লুত বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেটের মতো কোটিপতিরাও। বিল গেটস জানিয়েছেন, ‘ফেনি একটা পথ দেখাল। আমার মনে পড়ে তার সঙ্গে দেখা করেছিলাম। সেসময়ই আমাকে নিজের জীবদ্দশায় অর্ধেকেরও বেশি সম্পত্তি দানের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তিনি। এ ব্যাপারে ফিনের চেয়ে ভাল উদাহরণ আর কেউ নেই।’
তবে শুধু দান নয়, ৮৯ বছরের ফিনে জীবনযাত্রার মানও ছিল খুবই সাধারণ। সান ফ্রান্সিসকোর একটি ভাড়া বাড়িতে স্ত্রীয়ের সঙ্গে থাকেন তিনি। নিজের গাড়িও নেই তার। এক জোড়া জুতোতেই বছর কেটে যায় তার। ‘সম্পদ দায়িত্ব আনে’-এই চিন্তা থেকেই নিজের সম্পত্তি দান করে সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন করলেন তিনি।