কলকাতা টাইমস :
অন্য সব কাজে সুপার অ্যাকটিভ হয়ে এগিয়ে এলেও নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রশ্নে সবসময়ই পিছিয়ে থাকেন পুরুষরা। শরীরের দিকে যে তাদের নজর দেওয়া প্রয়োজন সে বিষয়ে মাথা ঘামাতেই চান না তারা। একের পর এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, উদ্বেগজনক কোনও লক্ষ্মণ না দেখা পর্যন্ত পুরুষরা চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনিচ্ছুক থাকেন। আর তাতেই সমস্যা।
কিছু কিছু রোগ আছে যদি প্রাথমিক পর্য়ায়েই চিকিৎসা শুরু করা যায় তাহলে তা সারানো সম্ভভ হয়। কিন্তু অধিকাংশ পুরুষই প্রাথমিক স্তরের এই লক্ষ্মণগুলিকে এড়িয়ে চলেন। আজ এই প্রতিবেদনে আমরা এমন কিছু লক্ষণের কথা বলব যা পুরুষরা সাধারণ এড়িয়ে চলেন, কিন্তু এই লক্ষণগুলি একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত নয়।
বুকের ব্যাথা : হৃদরোগের সমস্যায় যেমন বুকের ব্যাথা হতে পারে, তেমনই অন্যান্য আরও কিছু রোগের কারণেও এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে। ফুসফুসের সমস্যা, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টর সমস্যায় বুকে ব্যাথা হতে পারে। আবার গ্যাস অম্বলের জন্যও বুকে ব্যথা হয় অনেকসময়। বুকের ব্যথা ভিন্ন রকমের হয়। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই এমনকী গ্যাসের জেরে বুকের ব্যথাও এড়িয়ে যাওয়া কখনই শরীরের পক্ষে ঠিক নয় বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের।
উর্ধ্বশ্বাস: একটুতেই শ্বাস ফুলতে শুরু করা, হাঁপিয়ে যাওয়া, বুক ধড়পড় করা পুরুষদের মধ্যে প্রায়শই দেখা যায়। একে সাধারণ বলে এড়িয়ে যাওয়া একেবারেই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় নয়। হৃদরোগের গুরুতর সমস্যা তৈরি হয়েছে তা বুঝে নিতে হবে। কিংবা ফুসফুসের ক্যানসার, বা সিওপিডির সমস্যা, ব্রঙ্কাইটিস হতে পারে। এমনকী এই ধরণের লক্ষণ অ্যানিমিয়ারও হতে পারে।
ক্লান্তি : প্রতিনিয়ত ক্লান্তি অনুভব করার লক্ষণও পুরুষদের মধ্যে অত্যন্ত সাধারণ একটি বিষয়। অনেকে ভাবেন কাজের চাপে ক্লান্তি আসাটা খুব সাধারণ বিষয়। কিন্তু সবসময় যদি আপনি ক্লান্তি অনুভব করেন, তাহলে ক্যানসারের সম্ভবানা উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। এছাড়াও ডায়বেটিস, আর্থারাইটিস, সংক্রণ, কিডনি ও যকৃতের সমস্যাতেও হতে পারে।
অবসাদ: অবসাদ বা ডিপ্রেশন শুধু একদিনের খারাপ মেজাজ নয়। এটি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতা। যা আপনার গোটা শরীরে প্রভাব ফেলতে পারে। অনেকের ধারনা পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে অবসাদের সমস্যা বেশি দেখা যায়। কিন্তু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে অবসাদে ভুগলেও পুরুষরা তা প্রকাশ করতে চান না। অবসাদ চেপে রাখতে রাখতে তা ক্রমশ মস্তিষ্কে গুরুতর প্রভাব ফেলতে শুরু করে। যার ফলে চণ্ডালে রাগ, আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়।
স্মৃতিভ্রম : বয়সের সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হতে শুরু করে ঠিকই। কিন্তু অল্প বয়সেই যদি ঘন ঘন সাধারণ জিনিস আপনি ভুলতে থাকেন তাহলে বুঝবেন লক্ষণ ভাল না। মস্তিষ্কে কোনও সমস্যা হচ্ছে। এই ভুলো মন ভবিষ্যতে অ্য়ালজাইমারের মতো গুরুতর রোগের জন্ম দিতে পারে। কিংবা মস্তিষ্কে টিউমার হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণও হতে পারে।
ঋজুতায় অক্ষমতা : ইরেকটাইল ডিসফাংশন গুরুতর রোগের উপসর্গ হতে পারে। এতে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। অনেকেই লজ্জার জেরে কখনও বা পুরুষ অহমের জেরে চিকিৎসকের কাছে এই ধরণের সমস্যা নিয়ে যেতে চান না। অথেরোস্কেলেরোসিস থেকে এই সমস্যা হতে পারে। এই উপসর্গের কারণ আপনার শরীরে রক্তচলাচলের বাধাও হতে পারে। যার ফলে হৃদরোগে আপনি আক্রান্তও হতে পারেন।
মূত্রাধারে সমস্যা : মহিলাদের মতো পুরুষদের ক্ষেত্রেও যৌনাঙ্গের সমস্যা থেকে থাকে। কিন্তু পুরুষরা এই ধরনের সমস্যা বুঝেও না দেখার ভান করেন। কিন্তু এই ধরনের উপসর্গ গুরুতর রোগের সূচনা মাত্র। মুত্রের সঙ্গে রক্ত, জ্বালাযন্ত্রণা, মুত্রথলির ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। এই লক্ষণ অদেখা করলে তা ভবিষ্যতে আরও বড় সমস্যা তৌরি করতে পারে।