মোবাইল ব্যবহারে হয়েছে ব্রেন টিউমার, নোকিয়ার বিরুদ্ধে ১০০ কোটির মামলা ব্যবহারকারীর !
নিউজ ডেস্কঃ
মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে আক্রান্ত হয়েছেন ব্রেইন টিউমারে। এই অভিযোগে ব্রিটেনের নেইল হোয়িটফিল্ড (৬০) নামে এক ব্যক্তি মামলা করেছেন মোবাইল ফোন ব্র্যান্ড নোকিয়ার বিরুদ্ধে। নেইল হোয়িটফিল্ডের কান এবং মগজে অ্যাকুস্টিক নিউরোমা নামে একটি বিরল টিউমার হয়েছে। নোকিয়া ফোন ব্যবহার করে টিউমার হওয়ার অভিযোগে প্রাক্তন এই সেলসম্যান নকিয়ার বিরুদ্ধে এক মিলিয়ন পাউন্ড প্রায় ১০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের মামলা করলো।
নেইল মনে করেন, তিনি ব্রিটিশদের মধ্যে প্রথম যিনি কোনো মোবাইল ফোন কোম্পানির বিরুদ্ধে এই ধরনের মামলা করলেন। নেইল ছয় সন্তানের জনক, বসবাস করেন বৃহত্তর ম্যানচেস্টারের উইগানে। ২০০১ সালে তার কানে অপারেশন করে অ্যাকুস্টিক নিউরোমা নামক টিউমারটি সরানোর পর তিনি বধির হয়ে যান। তার কানে গলফ বলের সাইজের একটি টিউমার থাকায় তখন তিনি ফোন ব্যবহার করতে পারতেন না এবং সেই কারণে সেলসম্যান হিসেবে তার চাকরি চলে যায়।
তিনি দাবি করেন, ১৯৯০ সালের দিকে দীর্ঘসময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে তাকে এই বিপদের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সানডে মিররকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেইল হুইটফিল্ড বলেন, আমার কোনো সন্দেহ নেই টিউমার হওয়ার মূল কারণ মোবাইল ফোন। পেসার কারণে প্রায় পাঁচবছর আঠার মতো আমি সারাক্ষণ মোবাইল ফোনের সাথে লেগে থাকতাম। ফোন থেকে উত্তাপ এসে আমার কানে লাগতো এটা আমি টের পেতাম। তিনি আরও বলেন, আমি জানি এটা ডেভিড এবং গোলাইয়াথের যুদ্ধের মতো। সুবিচার পেতে আমার হয়তো অনেক সময় লেগে যাবে। তারপরেও আমি এটা করছি আমার সন্তান এবং সারাপৃথিবীর শিশুদের কথা চিন্তা করে।
আয় করার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং পেনসন কমে যাওয়া- এই দুটি কারণের উপর ভিত্তি করেই তিনি তার ক্ষতিপূরণের মামলাটি সাজিয়েছেন। গত ছয় বছর ধরে তিনি এই মামলাটি চালিয়ে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য, নব্বইয়ের দশকে ইংল্যান্ডজুড়ে ব্রিটিশ নাগরিকেরা বেশিরভাগই নোকিয়া ফোন ব্যবহার করতো। ১৯৯৯ সালে প্রতি চার সেকেন্ডে একটা করে নোকিয়া ফোন বিক্রি হতো। সম্প্রতি জার্নাল অব পাবলিক হেলথ এন্ড এনভায়রনমেন্টে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে মানুষের মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল লোব অর্থাৎ মস্তিষ্কের সামনের অংশে এবং পাশে টিউমার তৈরি হতে পারে।
হুইটফিল্ডের টিউমার অপসারণ করেছিলেন ম্যানচেস্টার রয়্যাল ইনফারমারির ডাক্তার। তিনিও বলেছেন, মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে টিউমারটি হওয়ার আশঙ্কাকে তিনি গ্রহণযোগ্য মনে করছেন না। ব্রিটেনের ক্যানসার গবেষণা সংস্থার সংশ্লিষ্টরা এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেন, ফোন ব্যবহার এবং ক্যানসার কিংবা এই ধরনের টিউমার তৈরি হওয়ার তেমন সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। যদিও নেইল হুইটফিল্ডের আইনজীবীরা আশা করছেন, মামলায় তাদেরই জিত হবে। হুইটিফিল্ড চাইছেন ফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলো ফোনের প্যাকেটের উপর তেজস্ক্রিয়তার সতর্ক বার্তা লিখে দিক। যদিও নোকিয়া কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের সকল পণ্য স্বাস্থ্য বিধি মেনেই বানানো হয়।