November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular সফর

উঠলেই দুর্ঘটনা তবুও যে টানে ওঠেন এই পর্বতে

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো পাথুরে এ পর্বত। খাড়া এ পর্বতের গা বেয়ে উঠতে গিয়ে অনেক পর্যটক প্রাণ হারিয়েছেন। পর্বতটি ক্যালিফোর্নিয়ার ইয়োসেমাইট জাতীয় উদ্যানে অবস্থিত।

গম্বুজ আকৃতির গ্রানাইটের পর্বতটির উচ্চতা ৮ হাজার ৮০০ ফুটেরও বেশি। প্রতিদিন শত শত পর্যটক প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও এ পর্বতে ওঠার চেষ্টা করেন। তবে এ স্থানে একজন মানুষ একবারের বেশি ওঠার অনুমতি পান না।

আমেরিকার সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্বতমালার মধ্যে অন্যতম হলো গ্রানাইট গম্বুজ। সেখানকার তথ্যমতে, ২০০৫ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পর্বত আরোহনের সময় ১৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। পর্বত থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন ১২ জন এবং ২৯০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ পর্যন্ত পর্বতে উঠতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৬০ জনেরও বেশি মানুষ।

২০০৬ সালে নিউ মেক্সিকোর ২৫ বছরের এক যুবক পর্বত থেকে নামার সময় পা পিছলে ৩০০ ফুট উঁচু থেকে পড়ে মারা যান। পরের বছর খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেই পর্বতে চড়তে গিয়ে ১ হাজার ফুট উঁচু থেকে পড়ে মারা যান আরেকজন।

২০১৮ সালে ২৯ বছর বয়সী এক বায়োকেমিস্ট বিপজ্জনক এ পর্বতে উঠছিলেন। তখনই বজ্রপাতের আঘাতে নিচে পড়ে যান তিনি। সৌভাগ্যবশত তার মৃত্যু না হলেও একটি পা হারান। তবে অবাক করা বিষয় হলো, খারাপ আবহাওয়া না থাকা সত্ত্বেও বজ্রপাত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল সেদিন।

২০১০ সালের আগ পর্যন্ত এ পর্বতে দৈনিক ১২০০ জনেরও বেশি মানুষ ওঠার চেষ্টা করতেন। এ কারণেই না-কি দুর্ঘটনা বাড়ছিল বলে মনে করেন কর্তৃপক্ষ। এরপর ২০১১ সাল থেকে দৈনিক ৩০০ জনের বেশি মানুষকে পর্বতে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয় না। তবুও দুর্ঘটনা রোধ করা যায়নি।

তবে কেন পাহাড়ে উঠতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে, এ বিষয় নিয়ে অনেক গবেষণা চলছে। গবেষণায় দেখা গেছে, খাড়া এ পর্বতে ওঠার সময় যে পথ অনুসরণ করতে হয়, সেটি মূলত দড়ি ও শক্ত লাঠি দিয়ে বাঁধা ঝুলন্ত মই।

এ পথ দিয়ে একজনের বেশি ওঠা সম্ভব নয়। আবার অনেকে উঠতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তাকে টেক্কা দিয়ে যখন পেছনের জন এগিয়ে যান; তখনই বিপত্তি ঘটে। এ ছাড়াও খারাপ আবহাওয়ায় পাথুরে পর্বতের গা পিচ্ছিল থাকে। এ কারণেও অনেকে পা পিছলে পড়ে যান।

জানা যায়, এ পর্বতের মাথায় পৌঁছে আবার নিচে নামতে সারাদিন সময় লাগে। তবে ৫ হাজার ফুট ওঠার পর বাকি পথটুকু একেবারেই খাড়া। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে উপরের শেষ ৪০০ ফুট ওঠা বেশ বিপজ্জনক। ওই অংশটুকুর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডেথ স্ল্যাবস’।

১৮৭৫ সালে জর্জ অ্যান্ডারসন সমৃদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮,৮৪৪ ফুট উচ্চতার গ্রানাইট খণ্ডটি আবিষ্কার করেন। তখন থেকেই অর্ধগম্বুজ আকৃতির পাথরখণ্ডটির দিকে পর্বতারোহীদের নজর পড়ে। ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে স্থানটি।

এরপর সেখানে জাতীয় উদ্যান তৈরি হয়। বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের মধ্যে ইয়োসেমাইট জাতীয় উদ্যান অন্যতম। মে থেকে অক্টোবর মাসে এ স্থানে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়ে যায়।

সেখানে বেসরকারি মোটেল আছে। চাইলে থাকতে পারেন। এ ছাড়াও আছে হাফ ডোম ভিলেজ। যেখানে সুস্বাদু খাবারও পেয়ে যাবেন। তুষার পড়ার সময় স্থানটির সৌন্দর্য দ্বিগুণ বেড়ে যায়। আর তখনই গ্রানাইট পর্বত মৃত্যুফাঁদ পেতে সবাইকে ডাকে!

Related Posts

Leave a Reply