লেবু কিনুন ওজন কমান !
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
গত কয়েক দশকে সারা বিশ্বে যত জন মানুষ মারা গেছেন, তাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মৃত্যুর কারণ ছিল অতিরিক্ত ওজন। শুধু তাই নয়, গত এক বছরে কম বয়সিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের প্রকোপ যে এত বেড়েছে, তার পিছনেও অতিরিক্ত ওজনকেই দায়ি করছেন চিকিৎসকেরা। তবে সবথেকে ভয়ের বিষয় কি জানেন? আগামী কয়েক বছরে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর আকার লাভ করতে চলেছে, যার প্রমাণ মিলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশ করা রিপোর্টে। কী এমন লেখা আছে সেই রিপোর্টে, যে এতটা ভয় পেয়ে যাওয়ার কারণ রয়েছে?
তাতে বলা হয়েছে ভারতের পাশাপাশি সারা বিশ্বেই কম বয়সিদের মধ্যে, বিশেষত ১৯ বছরের কম যারা, তাদের মধ্যে মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা প্রায় কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনভাবে চলতে থাকলে আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে বিশ্বের সিংহভাগ মানুষই ওবেসিটির শিকার হয়ে পরবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এমনটা হলে মৃত্যুহারও যে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ ওবেসিটি মানেই ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ, কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ। আর এই রোগগুলি যে মোটও সুবিধার নয়, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না।
প্রসঙ্গত, আমাদের দেশ ইতিমধ্যেই ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে রূপান্তরিত হয়েছে। সেই সঙ্গে কম বয়সিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতাও চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মোটা মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে যে কী হতে পারে, তা ভাবলেই শিউরে উঠতে হয়। মাত্রাতিরিক্ত হারে ওজন বৃদ্ধির পিছনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দায়ি থাকে অনিয়ন্ত্রিত জীবন এবং লাগামহীন খাওয়া-দাওয়া। তাই এই দুটি বিষয়ের দিকে নজর রাখার পাশাপাশি যদি নিয়ম করে এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলি খাওয়া যায়, তাহলে যে ওজন একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
ওজন কমাতে সাধারণত যে যে খাবারগুলি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল…
১. লেবু: সকাল সকাল কালি পেটে এক গ্লাস গরম জলে তিন চামচ লেবুর রস, এক চামচ মধু এবং হাফ চামচ গোলমরিচ মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগে না। কারণ এই পানীয়টি হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান বের করে দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটলে শরীরে মেদ জমার আশঙ্কা অনেকাংশেই হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বিও ঝরতে শুরু করে।
২. অ্যাপেল সিডার ভিনিগার: ওজন কমাতে অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ এতে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরি উপাদান শরীরে জমে থাকা ফ্যাট সেলেদের ভেঙে দেয়। ফলে দ্রুত ওজন কমতে শুরু করে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে খাবার খাওয়ার আগে এক গ্লাস জলে ২ চামত অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে যদি প্রতিদিন খেতে পারেন, তাহলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। তবে বেশি মাত্রায় অ্যাপেল সিডার ভিনিগার কিন্তু খাবেন না। এমনটা করলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা কমে গিয়ে অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. অ্যালো ভেরা: এতে উপস্থিত প্রাকৃতিক কোলাজেন প্রোটিন শরীরে প্রবেশ করার পর একদিকে যেমন হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়, তেমনি এনার্জির চাহিদা বাড়িয়ে দেয়। ফলে ওজন কমতে সময় লাগে না। সেই কারণেই তো ওবেসিটির সমস্য়া থেকে মুক্তি পেতে বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন অ্যালো ভেরা জেল, লেবু এবং জল মিশিয়ে বানানো সরবোত খাওয়ার পরামর্শ দেন।
৪. গ্রিন টি: দিন ২-৩ কাপ গ্রিন টি নিয়মিত খেলে শরীরে “ই জি সি জি” নামক একটি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যে কারণে শরীরে চর্বি জমার হার কমে যায়। সেই সঙ্গে দেহে জমে থাকা ফ্যাটের পরিমাণও কমতে শুরু করে। ফলে ওজন কমে চোখে পরার মতো। এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন যে গ্রিন টি শরীরে ভিটামিন সি, ক্যারোটিনয়েড, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম এবং ক্রোমিয়ামের ঘাটতি মেটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এই পানীয়টি পান করলে যে শুধু ওজন কমে, এমন নয়, সেই সঙ্গে আরও অনেক উপকারও মেলে।
৫.গোলমরিচ: এতে উপস্থিত ক্যাপসিসিন শরীরে জমে থাকা ফ্যাটকে গলিয়ে দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো ওজন কমাতে নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন হল গোলমরিচ তো শুধু শুধু খাওয়া সম্ভব নয়, তাহলে উপায়? এক্ষেত্রে গরম জলে অল্প করে লেবুর রস এবং গোলমরিচ মিশিয়ে সেই জলটা পান করতে পারেন। এমনটা যদি টানা এক মাস করেন, তাহলেই কেল্লাফতে!
৬. কারি পাতা: একেবারে ঠিক শুনেছেন, ওজন কমাতে কারি পাতার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এতে উপস্থিত বিশেষ এক ধরনের অ্যালকালাইড ওজন কমানোর পাশাপাশি ওবেসিটি সংক্রান্ত নানা রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে টানা এক মাস, সকালে ১০ টা করে কারি পাতা খেতে হবে। তবেই কিন্তু উপকার মিলবে। প্রসঙ্গত, কারি পাতা কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমিয়ে হার্টকে সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে। তাই যাদের পরিবারে হার্টের রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা সময় থাকতে থাকতে কারি পাতা খাওয়া শুরু করতে পারেন কিন্তু! দেখবেন উপকার মিলবে।