November 25, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

প্রস্টেট ক্যান্সার থেকে বাঁচতে চাইলে প্রতিদিন মাছ খান

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

প্রস্টেট নামক শরীরের এই অঙ্গটি ৫০ বছর পর্যন্ত আমাদের নানা কাজে সাহায্য করলেও যেই না শরীরের বয়স বাড়তে শুরু করে, ওমনি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। সেই সঙ্গে ফুলতে শুরু করে জায়গাটা। কারও কারও তো প্রস্টেটে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই তো বন্ধু সময় থাকতে থাকতে সাবধান হন, না হলে বুড়ো বয়সে গিয়ে খুবই কষ্ট পোহাতে হবে কিন্তু!

কী করলে এই চিন্তা দূর হবে বলতে পারেন? খুব সহজ একটা কাজ করতে হবে। কী সেই কাজ? প্রতিদিন মাছ খাওয়া শুরু করতে হবে। তাহলেই আর হাফ সেঞ্চুরির পর প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। প্রসঙ্গত, দা আমেরিকান জার্নালে অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক স্টাডি অনুসারে নিয়মিত মাছ খেলে শরীর বিশেষ কিছু উপাদানের মাত্রা বেড়ে যেতে শুরু করে, যা প্রস্টেটকে এত মাত্রায় সুরক্ষা প্রদান করে যে সেখানে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৩ শতাংশ কমে যায়।

নিয়মিত মাছ খেলে যে শুধুমাত্র প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে, এমন নয়। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকারিতাও। কিন্তু মাছের মতো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রোজ খেলে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না তো? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ মিলে মাছ নিয়ে শুরু করেছিলেন বিশেষ একটি গবেষণা। তাদের মূল লক্ষ ছিল সারা বিশ্বে যে যে প্রদেশের মানুষ বেশি মাত্রায় মাছ খেয়ে থাকেন, তাদের শরীরের অবস্থা কেমন, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা। এই উত্তর খুঁজতে গিয়ে তাদের সামনে যে সত্যিটা উঠে এসেছিল সে সময়, তা খুবই চমকপ্রদ ছিল!

পরীক্ষাটি চলাকালীন গবেষকরা লক্ষ করেছিলেন ১৯৫ টি দেশের মধ্যে মাছ খাওয়ার দিক থেকে একেবারে প্রথম স্থান নেওয়া পর্তুগালিদের শরীরের অভ্যন্তরীণ অবস্থা ঠিক যেমন, ঠিক তেমনিই সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ করিয়া, বুর্নেয়ি এবং বাঙালিদের শরীরের অবস্থাও। আর কী সেই অবস্থা? এই সব প্রদেশের মানুষেরা বাকিদের তুলনায় অনেক বেশি ফিট এবং চনমনে। আর এমনটা হওয়ার পিছনে মূল কারণ হল নিয়মিত মাছ খাওয়ার অভ্যাস। আসলে মাছের শরীরের থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিন, মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি কণাকে চাঙ্গা করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে একাধিক মারণ রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। যেমন…

১. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়
আমার মতো আপনিও নিশ্চয় সেই ছোট বেলা থেকে শুনে আসছেন যে মাছ খেলে চোখের ক্ষমতা বাড়ে? এই কথাটা যে একেবারেই নির্ভুল, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আসলে মাছের শরীরে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের ভেতরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে ধীরে ধীরে চোখের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। তাই তো এবার বাজার করতে গেলে ব্যাগ ভর্তি করে রুই-কাতলা কিনতে ভুলবেন না যেন! ইচ্ছা হলে ভোলা বা ভেটকির মতো মাছও কিনতে পারেন। কারণ এদের শরীরেও প্রচুর পরিমাণে তেল থাকে।

২. ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বাড়ে
মাছের শরীরে উপস্থিত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড আমাদের ভেতরে অন্দরে যাওয়া মাত্র ত্বক এবং চুলের গোড়ায় পুষ্টির যোগান এতটাই বাড়িয়ে দেয় যে তার প্রভাবে স্কিন টোনের যেমন উন্নতি ঘটতে শুরু করে, সেই সঙ্গে চুলের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা এমন রোগ ভুগছেন, তারা প্রতিদিনের ডায়েট থেকে মাছকে বাদ দেওয়ার কথা কখনও ভাববেন না যেন!

৩. হার্টকে চাঙ্গা রাখে
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এমনটা দাবি করা হয়েছে যে যারা নিয়মিত মাছ খেয়ে থাকেন, তাদের হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায়। কেন এমনটা হয় জানেন? আসলে মাছের শরীরে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে থাকা ফ্যাটের মাত্রাকে কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

৪. স্পার্ম কাউন্ট অনেক বাড়িয়ে দেয়
সম্প্রতি ১৮৮ জন পুরুষের উপর একটি গবেষণা চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা গেছে যারা নিয়মিত মাছে খান, তাদের স্পার্ম কাউন্ট এতটাই ভাল হয়ে যায় যে বাচ্চা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যাই হয় না। প্রসঙ্গত, বর্তমানে আমাদের উত্তাল জীবনযাত্রার কারণে অনেকেরই স্পার্ম কাউন্ট কমতে শুরু করেছে, যে কারণে বাবা হাওয়ার ক্ষেত্রে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। তাই আপনি যদি চান এমনটা আপনার সঙ্গে না হোক, তাহলে নিয়মিত মাছ খেতে ভুলবেন না যেন!

৫. মানসিক অবসাদ কমায়
বর্তমান সময়ে নানা কারণে মানসিক অবসাদে আক্রান্তের সংখ্যাটা যেন ক্রমাগত বাড়ছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই কম বয়সি। এমন পরিস্থিতিতে মাছ খাওয়ার প্রয়োজন আরও বেড়েছে। কারণ স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদ কমাতে মাছের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এক্ষেত্রেও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৬. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে সপ্তাহে মাত্র ১-২ দিন মাছ খেলেই আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে থাকা নিউরনদের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে একদিকে যেমন বুদ্ধির বিকাশ ঘটে, তেমনি স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি ঘটে। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত রেডিওলজিকাল সোসাইটি অব নর্থ আমেরিকার বার্ষিক সভায় এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ রয়েছে যারা নিয়মিত মাছ খেতে থাকেন তাদের ব্রেণের একটি বিশেষ অংশের ক্ষমতা এতটাই বেড়ে যায় যে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তির দিক থেকে তারা অনেকটাই পিছনে ফেলে দেয় মাছ না খাওয়া মানুষদের।

৭. ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দূর করে
হাড়ের গঠনে এই ভিটামিনটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই শরীরে যাতে কোনোভাবই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে সামদ্রিক মাছেরা। কারণ এদের শরীরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে মজুত থাকে ভিটামিন ডি, যা হাড়কে শক্তপোক্ত করার পাশাপাশি নানাবিধ হাড়ের রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

Related Posts

Leave a Reply