‘কর দেব না খাবো’, আফসোস ভারতের রাষ্ট্রপতির
কলকাতা টাইমস :
ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ জানিয়েছেন, কর দিতেই প্রতি মাসে বেতনের ৫৫ শতাংশ চলে যায়। উত্তরপ্রদেশ সফরে গিয়ে এমনই দাবি করেছেন তিনি। তার দাবি, মাসে ৫ লাখ টাকা বেতন পান। এর মধ্যে করই দিতে হয় পৌনে ৩ লাখ টাকার। তাতে যা বাঁচে, অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা তো বটেই, শিক্ষকদের রোজগারও তার চেয়ে ঢের বেশি।
দু’দিনের উত্তরপ্রদেশ সফরে নাগরিকদের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে বোঝাতে গিয়ে নিজের বেতনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। কোবিন্দ বলেন, ‘‘আপনারা জানেন, রাষ্ট্রপতি দেশের সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত কর্মী। কিন্তু রাষ্ট্রপতি করও তো দেন! মাসে পৌনে তিন লাখ টাকা কর দিই আমি। অনেকে বলতেই পারেন যে, আপনার বেতনও তো পাঁচ লাখ টাকা! কিন্তু তার মধ্যে থেকে তো প্রতি মাসে পৌনে ৩ লাখ টাকা বেরিয়েই যায়! তাতে আর বাঁচে কত? কর দিয়ে যা বাঁচে, বহু কর্মকর্তাই তার চেয়ে অনেক বেশি রোজগার করেন।
বিভিন্ন দাবি নিয়ে যারা আন্দোলন করেন, ট্রেনে-বাসে আগুন ধরান, তাতে তার মতো করদাতাদেরই আসলে লোকসান হয় বলেও মন্তব্য করেন কোবিন্দ। তার বক্তব্য ছিল, ‘‘অনেক রকম অধিকারের কথা বলি আমরা। কিন্তু নাগরিক হিসেবে কিছু দায়িত্বও বর্তায়, যা পুনর্বিবেচনা করে দেখা দরকার। নিজেদের দাবিদাওয়া জানাতে গিয়ে আবেগের বশে ট্রেন অবরোধ করা হয়, আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয় কখনও। এই ট্রেন কার? আন্দোলন চলাকালীন বাসে আগুন ধরানো হয়। আগুন ধরানো হয় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা স্কুটারে। এটা মোটেই ভাল প্রবৃত্তি নয়। ট্রেন দাঁড়িয়ে গেলে, ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দিলে, ট্রেনের ক্ষতি করলে, কার লোকসান হবে? বলা হয়, সরকারের। সরকার কার? সরকার তাদেরই, যারা কর দেন। আমাদের করের টাকায় দেশের উন্নতি হয়। তাই লোকসান হলে আমাদেরই হবে।’’কিন্তু কোবিন্দের এই মন্তব্যেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কারণ আইন অনুযায়ী, দেশের সর্বোচ্চ পদাধিকারী রাষ্ট্রপতির বেতন করের আওতায় পড়ে না। আজীবন বিনামূল্যে স্বাস্থ্য এবং আবাসন সেবাও পান তিনি। পদে আসীন থাকাকালীনও রাইসিনা হিলের কোনও খরচই রাষ্ট্রপতিকে বহন করতে হয় না। কারণ কেন্দ্রীয় বাজেটেই রাষ্ট্রপতি ভবনের জন্য আলাদা করে ২০০ কোটির বেশি বরাদ্দ করা হয়, যার মধ্যে রাষ্ট্রপতি, তার কর্মী এবং রাষ্ট্রপতি ভবনে কর্মরত সকলের ভাতাবাবদ ৮০ কোটিও রাখা হয়।