অবাক হবেন! করোনা ঝড় থেমে যাবে কিন্তু এই ৬টি মা’রাত্মক প্রভাব রেখে যাবে পৃথিবীতে!

কলকাতা টাইমস :
ঝড় একদিন থেমে যাবে। মানব সভ্যতা এখন এক বৈশ্বিক সং’কট মো’কাবেলা করছে। সম্ভবত আমাদের এই প্রজন্মের সবচেয়ে বড় সং’কট। বিভিন্ন দেশের সরকার এবং জনগণ আগামী কয়েক সপ্তাহে যে সিদ্ধান্তগুলো নেবে তা আমাদের ভবিষ্যত পৃথিবীর গতিপথ, চরিত্র ব’দলে দেবে। এই ব’দলে যাওয়াটা যে শুধু আমাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা পদ্ধতিতে হবে, ব্যাপারটা তেমন নয়। ব’দলে যাবে আমাদের অর্থনীতি, রাজনীতি এবং সংস্কৃতির গতিপথ।
কেমন হতে পারে করোনা পরবর্তী পৃথিবী? কী কী পরিবর্তন আসতে পারে ‘বিশৃ’ঙ্খলা তত্ত্ব’ দিয়ে সেটা বুঝিয়েছেন একদল গবেষক। তারা বলছেন, করোনাভাইরাস ভূমিকম্পের মতো আফটার শক দিয়ে বিশ্বকে স্থায়ীভাবে পুনর্নির্মাণ করবে। এক্ষেত্রে ছয়টি বড় পরিবর্তনের কথা বলেছেন তারা।
১) দীর্ঘকালীন জরুরি অবস্থা
নানা ধরনের স্বল্পমেয়াদী জরুরি অবস্থা তখন আমাদের জীবনে হয়ে যাবে ডাল-ভাতের মতো। খুব বড়সড় বিপ’র্যয় বা জ’রুরি অবস্থার চরিত্রই এরকম। ঐতিহাসিক সমস্ত প্রক্রিয়াকে খুব দ্রু’ত ঘ’টিয়ে ফেলে। সাধারণ সময়ে আমাদের যে সিদ্ধা’ন্ত নিতে এবং বাস্তবায়নে লেগে যেত বছরের পর বছর, বড়সড় বিপ’র্যয়ে তা হয় অসম্ভব দ্রু’ত। অপরিণত এমনকি খুব বিপ’দজনক প্রযুক্তিকেও এ অবস্থায় ঠে’লেঠু’লে কাজে লা’গিয়ে দেয়া হয়, কারণ ওর চেয়ে কিছু না করা আরও বেশি বিপ’দজনক। একটা দেশ তখন কিন্তু বেশ বড় মাপে একটা সামাজিক নিরীক্ষার জায়গা হয়ে যায়। যেমন সবাই বাড়িতে থেকে কাজ করলে এবং দূরত্ব মেনে যোগাযোগ বজায় রাখলে কী হয়? সমস্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে চলে গেলে কি ঘ’টনা ঘ’টবে? স্বাভাবিক সময় কোন দেশের সরকারই এ ধরনের কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রাজি হতো না। কিন্তু এখন তো সময় স্বাভাবিক নয়। এক ক্রা’ন্তিকাল আমরা পা’র করছি। করোনার সং’ক্রমণ এ’ড়াতে আমরা বর্তমানে হোম কোয়েরেন্টিন পালন করছি, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলছি। করোনা ঝড় থা’মলেও এই অ’ভ্যানস থেকে যাবে। প্রযুক্তিভিত্তিক যোগাযোগ বেড়ে যাবে। তবে দরিদ্র এবং ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলি বিশেষত অপ্র’স্তুত এবং দুর্ব’ল থাকবে।
সরকার ও কর্পোরেট ব্যবস্থা বড় ধা’ক্কা খাবে। অনেক বড় বড় সংস্থাগুলি ধ’সে পড়বে। বাণিজ্যিক রিয়েল এস্টেট থেকে শুরু করে বিমান শিল্প,অফিস ভবন, শপিংমল, এয়ারলাইনস এবং বিমানবন্দরগুলি প্রচুর ঝুঁ’কিতে পড়বে।
২) পেট্রো-রাজ্যগুলো ধ’সে পড়বে
ইকুয়েডর থেকে ইরান পর্যন্ত পেট্রো-রাজ্যগুলোতে রাষ্ট্র ব্যবস্থার প’তন কোনও অবাস্তব দৃশ্য নয়। তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় ভেনিজুয়েলার সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অতি মুদ্রাস্ফিতি এবং অ’নাহা’রে আরও বে’ড়ে যাবে। এছাড়া তেলের দাম পড়ে যাওয়া ও হজ বাতিলের ফলে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক অবস্থা ভে’ঙে পড়তে পারে। দেশটির বৃহত্তম আয়ের উৎস এই দুটি খাত। ভাইরাসের সং’ক্রমণ এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় এমনিতেই ইরানের অবস্থা খা’রাপ। করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক দু’রাব’স্থা ইরানের সরকারকে ফে’লে দেবে এমন সম্ভাবনা জো’রালো হয়েছে।
৩) অভিবাসী সং’কট দেখা দেবে
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অবস্থা ভে’ঙে পড়ায় ব্য’র্থ রাষ্ট্রগুলো থেকে নিশ্চি’ত জীবনের আশায় লোকেরা ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত দেশে পাড়ি জমাতে ম’রিয়া চেষ্টা করবে। আন্তর্জাতিক বাঁ’ধা-নিষে’ধ উপে’ক্ষা করে তারা শ’রণা’র্থী হিসেবে বিভিন্ন দেশে প্রবেশ করবে। এরই মধ্যে তুরস্ক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে তারা চিরকালীনভাবে ৪ কোটি সিরিয়ান শ’রণা’র্থীর চা’প স’হ্য করতে পারবে না। প্রয়োজনে তারা ইউরোপীয় সীমা’ন্ত খুলে দেবে। মিশর, সুদানের, মেক্সিকোর মতো দেশগুলো থেকে লোকেরা দলে দলে ইউরোপে ঢু’কবে। ফলে অভিবাসী সং’কট বাড়বে।
bঅনেক দেশ অভিবাসীদের ঢ’ল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জাতীয়তাবাদের উ’ত্থান ঘ’টবে। খাদ্য ও চিকিৎসা সরবরাহ,শস্য রফতানি ইত্যাদি কারণে জাতীয়তাবাদ মাথা চা’ড়া দেবে। অভিবাসীদের সঙ্গে সং’ঘা’তে জ’ড়িয়ে পড়বে স্থানীয়রা। ইউরোপের অসংখ্য দেশে র’ক্তক্ষ’য়ী সং’ঘা’তও উ’ড়িয়ে দেওয়া যায় না।
৫) প্রযুক্তি ও ব্যয় হ্রাস পাবে
করোনাভাইরাস মহামা’রির প্রভা’ব ক’মাতে এবং আরও স্থি’তিশী’ল ও টেকসই দিকনির্দেশে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা আজ কোন বড় বিনিয়োগের কথা চিন্তা করতে পারি না। বর্তমানে জৈব প্রযু’ক্তি এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে বৃহত্তম বিনিয়োগ শুরু করার সুস্পষ্ট জায়গা। তবে বিশ্বজু’ড়ে অর্থনৈতিক ম’ন্দার কারণে প্রযু’ক্তিগত দিকে বড় বিনিয়োগ কমে যাবে।
৬) সভ্যতার সং’কট সৃষ্টি হবে
করোনাভাইরাস মানব সভ্যতার জন্য ১/১১ এর চেয়েও বড় পরীক্ষা এবং একই সঙ্গে আর্থিক সং’কট হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। এটি একটি বি’স্ময়’কর ধা’ক্কা যা বিশ্বব্যবস্থাকে ভে’ঙে চু’রমা’র করে দিতে পারে। জৈবিক ও সভ্যতা উভয় ক্ষেত্রেই ব্যাপক বিবর্তন আসবে। সরকারী- বেসরকারী খাতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরু’দ্ধে ল’ড়াই করা এবং স্বল্পমেয়াদি ত্যা’গের লক্ষ্যে যোগাযোগ অর্জনের মতো দীর্ঘমেয়াদী অগ্রাধিকারগুলি থ’মকে যাবে।